Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ বার ‘নির্মম’ হামলার হুমকি কিমের

কিছু দিন আগে প্রশান্ত মহাসাগরীয় মার্কিন দ্বীপ গুয়ামে পরমাণু হামলা নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছিল আমেরিকা-উত্তর কোরিয়ার বাগ্‌যুদ্ধ। হুমকি, পাল্টা-হুমকির তরজা শেষে উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের বিচক্ষণতার প্রশংসা করে টুইট করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

কিম জং উন

কিম জং উন

সংবাদ সংস্থা
সোল শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৭ ০৩:১৪
Share: Save:

এক প্রস্ত বাগ্‌যুদ্ধ হয়েছে সদ্য। কিছু বিরতির পরে ফিরে এসেছে সেই আবহই। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে মার্কিন বাহিনীর যৌথ মহড়ার কথা শুনে ফের গর্জে উঠেছে উত্তর কোরিয়া। রবিবার কিম প্রশাসন সাফ বলেছে, ‘‘ওদের বেপরোয়া আচরণ অনিয়ন্ত্রিত পরমাণু যুদ্ধের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে।’’

কিছু দিন আগে প্রশান্ত মহাসাগরীয় মার্কিন দ্বীপ গুয়ামে পরমাণু হামলা নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছিল আমেরিকা-উত্তর কোরিয়ার বাগ্‌যুদ্ধ। হুমকি, পাল্টা-হুমকির তরজা শেষে উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের বিচক্ষণতার প্রশংসা করে টুইট করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কারণ তখনকার মতো কিমের দেশের তরফ থেকে এক রকমের সংযত পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি এসেছিল। বলা হয়েছিল, আমেরিকা ফোঁস না করলে কিম প্রশাসন চুপচাপই থাকবে। পরে ফের আমেরিকার তরফে আরও হুমকি এসেছিল। তবে তার জল বেশি দূর গড়ায়নি।

কিন্তু সোমবার থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ মহড়া শুরু করবে মার্কিন সেনা। প্রতি বছরই এটা হয়ে থাকে। এই পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়ায় উত্তাপ বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। পিয়ংইয়ং এ বার রাখঢাক না করে সোজা জানিয়ে দিয়েছে, তাদের সেনা আমেরিকার দিকে যে কোনও মুহূর্তে হামলা চালাতে পারে। গুয়াম, হাওয়াই অথবা আমেরিকার মূল ভূখণ্ড— কোথাওই ওই ‘নির্মম হামলা’ এড়ানো পারবে না তারা।

উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদপত্র ‘রোডং সিনমুন’-এ এই বার্তা প্রকাশিত হয়েছে। কিমের দেশের হুমকির মুখে মার্কিন সেনা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের বক্তব্য, দশ দিনের ওই মহড়া থেকে সরে আসার কোনও প্রশ্নই নেই। কিন্তু বার্ষিক এই মহড়াকে পিয়ংইয়ং ‘আগ্রাসন’ হিসেবেই দেখছে। আমেরিকা জানিয়েছে, এটা দু’দেশের প্রতিরক্ষা কর্মসূচির অংশ। তবে রোডং-এ লেখা হয়েছে, ‘‘উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ট্রাম্পের পরমাণু যুদ্ধের মহড়া আসলে অনিয়ন্ত্রিত পরমাণু যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’’ তাদের দাবি, ‘‘উত্তর কোরিয়ার হাতে আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) আছে, যা যে কোনও জায়গা থেকে আমেরিকার মূল ভূখণ্ডে সরাসরি আঘাত করতে সক্ষম। তাই উত্তর কোরিয়ার সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, ‘‘কোরিয়ান পিপলস আর্মি সতর্ক থাকছে। শত্রুর মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতও। প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধের সামান্যতম ইঙ্গিত পেলেই দৃঢ় পদক্ষেপ করা হবে।’’ তবে ‘প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধ’ বলতে কিমের দেশ ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন অবশ্য তাঁর দেশের নাগরিকদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ‘‘কোরীয় উপদ্বীপে আর কোনও যুদ্ধ হবে না।’’ তাঁর দাবি, উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে সামরিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আগে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে নেবেন বলে জানিয়েছেন।

ওয়াশিংটন এবং পিয়ংইয়ং— দু’পক্ষকেই সংযত হওয়ার বার্তা দিয়েছে চিন। তবে কূটনীতিকদের দাবি, সমালোচনা করলেও বরাবরই কিছুটা পিয়ংইয়ং-ঘেঁষা চিন। তাই তাদের সরকার নিয়ন্ত্রিত দৈনিক ‘গ্লোবাল টাইমস’-এ বলা হয়েছে, ‘‘এই মহড়া পিয়ংইয়ংকে প্ররোচিত করবে সন্দেহ নেই। পিয়ংইয়ংয়ের কাছ থেকেও তাই কড়া প্রতিক্রিয়াই প্রত্যাশিত। যদি কোরীয় উপদ্বীপে দক্ষিণ কোরিয়া সত্যিই কোনও যুদ্ধ না চায়, তা হলে তাদের উচিত, এই মহড়া বন্ধ করা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE