বেঁচে ফেরা: সেই বিমানের যাত্রী বসন্ত বোহরা। ছবি: এএফপি
অফিসের কাজে বাংলাদেশ গিয়েছিলেন। আজই ফেরার কথা ছিল কাঠমান্ডুতে। ৬৭ জন যাত্রী আর চার জন বিমানকর্মীকে নিয়ে ফ্লাইট নম্বর বিএস ২১১ ঢাকার মাটি ছেড়েছিল স্থানীয় সময় ১২টা বেজে ৫২ মিনিটে। নেপালের বাসিন্দা বসন্ত বোহরা তখন ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি, নেপালে কী ভয়াবহ অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করছে তাঁদের জন্য।
নেপালের সময় দু’টো কুড়িতে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছনোর কথা ছিল বসন্তদের। কিন্তু ড্যাশ-৮ কিউ ৪০০ মডেলের বিমানটির আর কাঠমান্ডুর মাটি ছোঁয়া হয়নি। রানওয়ে ছোঁয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে ভেঙে পড়ে সেটি। জ্বলন্ত সেই বিমানটি থেকে অবশ্য বেঁচে ফিরেছেন বসন্ত। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই জানিয়েছেন, তাঁর বেঁচে ফেরার আশ্চর্য কাহিনি।
নেপালের রাসউইতা ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস নামে এক পর্যটন সংস্থার কর্মী বসন্ত বাংলাদেশে গিয়েছিলেন একটি প্রশিক্ষণের জন্য। জানালেন, তাঁকে নিয়ে নেপালের বিভিন্ন পর্যটন সংস্থার মোট ১৬ জন কর্মী ছিলেন ওই বিমানে। সবাই প্রশিক্ষণ সেরে আজই ফিরছিলেন। তাঁরা ছাড়া আরও ১৭ জন নেপালের নাগরিক ছিলেন বিমানে। বাংলাদেশের ৩২ জন, চিন আর মলদ্বীপের এক জন করে নাগরিকও ছিলেন। ঢাকা থেকে টেক অফের সময় বিমানের মধ্যে কোনও গোলমাল নজরে পড়েনি বসন্তদের। বিমানে বাকি সময়টাতেও তাঁদের সফর ছিল ঠিকঠাকই। কিন্তু ঝামেলা শুরু হয় কাঠমান্ডুর আকাশে বিমানটি ঢোকার পরে। বসন্ত জানিয়েছেন, ত্রিভুবনে নামার কিছু ক্ষণ আগে থেকে বিমানটি অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। প্রথমে বিকট ঝাঁকুনি। তার পরই ভয়ানক আওয়াজ। তত ক্ষণে বিমানটিতে আগুনও লেগে গিয়েছে। খারাপ কিছু হতে চলেছে আঁচ করতে বেশি সময় নেননি বসন্ত। বসেছিলেন জানলার পাশের আসনে। বললেন, ‘‘জানলা ভাঙা ছাড়া আর উপায় ছিল না। আমি কোনও মতে কাচ ভেঙে বেরিয়ে আসি। তার পর আর কিছু মনে নেই।’’
আরও পড়ুন: ওড়ার সাধ পূর্ণ করেও হারিয়ে গেল প্রিয়ন্ময়ী
বিমান থেকে বেরিয়ে আসার পরে আর জ্ঞান ছিল না বসন্তের। পরে জানালেন, দমকল কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করার পরে কেউ সিনামঙ্গল হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। পরে তাঁর এক বন্ধু এসে থাপাথালি এলাকার নরভিক ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করেন। আপাতত মাথায় আর পায়ে গুরুতর চোট লেগেছে বসন্তের। কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নেই। বাকি পর্যটন সংস্থার কর্মীদের কী হল, জানেন না বসন্ত। শুধু বলেছেন, ‘‘আমি খুব ভাগ্যবান যে, এ ভাবে বেঁচে ফিরতে পেরেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy