Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
International News

জিম্বাবোয়েতে সেনা অভ্যুত্থানের পিছনেও কি চিনের হাত?

জিম্বাবোয়েতে সেনা অভ্যুত্থানের প্রাক মুহূর্তে গত সপ্তাহে সে দেশের সেনাধ্যক্ষ জেনারেল কনস্ট্যানটাইন চিওয়েঙ্গার বেজিং সফরকে কেন্দ্র করে এই সন্দেহের জন্ম হয়েছে।

চিনা সেনাবাহিনীর ‘গার্ড অফ অনার’ নিচ্ছেন জিম্বাবোয়ের সফররত সেনাধ্যক্ষ জেনারেল চিওয়েঙ্গা। গত সপ্তাহে, বেজিংয়ে।

চিনা সেনাবাহিনীর ‘গার্ড অফ অনার’ নিচ্ছেন জিম্বাবোয়ের সফররত সেনাধ্যক্ষ জেনারেল চিওয়েঙ্গা। গত সপ্তাহে, বেজিংয়ে।

সংবাদ সংস্থা
বেজিং শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৭ ১৫:৩১
Share: Save:

জিম্বাবোয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের অপসারণে কি হাত রয়েছে চিনের?

অভ্যুত্থানের ‘গন্ধ’ কি আগেই নাকে এসেছিল বেজিংয়ের?

জিম্বাবোয়েতে সেনা অভ্যুত্থানের প্রাক মুহূর্তে গত সপ্তাহে সে দেশের সেনাধ্যক্ষ জেনারেল কনস্ট্যানটাইন চিওয়েঙ্গার বেজিং সফরকে কেন্দ্র করে এই সন্দেহের জন্ম হয়েছে।

এমন একটি জল্পনার পালে বাতাস দিয়েছে চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গত ১০ নভেম্বরের একটি মাইক্রো-ব্লগ। সেই ব্লগে দেওয়া একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, মধ্য বেজিংয়ে মন্ত্রকে গিয়ে চিনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী চ্যাং ওয়ানচানের সঙ্গে হাসি মুখে করমর্দন করছেন জিম্বাবোয়ের সেনাধ্যক্ষ জেনারেল চিওয়েঙ্গা। আরেকটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, প্রতিনিধিদের নিয়ে দু’জনে একটি কনফারেন্স টেবিলে বসে রয়েছেন।

আরও পড়ুন- ভারত-চিন সীমান্ত বৈঠক হল, ডোকলামের পর এই প্রথম

আরও পড়ুন- জার্মানির আকাশে রহস্যময় আলো! দেখুন ভিডিও​

বেজিংয়ের সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর, গত সপ্তাহের ওই সফরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওয়ানচানের সঙ্গে তো বটেই চিনের প্রবীণ সেনা-কর্তাদের সঙ্গেও আলাদা আলাদা ভাবে বৈঠকে বসেছিলেন জিম্বাবোয়ের সেনাধ্যক্ষ জেনারেল চিওয়েঙ্গা। তার পরপরই জিম্বাবোয়েতে সেনা অভ্যুত্থান হওয়ায় অনেকেরই সন্দেহ, বেজিং সে খবর আগেই জানত। আর জেনারেল চিওয়েঙ্গাও এ ব্যাপারে বেজিংয়ের কাছ থেকে ‘সবুজ সঙ্কেত’ পেয়ে গিয়েছিলেন।

জিম্বাবোয়ে চিনের ‘শত্রু’ দেশ নয়। সাতের দশকের মাঝামাঝি থেকেই জিম্বাবোয়ের সঙ্গে দহরম মহরম চিনের। সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গ শাসনের অবসানে জিম্বাবোয়ের মানুষের সশস্ত্র সংগ্রাম চিনের সহযোগিতা ছাড়া সফল হত না কখনওই। তার পর থেকে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উত্তরোত্তর জোরদার হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মুগাবের সরকারের বিরুদ্ধে পশ্চিমী দেশগুলি একজোট হয়ে অর্থনৈতিক অবরোধ জারি করলে জিম্বাবোয়ের পাশে দাঁড়িয়েছিল বেজিং।

অর্থনীতির ক্ষেত্রেও বরাবর জিম্বাবোয়ের বন্ধু হয়েছে চিন। জিম্বাবোয়ের অটোমোবাইল শিল্প তো বটেই, বিদ্যুৎকেন্দ্র, তামাক ও হিরে শিল্পেও সরকারি ও বেসরকারি স্তরে প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে চিনের।

সাউথ আফ্রিকান ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের বিদেশ নীতির গবেষক কোবাস ফন স্তাদেন বলেছেন, ‘‘অভ্যুত্থানের ঠিক আগে বেজিংয়ের ওই সফর যথেষ্টই ইঙ্গিতবাহী। তবে সেই সফরে কী হয়েছিল, তা কেই বা জানেন!’’

চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে জিম্বাবোয়ের সেনাধ্যক্ষের বৈঠককে অবশ্য বেজিংয়ের তরফে ‘রুটিন’ ও ‘স্বাভাবিক পারস্পরিক প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত আলোচনা’ বলা হয়েছে। জিম্বাবোয়ের অভ্যুত্থানের পিছনে কলকাঠি নাড়ার অভিযোগও বেজিংয়ের তরফে তুড়ি মেরেই উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

বেজিং নর্মাল ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পাবলিক পলিসির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ওয়াঙ শিনশং বলছেন, ‘‘জিম্বাবোয়ের সঙ্গে বরাবরই আমাদের (চিন) কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক খুব ভাল। সে ক্ষেত্রে কেনই বা চিন চাইবে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হোক জিম্বাবোয়েতে, কেনই বা চাইবে জিম্বাবোয়েতে রাজনৈতিক ডামাডোল সৃষ্টি করতে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE