জঙ্গিহানায় কাবুলের বিলাসবহুল ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে মৃত্যু হল মোট বাইশ জনের। ছবি: এএফপি।
নিরাপত্তার কথা ভেবেই অফিসের গেস্ট হাউস ছেড়ে পাঁচতারা হোটেলে উঠেছিলেন কেরলের এর্নাকুলামের বাসিন্দা ৪৩ বছরের আকাশ রাজ। আর সেটাই কাল হল। রাত না পোহাতেই জঙ্গিহানায় কাবুলের বিলাসবহুল ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে মৃত্যু হল মোট বাইশ জনের। বরাত জোরে আকাশ বেঁচে গেলেও পিছু ছাড়ছে না ভয়াবহ সেই অভিজ্ঞতা।
কাবুল আকাশের কাছে কোনও নতুন শহর নয়। এর আগেও চাকরি সূত্রে একানে থেকেছেন তিনি। তিন বছর পরে গত মাসেই ফের আফগানিস্তানের একটি বিমানসংস্থায় যোগ দিয়েছিলেন আকাশ। এর আগে প্রতিবারই অফিসের গেস্ট হাউসে থাকলেও এ বার নিরাপত্তার কারণে কাবুলের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে থাকার কথা ভাবেন তিনি। সেই মতোই শনিবার ওই পাঁচতারা হোটেলের ছ’তলায় ৪২০ নম্বর ঘরে চেক-ইন করেন আকাশ। ওই হোটেলেরই দ্বিতীয় তলায় ওই বিমান সংস্থারই আরও বেশ কয়েক জন কর্মী ছিলেন।
আকাশ জানাচ্ছেন, সেদিন রাত আটটা নাগাদ আকাশ ও তাঁর এক আফগান সহকর্মী নিজেদের ঘরে রাতের খাবার খান। খাওয়া দাওয়ার পরে ঘরে বসে টিভি দেখছিলেন। হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে চমকে ওঠেন। আকাশের কথায়, ভাবতে পারিনি, হোটেলের থেকেই ওই শব্দ আসছে। নিজেকে নিজেই প্রমোদ দেন, এটা কাবুল। গুলিগোলা বন্দুক এখানে রোজকার ঘটনা।
আকাশ প্রাণে বেঁচে ফিরলেও ওই হোটেলে জঙ্গি হামলার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২২-এ। গতকাল প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, হামলায় মারা গিয়েছেন ১৯ জন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ৬ বিদেশিও। এ দিন আফগান স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াহিদ মজরোহ জানান, এখনও পর্যন্ত ২২টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি দেহ এমন ভাবে পুড়ে গিয়েছে যে চেনা পর্যন্ত যাচ্ছে না। নিহতদের মধ্যে ৬ জন ইউক্রেনের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।
এখনও কয়েক জন জঙ্গি হোটেলের ভিতরে লুকিয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রবিবার ১২ ঘণ্টার চেষ্টায় হোটেলটিকে জঙ্গিমুক্ত করে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী। খতম করা হয় ৬ জঙ্গিকেই। হামলার দায় নিয়েছিল তালিবান।
কী ভাবে নিরাপত্তা বেষ্টনী টপকে জঙ্গিরা হোটেলে ঢুকল তা নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। হোটেল সূত্রের খবর, তিন সপ্তাহ আগেই একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার হাতে হোটেলের ভার তুলে দেওয়া হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy