Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গর্বের ক্ষেপণাস্ত্র ডাহা ফেল, মুখ চুন কিমের

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স দক্ষিণ কোরিয়ায় পা ফেলার কয়েক ঘণ্টা আগেই মুখ পুড়ল উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জ‌ং উনের। রবিবার শক্তি প্রদর্শনে কিমের দেশ থেকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কয়েক মুহূর্ত পরেই সেটি বিস্ফোরণে ফেটে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা অফিসাররা।

সংবাদ সংস্থা
সোল শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:৪১
Share: Save:

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স দক্ষিণ কোরিয়ায় পা ফেলার কয়েক ঘণ্টা আগেই মুখ পুড়ল উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জ‌ং উনের। রবিবার শক্তি প্রদর্শনে কিমের দেশ থেকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কয়েক মুহূর্ত পরেই সেটি বিস্ফোরণে ফেটে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা অফিসাররা।

গত কাল কিম জং উনের ঠাকুরদা ও উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুংয়ের ১০৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পিয়ংইয়ংয়ের কিম ইল সুং স্কোয়ারে সামরিক প্রদর্শনী হয়েছিল। সেখানে দু’টি নতুন ‘ইন্টার কন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল’-এর আবরণ (ক্যানিস্টার) এবং মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেখানোর পরে রবিবারের বিপত্তিতে আমেরিকা-সহ গোটা বিশ্বের কাছে উত্তর কোরিয়ার শক্তি প্রদর্শন জোর ধাক্কা খেল বলেই মনে করছে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রতিরক্ষা অফিসারদের দাবি, উত্তর কোরিয়ার পূর্বে বন্দর শহর সিনপো থেকে রবিবার ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়। এই জায়গা থেকেই গত মাসেও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া। যেগুলির মধ্যে তিনটি রকেট গিয়ে পড়েছিল জাপানের কাছে সাগরে। সিনপো শিপইয়ার্ডে ডুবোজাহাজ সংক্রান্ত পরীক্ষানিরীক্ষা করে উত্তর কোরিয়া। মার্কিন উপগ্রহচিত্রে ধরা পড়েছে, এপ্রিল থেকে সেখানে তৎপরতা বেড়েছে অনেকটাই।

আজ কী ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হচ্ছিল, তা বোঝার চেষ্টা করছেন দক্ষিণ কোরীয় এবং মার্কিন গোয়েন্দারা। তবে প্রাথমিক ভাবে হোয়াইট হাউসের এক বিদেশনীতি উপদেষ্টা জানিয়েছেন, সেটি মাঝারি পাল্লার কোনও ক্ষেপণাস্ত্র। ‘ইন্টার কন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল’ নয়। আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে পৌঁছনোর ক্ষমতা তার ছিল না। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যর্থ পরীক্ষা। এর পরেরটাও ব্যর্থই হবে।’’ তাই এতে খুব বেশি গুরুত্ব দিতে চান না তাঁরা।

আরও পড়ুন:বঙ্গ জয়ে পঞ্চায়েতই নিশানা বিজেপির

নির্ধারিত সূচি মেনে রবিবার দক্ষিণ কোরিয়ার সোলে পৌঁছে গিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। ক্ষেপণাস্ত্র বিপত্তির কথা তাঁর কানেও গিয়েছে। ভাইস প্রেসিডেন্টের সহযোগীর বক্তব্য, খবর পৌঁছেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছেও। তবে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। সোলে মার্কিন সেনার এক অনুষ্ঠানে ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স বলেছেন, বিশ্বের জন্য এটা ‘কঠিন সময়।’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে আমরা দৃঢ় ভাবে এগিয়ে যাব। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত হবে।’’

ক্ষেপণাস্ত্র প্রসঙ্গে উত্তর কোরিয়ার বন্ধু দেশ চিনের কূটনীতিক ইয়াং জিয়েচির সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে মার্কিন বিদেশসচিব রেক্স টিলারসনের। এই খবর জানিয়েছে চিনের সরকারি সংবাদসংস্থা জিনহুয়া। ইয়াং বলেছেন, দু’পক্ষের আলোচনা চালিয়ে যাওয়া উচিত। রবিবারের পরীক্ষার পরে দক্ষিণ কোরিয়া জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলে বৈঠক ডেকেছে। দেশের বিদেশমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘কোরীয় উপদ্বীপে এবং গোটা বিশ্বে এ ভাবে ত্রাস ছড়ানোর নিন্দা করছে আমাদের সরকার।’’

উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে অবশ্য ব্যর্থ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কোনও প্রভাবই পড়েনি বলে দাবি সরকারি সংবাদ সংস্থার। সেখানে খুশির আমেজ ছিল এক পুষ্প প্রদর্শনী ঘিরে। শাসক কিম জং উনের উপরে অগাধ ভরসা রিম চুং রিওল নামে বছর তিরিশের এক যুবকের। শোনেনইনি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার খবর। পরে বলেছেন, ‘‘ব্যর্থ হয়েছে? ব্যর্থতাই তো সাফল্যের জনক!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE