ইয়াঙ্গসি নদীতে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: এএফপি।
ঘূর্ণিঝড় আর প্রবল বৃষ্টিতে চিনের ইয়াঙ্গসি নদীতে ৪৫৮ জনকে নিয়ে উল্টে গেল একটি প্রমোদতরী। স্থানীয় সময় সোমবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালেও আবহাওয়া খারাপ থাকার ফলে উদ্ধারকাজ খুব একটা এগোয়নি। এখনও পর্যন্ত ৫ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। নিখোঁজ চারশোরও বেশি।
গত বৃহস্পতিবার নানজিঙ্গ প্রদেশ থেকে দুপুর সওয়া একটা নাগাদ রওনা দিয়েছিল প্রমোদতরীটি। ৪০৬ জন যাত্রী, পাঁচ জন গাইড এবং ৪৭ জন জাহাজকর্মী নিয়ে চঙ্গকুইঙ্গ প্রদেশে পৌঁছনোর কথা ছিল জাহাজটির। কিন্তু তার আগেই সোমবার রাতে হুবেই প্রদেশে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে আটকে পড়ে। সেখান থেকে বেরোনো আর সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রাত দশটা নাগাদ ওই এলাকা দিয়ে যেতে যেতে জলে দু’জনকে হঠাৎ দেখতে পায় একটি নৌকো। তারাই তার পর উদ্ধারকারী সংস্থাকে খবর দেয়। তাঁদের তৎক্ষণাৎ উদ্ধার করা হলে জানা যায়, দুর্ঘটনায় উল্টে যাওয়ার জাহাজটির নাবিক এবং ইঞ্জিনিয়ার ওই দুই ব্যক্তি।
নাবিক জানিয়েছেন, আবহাওয়া খারাপ থাকার ফলেই দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেছেন, ‘‘কিছু বোঝার আগেই দু-এক মিনিটের মধ্যে হঠাৎ করে সব ওলট-পালট হয়ে যায়।’’ তাই বিপদ সঙ্কেত দেওয়ার কোনও ফুরসত হয়নি তাঁর। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে তাঁকে এবং ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উদ্ধারকাজে যাতে কোনও রকম গাফিলতি না হয়, সে বিষয়ে বিশেষ নজরদারি করতে বলেছেন প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং এবং প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াং। বার্তা পাঠিয়ে সহানুভূতি জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।
পুলিশ সূত্রের খবর, মোট ৩৬টি জাহাজ, ১১৭টি নৌকো পৌঁছে গিয়েছে সেখানে। ১৮০০-রও বেশি সেনা, ১৬০০ পুলিশকর্মী এবং স্থানীয় বাসিন্দারাও হাত লাগিয়েছেন উদ্ধারে। উদ্ধারকারী সংস্থা আরও জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১৪ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৮০ বছরের এক বৃদ্ধাও। এবং পাঁচ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেছে প্রশাসন। ৪৩৯ জনের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি এখনও। কিন্তু মঙ্গলবার সকালেও ওই এলাকার আবহাওয়া ছিল বেশ খারাপ। তাই উদ্ধারকাজের খুব একটা অগ্রগতি সম্ভব হয়নি। আবহাওয়া দফতর মারফত জানানো হয়েছে, আগামী দশ দিন ওই এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
ডুবুরিরা জানিয়েছেন, উদ্ধার চালিয়ে যাওয়ার সময় মাঝেমাঝেই উল্টে থাকা জাহাজের মধ্যে থেকে পায়ের আওয়াজ শোনা গিয়েছে। তাই তাঁরা আশা করছেন, এখনও বেশ কয়েক জন বেঁচে রয়েছেন। তাঁদের যাতে নিঃশ্বাসের অসুবিধা না হয়, সে জন্য ভাঙা জাহাজের মধ্যে অতিরিক্ত মাত্রায় অক্সিজেন পাম্প করা হয়েছে।
বেশ কয়েক দিনের জন্য জাহাজটি ভাড়া করেছিল একটি পর্যটন সংস্থা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আট থেকে আশি বিভিন্ন বয়সি যাত্রী ছিল ওই জাহাজে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy