Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ব্রেক্সিট থেকে গ্রেনফেল, সবই ছুঁল রানির বক্তৃতা

নির্ধারিত দিনের চেয়ে দু’দিন পিছিয়ে পার্লামেন্টে বুধবার ছেলে চার্লসকে পাশে নিয়ে আগামী দু’বছরের জন্য সরকারের কর্মসূচি ঘোষণা করেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।

রাজ-কাজ: ছেলে চার্লসের হাত ধরে বক্তৃতা দিতে চলেছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। সামনে তাঁর মুকুট— ‘ইম্পিরিয়াল স্টেট ক্রাউন’। বুধবার হাউস অব পার্লামেন্টে। ছবি: এএফপি।

রাজ-কাজ: ছেলে চার্লসের হাত ধরে বক্তৃতা দিতে চলেছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। সামনে তাঁর মুকুট— ‘ইম্পিরিয়াল স্টেট ক্রাউন’। বুধবার হাউস অব পার্লামেন্টে। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৭ ০২:২৪
Share: Save:

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ‘মসৃণ এবং সুশৃঙ্খল’ ভাবে বেরিয়ে আসার জন্য নতুন কিছু প্রস্তাবিত আইনের কথা ঘোষণা করলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। বুধবার তাঁর বক্তৃতায় উঠে এল ২৭টি বিলের কথা। যার মধ্যে ব্রেক্সিটের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে অন্তত সাতটির। তা ছাড়া ব্যবসা, শুল্ক, অভিবাসন, কৃষি, মৎস্যচাষ, পরমাণু প্রকল্প এবং নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত বিলও রয়েছে।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে নির্বাচনী ইস্তাহারে যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার অনেক কিছুই বাদ পড়েছে কনজারভেটিভ পার্টি ভোটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায়। আপাতত এখনও আয়ারল্যান্ডের ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির সঙ্গে কথাবার্তা চলছে টেরেসার দলের। ডাউনিং স্ট্রিটের এক মুখপাত্রের বক্তব্য, রানির বক্তৃতা আগামী সপ্তাহে হাউস অব কমন্সের ভোটে মজবুত ভিত্তি গড়ে দেবে।

নির্ধারিত দিনের চেয়ে দু’দিন পিছিয়ে পার্লামেন্টে বুধবার ছেলে চার্লসকে পাশে নিয়ে আগামী দু’বছরের জন্য সরকারের কর্মসূচি ঘোষণা করেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তাঁর স্বামী অর্থাৎ ডিউক অব এডিনবরা আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রিন্স অব ওয়েলসই ছিলেন তাঁর পাশে। মঙ্গলবার রাত থেকেই হাসপাতালে ভর্তি প্রিন্স ফিলিপ।

রানির বক্তৃতায় ব্রেক্সিট প্রসঙ্গ ছাড়াও ছিল বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ নীতি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে কমিশন প্রতিষ্ঠা। গত কয়েক সপ্তাহে সন্ত্রাস যে ভাবে কাবু করেছে ব্রিটেনকে, সেই তথ্য মাথায় রেখে সন্ত্রাস-বিরোধী আইনগুলি পুনর্বিবেচনা করে দেখার কথা বলেছেন রানি। তাঁর কথায়, ‘‘ম্যাঞ্চেস্টার এবং লন্ডনে জঙ্গি হামলার কথা ভেবে আমার সরকারের সন্ত্রাস বিরোধী কৌশল ফিরে দেখা হবে। সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে যথেষ্ট ক্ষমতা যেন থাকে। দেশের নিরাপত্তার
কথা ভেবে সন্ত্রাস সংক্রান্ত অপরাধে শাস্তির মেয়াদ যাতে দীর্ঘ হয়, দেখতে হবে সেটাও।’’

টেরেসার কথার প্রতিধ্বনি করে গ্রেনফেল টাওয়ারের বিপর্যয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের কথা বলেছেন রানি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান নেওয়া থেকে শুরু করে সবই হবে বিশদে। ওই আবাসনের বাসিন্দা, লন্ডনের মেয়র, বিরোধী দলের প্রতিনিধি— প্রশ্নের মুখে পড়বেন সবাই। আশ্রয়হীনদের দ্রুত বাসস্থানের ব্যবস্থা করার কথাও বলেছেন রানি। এই সূত্রেই ‘স্বাধীন সরকারি এক জন আইনজীবী’র প্রস্তাবও করেছেন রানি, যিনি ভবিষ্যতের বিপর্যয়ে সাধারণ
মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নানা ক্ষেত্রে সাহায্য করবেন।

কিন্তু ব্রেক্সিট মীমাংসার পরে দেশের অভিবাসনের নীতি কেমন হবে, সরকারের ব্যবসা বা শুল্ক নীতির চেহারা কী হবে, তা নিয়ে খুব অল্পই শোনা গেল রানির বক্তৃতায়। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলি থেকে অবাধ যাতায়াত বন্ধ করতে একটি বিল আনা হবে বলা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তার কোনও নির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে বোঝানো হয়নি।

এ বছরের শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্রিটেন সফর নিয়েও কোনও উল্লেখ
ছিল না রানির বক্তৃতায়। সফরের কোনও তারিখ এখনও ঠিক হয়নি বলেই এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি— দাবি মন্ত্রীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE