Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

জোট-সরকার গঠনে বাধা বিরোধীদের

সাধারণ নির্বাচনে দলের দুরন্ত ফলাফলের পরেই জানিয়েছেন, দেশকে নেতৃত্ব দিতে তিনি প্রস্তুত। পার্লামেন্টের অন্য দলগুলিকেও সরকার গঠনে বিরোধিতার পথে হাঁটার ডাক দিয়েছেন তিনি।

টেরেসা মে।ছবি: সংগৃহীত।

টেরেসা মে।ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৭ ০৩:৪২
Share: Save:

দুশ্চিন্তা কাটছে না টেরেসা মে-র। পরিকল্পনামাফিক এগোতে গিয়ে প্রথম থেকেই ধাক্কা খেতে হচ্ছে পদে পদে।

পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে আয়ারল্যান্ডের ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির (ডিইউপি) সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়ার পরিকল্পনা করলেও এই জোট কতটা সফল হবে, তা নিয়ে এখন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে দলের মধ্যেও। রাজনীতিকদের একাংশ বলছে, ব্রেক্সিট থেকে সমকামী আইন— মতের ফারাকে দ্বন্দ্ব বাধতে পারে অনেক জায়গাতেই। হাত গুটিয়ে বসে নেই জেরেমি করবিনও। হাউস অব কমন্সে আসন বাড়িয়ে লেবার নেতার আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। সাধারণ নির্বাচনে দলের দুরন্ত ফলাফলের পরেই জানিয়েছেন, দেশকে নেতৃত্ব দিতে তিনি প্রস্তুত। পার্লামেন্টের অন্য দলগুলিকেও সরকার গঠনে বিরোধিতার পথে হাঁটার ডাক দিয়েছেন তিনি। রবিবারেও একটি সাক্ষাৎকারে করবিন বলেছেন, ‘‘এই বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে ফের দেশে নির্বাচন হতে পারে। সেটাই কাম্য। এই রকম চরম অস্থিরতার মধ্য দিয়ে আমরা বেশি দিন চলতে পারব না।’’

আরও পড়ুন: মুক্ত গদ্দাফি-পুত্র সইফ

চিন্তায়: দলনেত্রীর সঙ্গে দেখা করতে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ভারতীয় ব‌ংশোদ্ভূত কনজারভেটিভ এমপি প্রীতি পটেল। রবিবার। ছবি: রয়টার্স।

এ দিকে, ১০ ডাউনিং স্ট্রিট ও ডিইউপি জানিয়েছে, সরকার গঠনের জন্য দু’দলের মধ্যে প্রয়োজনীয় শর্ত নিয়ে শীঘ্রই আলোচনা শুরু হবে। প্রাথমিক ভাবে কিছু শর্তে ইতিমধ্যেই সহমত হয়েছেন দু’দলের নেতারা। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া বা ব্রেক্সিট নিয়ে মে-র প্রস্তাবিত শর্তাবলির তুলনায় অনেক নমনীয় পথে হাঁটতে চায় ডিইউপি। সমকামিতা বা গর্ভপাতের মতো সামাজিক বিষয় নিয়েও গোঁড়ামি রয়েছে এই দলের। পার্লামেন্টে বাজেট বা কোনও বিষয় নিয়ে আইন পাশ করার জন্য ডিইউপি-র ১০ জন এমপির সমর্থন লাগবে মে-র। হাউস অব কমন্সের এই নতুন অঙ্কের জেরেই জটিল হতে পারে ব্রেক্সিট আলোচনা। কারণ, ইইউ থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একই বাজারের অন্তর্ভুক্ত থাকতে চায় ডিইউপি। যার ফলে আগের মতোই আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে বাণিজ্যে কোনও বাধা-নিষেধ থাকবে না ব্রিটেনের। অন্য দিকে, সমকামী আইন নিয়ে ডিইউপির কড়া অবস্থানে উদ্বিগ্ন কনজারভেটিভদের একাংশ। স্কটল্যান্ডের এক সমকামী নেতা যেমন বলেছেন, ‘‘ডিইউপির সঙ্গে যদি চুক্তি হয়, তবে তাতে এলজিবিটিদের অধিকারে কোনও বাধা-নিষেধ থাকা চলবে না। তাঁর কথায়, ‘‘আমি এই বিষয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর থেকে আশ্বাস চাই।’’

করবিন-কাঁটাও পদে পদে বিঁধছে মে-কে। ১৯ জুন ব্রিটেনে নতুন পার্লামেন্ট শুরুর কথা ঘোষণা করবেন রানি। ওই বক্তৃতাতেই নতুন বাজেট ও সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের কথা জানাবেন তিনি। করবিন বলেছেন, ‘‘রানির সেই বক্তৃতায় উল্লিখিত সরকারি নীতির বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সংশোধনী আনতে চাই আমরা।’’ ব্রেক্সিট পরবর্তী ব্রিটেনে চাকরির সুযোগ বাড়ানো, সামাজিক খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি মকুব, উচ্চবিত্ত ও কপোর্রেট সংস্থাগুলির উপর বেশি কর বসানো নিয়েও চাপ দেবে লেবার। করবিন জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনকে ব্রিটিশ আইনে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করবেন তিনি। ইউরোপীয় বাজারের সঙ্গে শুল্কবিহীন বাণিজ্যের পথ যাতে খোলা থাকে তা নিয়ে দর কষাকষি করবে লেবার।

চাপ আসছে সাধারণ মানুষের দিক থেকেও। ডিইউপির সঙ্গে জোট বাঁধায় মে-র ইস্তফা চেয়ে একটি আবেদনপত্রে সই করেছেন অন্তত ৫ লক্ষ মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE