ভরা আদালতে ধর্ষণের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দেওয়ার হাত থেকে এ বার হয়তো নিষ্কৃতি পাবেন ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের নির্যাতিতারা। ব্রিটিশ বিচারমন্ত্রী লিজ ট্রুস সোমবার কারা ও আদালত সংক্রান্ত একটি বিল হাউস অব কমন্সে পেশ করবেন। তাতে বলা হয়েছে, আদালতে শুনানির আগেই ধর্ষিতারা আলাদা কক্ষে তাঁদের বয়ান রেকর্ডের সুযোগ পাবেন।
আদালতে অভিযুক্তের সামনে দাঁড়িয়েই আইনজীবীদের প্রশ্নবাণের মুখে নির্যাতিতার যন্ত্রণাবৃদ্ধির অভিযোগ নতুন নয়। একটি সাক্ষাৎকারে লিজ বলেছেন, ‘‘নতুন আইনের ফলে নির্যাতিতার আতঙ্ক অনেকটাই কমবে।’’ ইতিমধ্যেই লিভারপুল, লিডস ও কিংঙ্গস্টনে পরীক্ষামূলক ভাবে এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার অনেকটাই বেড়েছে।’’ এত দিন এই বিশেষ সুযোগ দেওয়া হতো যৌন নির্যাতনের শিকার শিশুদের। লিজ চাইছেন, এ বার থেকে তা যেন সব নির্যাতিতাকেই দেওয়া হয়। তাতে আরও বেশি করে অপরাধের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাবেন তাঁরা।
দিন কয়েক আগে প্লেইড সিমরু-র এমপি লিজ স্যাভাইল রবার্টস একটি প্রাইভেট মেম্বার বিল এনেছিলেন। ধর্ষিতার যৌন কার্যকলাপের ইতিহাস নিয়ে জেরা বন্ধের প্রস্তাব ছিল সেখানেও। তার পরে একই মর্মে বিল আনতে চলেছে ব্রিটিশ সরকারও। লিজ বলেছেন, নির্যাতিতার বয়ান নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁকে কত দূর প্রশ্ন করা যাবে তার একটি সীমারেখাও টানা হয়েছে নতুন বিলে। যৌন কার্যকলাপ সংক্রান্ত প্রশ্ন শুধু ব্যতিক্রমী মামলাতেই করা যাবে। আবার কোনও প্রশ্ন আপত্তিকর মনে হলে বিচারক তা রেকর্ড থেকে বাদ দিতেও পারেন।
এই আইন আসার সম্ভাবনায় আশা দেখছেন অনেকে নির্যাতিতা ও তাঁদের পরিবার। যেমন, সেরি লিন্ডন। ২০১৪-র অগস্টে তাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করেছিল এক ট্যাক্সি চালক। তার পর থেকেই কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ নিতে থাকেন ২০ বছরের সেরি। তাঁর মা বলেন, ‘‘সেরিকে বলা হয়েছিল, তাকে প্রমাণ দেখাতে হবে। আমি নিশ্চিত নতুন এই সংস্কার তাকে সাহায্য করবে।’’ ধর্ষকের বিচার হওয়ার আগেই আত্মঘাতী হয়েছিলেন আরও এক মহিলা। এই পরিকল্পনায় খুশি সেই তাঁর পরিবারও।
চর্চায় অবশ্য উঠে আসছে অপপ্রয়োগের আশঙ্কাও। ফৌজদারি আইনজীবী সংগঠনের কর্ত্রী জো গ্যাসকোয়নের কথায়, ‘‘এই পদক্ষেপ একটু বেশিই বাড়াবাড়ি।’’ শুনানি থেকে অব্যাহতির সুযোগ নিয়ে কাউকে ধর্ষণের দায়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া যেতে পারে বলেও আশঙ্কা তাঁর।
বিল পাশ হলে সেপ্টেম্বর নাগাদ নয়া আইন কার্যকর হতে পারে বলে আইনমন্ত্রী জানান। এই বিলে একটি নতুন ধারাও যোগ করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও শিশুর সঙ্গে যৌনতা বিষয়ক আদান-প্রদানে প্রাপ্তবয়স্কদের ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy