Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

খালেদা জমানার আর এক মন্ত্রীর ফাঁসি বহাল

মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা চালানোর দায়ে বিএনপি জমানার আর এক মন্ত্রীর ফাঁসির সাজা বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর প্রাণদণ্ডের রায় দিয়েছিল ২০১৩ সালে। এর বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ এই নেতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢাকা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৫ ০২:৫০
Share: Save:

মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা চালানোর দায়ে বিএনপি জমানার আর এক মন্ত্রীর ফাঁসির সাজা বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর প্রাণদণ্ডের রায় দিয়েছিল ২০১৩ সালে। এর বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ এই নেতা। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্রকুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বিশেষ প্যানেল আজ ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।

যুদ্ধাপরাধী হিসেবে খালেদা জমানার আর এক মন্ত্রী, জামাত-ই-ইসলামি নেতা আলি আহসান মহম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি হয়েছে আগেই। সালাউদ্দিনই প্রথম বিএনপি নেতা, ৭১-এর যুদ্ধাপরাধের দায়ে যাঁর ফাঁসি হতে চলেছে। এ দিনের রায়ে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি গণজাগরণ মঞ্চ ও আওয়ামি লিগের সমর্থকেরা। আজ সকাল থেকেই তাঁরা বড় সংখ্যায় জড়ো হয়েছিলেন শাহবাগ স্কোয়ারে। রায় শোনার পরই তারা বিজয় মিছিল করেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামের প্রখ্যাত কবিরাজি ওষুধ সংস্থার মালিক নূতনচন্দ্র সিংহকে হত্যা, দু’-দু’টি গণহত্যায় মদত এবং হাটহাজারির আওয়ামি লিগ নেতা ও তাঁর ছেলেকে অপহরণ করে খুন করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে। নিহত নূতনচন্দ্রের ছেলে প্রফুল্লরঞ্জন সিংহ এ দিন শীর্ষ আদালতে হাজির ছিলেন। রায় শুনে স্বস্তি প্রকাশ করেন তিনি। সালাউদ্দিনের মৃত্যুদণ্ড দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান। অ্যাটর্নি জেনারেল মেহবুবে আলম বলেন, ‘‘এই রায়ে আশা পূরণ হয়েছে।’’

সালাউদ্দিন কাদেরের বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী ছিলেন পাকিস্তানি সেনার আশ্রয়দাতা। তাঁর বিরুদ্ধেও অসংখ্য খুনের অভিযোগ ছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে মুক্তিবাহিনীর হাতে ধরা পড়েন ফজলুল। দেশ ছাড়েন সালাউদ্দিন। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর তৎকালীন শাসক জিয়াউর রহমানের ছত্রচ্ছায়ায় দেশে ফিরে ফের রাজনীতিতে নামেন সালাউদ্দিন। বেশ ক’বার চট্টগ্রাম থেকেই সাংসদ নির্বাচিত হন।

পাঁচ বছর আগে বিজয় দিবসের ভোরে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে তৎকালীন সাংসদ সালাউদ্দিনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সুপ্রিম কোর্ট আজ যখন রায় ঘোষণা করে, সালাউদ্দিন তখন গাজিপুরের কাশিমপুর জেলে। সুপ্রিম কোর্টের রায় ট্রাইব্যুনালে পৌঁছলে তারা ফাঁসির পরোয়ানা জারি করবে। এর পরে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানাতে পারবেন ৬৬ বছর বয়সি এই বিএনপি নেতা। প্রাণভিক্ষার আর্জি জানাতে পারবেন রাষ্ট্রপতির কাছে। তবে এ দিনের রায়কে বড় জয় হিসেবেই দেখছে শাহবাগের তরুণ প্রজন্ম। এবং বাংলাদেশের সেই সব প্রবীণ, মুক্তিযুদ্ধের সময় যাঁরা দেখেছেন সালাউদ্দিনদের নৃশংসতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Salauddin Quader Chowdhury bangladesh supreme court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE