হোটেলের বাইরে নিরাপত্তারক্ষীদের টহলদারি। ছবি: রয়টার্স।
দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা লড়াইয়ের পর অবশেষে জঙ্গিদের কবল থেকে মুক্ত হল মোগাদিসুর হোটেল।
শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুর মকা আল-মুকারামা হোটেলে হামলা চালায় আল-শাবাব জঙ্গিরা। হোটেলটি রাজধানীর সবচেয়ে পরিচিত এবং বড় হোটেলগুলির মধ্যে অন্যতম। ওই হোটেলে বছরের বেশির ভাগ সময়েই বিদেশি পর্যটক, অন্য দেশের রাষ্ট্রদূত এবং সোমালিয়ার প্রশাসনিক আধিকারিকেরা অতিথি হয়ে আসেন। শুক্রবার বিকেলে হোটেলের সদর দরজার সামনে প্রথমে একটি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। তার পর হোটেলের লবিতে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। করিডরের পাশাপাশি ঘরে ঘরে ঢুকেও জঙ্গিরা গুলি চালায় বলে সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে। এরই মধ্যে হোটেলের লবিতে আত্মঘাতী হামলা চালায় ওই দলেরই এক জঙ্গি। হামলার খবর পেতেই এলাকা ঘিরে ফেলে সোমালিয়ার পুলিশ ও সেনাবাহিনী। রাত পর্যন্ত চলে সেনা-জঙ্গি সম্মুখসমর। এ দিন সকালেও প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, হোটেলের অন্দরে লুকিয়ে রয়েছে জঙ্গিরা। ভোরের আলো ফুটতেই ফের তৎপর হয় সেনা। এ দিন রাত পর্যন্ত জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত আরও ২৮ জন। তাঁদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন সোমালিয়ার রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধি ইউসুফ মহম্মদ ইসমাইল বারি-বারি। জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দার শরিক আল শাবাব কাল রাতেই এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। আজ সোমালিয়ার সেনা তরফে জানানো হয়েছে, এ দিন দুপুরের মধ্যেই হোটেলটির দখল নিয়েছে সেনা।
মোগাদিসুর পুলিশকর্তা মহামেদ হোসেন এ দিন বলেন, “হোটেল অভিযান শেষ হয়েছে। পুরো এলাকার দখল নিয়েছে সেনা।” তিনি আরও জানিয়েছেন, গত কাল রাত পর্যন্ত চার জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। এ দিন হোটেলের মধ্যে থেকে আরও কয়েকটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। পাশাপাশি, গত কাল আহত হয়ে যাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন, তাঁদের মধ্যে চার জন এ দিন সকালে মারা গিয়েছেন। এই ঘটনায় মৃতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। তবে কত জন জঙ্গি হোটেলে আক্রমণ চালিয়েছে এবং নিহত ১৯ জনের মধ্যে কত জন জঙ্গি রয়েছে, তা আজ রাত পর্যন্ত স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি প্রশাসন।
সোমালিয়ার শীর্ষ সরকারি আধিকারিক, বিদেশি পর্যটক, সেনাবাহিনীকে নিশানা করে এর আগেও একাধিক বার দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়েছে আল-শাবাব জঙ্গিরা। শুধু সোমালিয়াতেই নয়, কেনিয়া-সহ পড়শি দেশগুলিতেও আল শাবাব জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ এবং আক্রমণের ঘটনা নতুন নয়। এমনকী, মোগাদিসুকে কেন্দ্র করে সোমালিয়ার বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ, আত্মঘাতী হামলা চালায় এই জঙ্গিগোষ্ঠী। মোগাদিসুর হোটেলে হামলার দায় স্বীকার করে আল শাবাব দাবি করেছে, ওই হোটেলের অতিথিদের বেশিরভাগই সরকারের গুপ্তচর ছিল। সেই জন্যইহোটেলে হামলা চালিয়েছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy