ভারতকে চোখ রাঙাতে আচমকা মহড়া বাড়িয়েছে পাকিস্তান। ঠিক সেই সময়েই যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ায় যথেষ্ট অস্বস্তির মুখে ইসলামাবাদ। —ফাইল চিত্র।
ভেঙে পড়ল পাক বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান। গত কয়েক দিন ধরেই মহড়া বাড়িয়েছে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী। ভারত সামরিক পদক্ষেপ নিলে যে পাকিস্তানও মোকাবিলায় তৈরি, সে কথা বোঝাতেই পাক বিমানবাহিনীর এই রণহুঙ্কার। তার মাঝেই উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে ভেঙে পড়ল এফ-৭ যুদ্ধবিমান।
পাকিস্তানের বিমানবাহিনীও যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছে। গতকাল অর্থাৎ শনিবার পাক বিমানবাহিনীর এফ-৭ যুদ্ধবিমানটি ভেঙে পড়ে। বাহিনীর তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, দেশের উত্তর-পশ্চিমাংশে জামরুদ শহরের কাছে যুদ্ধবিমানটি ভেঙে পড়েছে। জামরুদ শহরকে খাইবার পাসের প্রবেশ দ্বার বলা হয়। একটি প্রশিক্ষণমূলক উড়ানের সময় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানানো হয়েছে। দুর্ঘটনায় বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট আমের শাহজাদের মৃত্যু হয়েছে। এই এফ-৭ ফাইটার জেটগুলি পাকিস্তান চিনের কাছ থেকে কিনেছে। রুশ প্রযুক্তিতে তৈরি মিগ-২১ যুদ্ধবিমানের যে লাইসেন্সপ্রাপ্ত সংস্করণ চিন নিজের দেশে তৈরি করে, তার নামই এফ-৭। রুশ যুদ্ধবিমানে কিছু অদলবদল ঘটিয়ে এই এফ-৭ তৈরি। নিজেদের বিমানবাহিনীতে ব্যবহারের পাশাপাশি পাকিস্তানকেও এফ-৭ সরবরাহ করেছে চিন। শনিবার ভেঙে পড়ল সেগুলিরই একটি।
গত কয়েক দিন ধরে পাক বিমানবাহিনীর মহড়া আর প্রশিক্ষণমূলক উড়ানের সংখ্যা আচমকা বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ইসলামাবাদের আকাশে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ওড়ার খবর আসে। তার পরে আবার লাহৌর-ইসলামাবাদ হাইওয়েতেও যুদ্ধবিমান নামার খবরও আসে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে হাইওয়েকে রানওয়ে হিসেবে ব্যবহার করতে যুদ্ধবিমানগুলি কতটা প্রস্তুত, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতেই হাইওয়েতে অবতরণ পাক যুদ্ধবিমানের। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক অবশ্য জানিয়েছিল, ওগুলি রুটিন কর্মসূচি। সে রকমই এক ‘রুটিন কর্মসূচি’ চলাকালীন শনিবার খাইবার পাসের কাছে ভেঙে পড়ল পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান। বর্তমান পরিস্থিতিতে এফ-৭ যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ার খবর যে পাক বাহিনীর পক্ষে যথেষ্ট অস্বস্তিকর, সে নিয়ে কোনও মহলেই সংশয় নেই। কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘আমাদের সেনা বেশি কথা বলে না, বীরত্বেই জবাব দেয়’, কঠোর ইঙ্গিত মোদীর
তদন্তের নির্দেশে অবশ্য অস্বস্তি কাটছে না। কারণ গত ১৮ মাসে একের পর এক দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে পাক বাহিনীর বিভিন্ন এয়ারক্র্যাফ্ট। ২০১৫ সালের মে মাসে পাক বাহিনীর একটি কপ্টার বিদেশী প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি পর্যটন স্থল পরিদর্শন করতে যাওয়ার পথে ভেঙে পড়ে। সেই দুর্ঘটনায় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যাঁদের মধ্যে ছিলেন ফিলিপিন্স এবং নরওয়ের দুই কূটনীতিক। ওই বছর অগস্টে উত্তর পাকিস্তানের মানশেরা জেলায় এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স হিসেবে ব্যবহৃত একটি সেনা কপ্টার ভেঙে পড়ায় ১২ জনের মৃত্যু হয়। নভেম্বর মাসেও পাক বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়েছিল, যাতে এক মহিলা পাইলটের মৃত্যু হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy