জঙ্গিদের খোঁজে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। ছবি: রয়টার্স।
সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধেই। তাদের সঙ্গে যোগসাজশ রেখে চলার অভিযোগ তুলে ক’দিন আগেই কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে ছ’টি সুন্নি আরব দেশ। এ হেন ইরানই সন্ত্রাসের শিকার হল বুধবার।
আজ রাজধানী তেহরানে পার্লামেন্ট মজলিশ এবং দেশের প্রয়াত শীর্ষ নেতা আয়াতোল্লা রৌহল্লা খোমেইনির সমাধিক্ষেত্রে হানায় নিহত হয়েছে ১২ জন। আহত কমপক্ষে ৩৯ জন। দু’টি হামলারই দায় স্বীকার করেছে ইসলামি জঙ্গি
সংগঠন আইএস। স্থানীয় সময় সকাল দশটা পেরিয়েছে সবে। আচমকা পার্লামেন্ট চত্বরে ঢুকে পড়ে চার জন সশস্ত্র জঙ্গি। সকলের পরনেই ছিল মহিলাদের পোশাক। পার্লামেন্টে তখন অধিবেশন চলছিল। চত্বরের একটি দফতরের পাঁচ তলায় নিজেকে উড়িয়ে দেয় আত্মঘাতী জঙ্গি। বাকি তিন জন একে-৪৭ হাতে তাণ্ডব চালানো শুরু করে গোটা পার্লামেন্ট চত্বরে।
প্রথমে খবর রটেছিল, ভিতরে অনেককে বন্দি করে রেখেছে জঙ্গিরা। কিন্তু দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক সে খবর অস্বীকার করে। নিরাপত্তারক্ষীরাও পাল্টা গুলি চালাতে শুরু করেন। মূল ভবনে ঢোকার সব ক’টা দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। একটি বহুতলের জানলা দিয়ে কিছু মানুষকে বের করে আনেন নিরাপত্তারক্ষীরা। টিভির ফুটেজে দেখা গিয়েছে সেই দৃশ্যও। ঘণ্টা চারেকের অভিযান শেষে খতম হয় বাকি তিন জঙ্গি। পার্লামেন্ট ভবন জঙ্গিমুক্ত ঘোষণা করা হয় তার পর। আজকের অধিবেশনও চলে ঘড়ি ধরেই। পার্লামেন্টের স্পিকার আলি লারিজানি অবশ্য এই হামলাকে তেমন আমলই দিতে চাননি। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘‘এটা তেমন কোনও বড় বিষয়ই নয়। কিছু কাপুরুষ জঙ্গি পার্লামেন্টে ঢুকে পড়েছে। পার্লামেন্টের নিরাপত্তারক্ষীরাই ওদের
মোকাবিলা করছেন।’’
আরও পড়ুন: হামলা হবে, হুমকি দিয়েছিল আইএস
পার্লামেন্টে হামলার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই খোমেইনির সমাধিক্ষেত্রে হামলা চালায় অপর দুই জঙ্গি। যাদের মধ্যে এক জন মহিলা ছিল। তেহরানের শহরতলির এই সমাধিক্ষেত্রে রোজই দর্শনার্থীদের ভিড় হয়। সেখানেই প্রথমে নিজেকে উড়িয়ে দেয় এক আত্মঘাতী জঙ্গি। অপর জন বন্দুক নিয়ে আক্রমণ শুরু করে। প্রথমেই নিহত হন সেখানকার মালি। নিরাপত্তারক্ষীরা ওই জঙ্গিকেও শেষ পর্যন্ত নিকেশ করে। অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, আজকের হামলায় যুক্ত ছয় জঙ্গিকেই মেরে ফেলা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে এক মহিলা-সহ দু’জনকে। তৃতীয় একটি হামলার ছক আজ বানচাল করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে ইরান সরকার। গত বছর রমজান মাসেই তেহরানে আইএসের বড় হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছিলেন ইরানের গোয়েন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy