Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
International News

কোরিয়া পারলে ভারত-পাক কেন পারবে না? শান্তির ডাক পাক মিডিয়ায়

কোরীয় উপদ্বীপের ছবি তুলে ধরে পাকিস্তানের ‘ডন নিউজ’ লিখেছে, ভারত এবং পাকিস্তানেরও উচিত এই পথই ধরা।

বাজপেয়ীর লাহৌর সফরের কথা তুলে ধরেছে পাক সংবাদমাধ্যম। ফের কেন শান্তির প্রয়াস হবে না, সে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

বাজপেয়ীর লাহৌর সফরের কথা তুলে ধরেছে পাক সংবাদমাধ্যম। ফের কেন শান্তির প্রয়াস হবে না, সে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৮ ১৭:০৩
Share: Save:

দুই কোরিয়ার অবিশ্বাস্য পদক্ষেপ ছাপ ফেলল উপমহাদেশেও। দশকের পর দশক ধরে পরস্পরকে যুদ্ধের হুঙ্কার শোনাতে থাকা উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া অত্যন্ত দ্রুত বদলে ফেলছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি। কিম জং-উন এবং মুন জায়ে-ইনের বৈঠকের পরে বেনজির সম্প্রীতির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে কোরীয় উপদ্বীপে। তার প্রেক্ষিতেই পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের প্রশ্ন, ভারত-পাকিস্তান কেন এই ভাবে এগোতে পারবে না পরস্পরের দিকে? কেন হাত মেলাতে পারবেন না মোদী-আব্বাসি?

উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তে ‘সমঝোতা গ্রাম’ পানমুনজমে কয়েক দিন আগে যে ছবি তৈরি হয়েছে, নির্ধারিত কর্মসূচিতে তার কোনও সংস্থানই ছিল না। দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন সীমান্তের নিচু কংক্রিট বাউন্ডারির ধারে পৌঁছতেই, হাত বাড়িয়ে দেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং-উন। প্রথমে করমর্দন করেন, তার পরে হাত ধরে টেনে নিজের দেশে ঢুকিয়ে নেন মুনকে, ঘুরিয়ে আনেন উত্তর কোরিয়ার কিছুটা ভিতরের দিক থেকে।

পানমুনজমে কিম এবং মুনের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল ঠিকই। কিন্তু কিমের হাত ধরে উত্তর কোরিয়ার ভিতর দিকে ঢুকে যাবেন মুন, অভূতপূর্ব সম্প্রীতির ছবি তৈরি হবে, এমনটা বেশ অপ্রত্যাশিত ছিল।

দুই শাসকের বৈঠকেই কিন্তু শেষ হয়নি দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়া। বৈঠকের পর থেকেদুই কোরিয়া পরস্পরের প্রতি একের পর এক সৌজন্যমূলক বার্তা দিতে শুরু করেছে। উত্তর কোরিয়া নিজেদের ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে দিচ্ছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার টাইম জোনের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার সময়কে। আর সীমান্তে লাউড স্পিকার লাগিয়ে উত্তরের কমিউনিস্ট রাজত্বের বিরুদ্ধে অবিরত যে প্রচার চালাত দক্ষিণ, সেই প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। সীমান্ত থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে লাউড স্পিকার।

কোরীয় উপদ্বীপের এই ছবি তুলে ধরে পাকিস্তানের ‘ডন নিউজ’ লিখেছে, ভারত এবং পাকিস্তানেরও উচিত এই পথই ধরা। ‘‘...দীর্ঘ দিনের সাংস্কৃতিক এবং অন্যান্য মিল ভারত ও পাকিস্তানে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীকে যে অভিন্ন ইতিহাস এবং অভিন্ন স্বপ্ন ও আকাঙ্খা দিয়েছে, তাতে সম্পর্কে স্বাভাবিকতা এবং শান্তি ফেরানো এই অঞ্চলের সবচেয়ে মহান লক্ষ্য।’’

যে সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে ভারত-পাকিস্তান শান্তি প্রক্রিয়ার পক্ষে সওয়াল করেছে ‘ডন’, তাতে অটলবিহারী বাজপেয়ীর লাহৌর সফরের স্মৃতিচারণও করা হয়েছে। কিম জং-উন এবং মুন জায়ে-ইনের বৈঠক অবধারিত ভাবে ১৯৯৯ সালের সেই অভূতপূর্ব আশা-আকাঙ্খার দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, যখন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর ঐতিহাসিক সফরে পাকিস্তানের লাহৌরে পা রেখেছিলেন— এমনই লেখা হয়েছে পাক সংবাদমাধ্যমে।

দুই কোরিয়াকে দেখে ভারত এবং পাকিস্তানের শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে মত ‘ডন’-এর। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘আরও এক বার শান্তি ও মৈত্রীর পথে হাঁটুক ভারত এবং পাকিস্তানের নেতৃত্ব, সেই সময় এসে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pak Media
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE