প্রতিবাদ: দক্ষিণপন্থী শ্বেতাঙ্গদের মিছিলের পরে বিদ্বেষ দূর করার আশায় প্রার্থনা এক আফ্রিকান গির্জায়। রবিবার ভার্জিনিয়ার শার্লটসভিলে। এএফপি
এক রাতের মধ্যে তিন জনের মৃত্যুতে ভার্জিনিয়ায় শ্বেতাঙ্গদের প্রতিবাদ মিছিল ঘিরে উত্তেজনার পারদ আরও চ়ড়ল। শার্লটসভিলে ‘ঐক্যবদ্ধ দক্ষিণপন্থীদের’ মিছিলের প্রতিবাদে পাল্টা শান্তিমিছিল বার করে বিরোধীরাও। অভিযোগ, সেই জমায়েতে গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়েন ওহায়োর বাসিন্দা জেমস ফিল্ড নামে বছর কুড়ির এক শ্বেতাঙ্গ। গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় ৩২ বছরের মহিলার। আহত অন্তত ১৯। পাঁচ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ওই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার তদন্তে নেমেছে এফবিআই। জেমসের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
গত কাল হেলিকপ্টার ভেঙে ভার্জিনিয়ার দুই পুলিশ কর্মীর মৃত্যুর ঘটনারও তদন্ত শুরু করেছেন গোয়েন্দারা। পুলিশ মনে করছে, এই ঘটনার সঙ্গে মিছিলের যোগ রয়েছে। শার্লটসভিলের পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ির ধাক্কায় আহতদের বাইরেও মিছিল ঘিরে অশান্তিতে শহরের নানা প্রান্তে জখম হয়েছেন ১৫ জন।
আরও পড়ুন: যুদ্ধাপরাধী আসাদ, দাবি আইনজীবীর
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের পদে বসার পর থেকেই মার্কিন মুলুক জুড়ে এই ধরনের ‘দক্ষিণপন্থীদের’ দাপট বেড়েছে। ভার্জিনিয়ার ঘটনা নিয়ে গোড়ার দিকে কোনও মন্তব্য না করায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন ট্রাম্প। প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সাময়িক বিরতি নিয়ে বর্তমানে নিউ জার্সিতে ব্যক্তিগত গল্ফ ক্লাবে ছুটি কাটাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট। তবে তার মধ্যেও টুইটারে নানা বিষয় নিয়ে মতামত জানিয়ে গিয়েছেন তিনি। অথচ শ্বেতাঙ্গদের মিছিলে সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেও সাড়া পাওয়া যায়নি তাঁর।
ভার্জিনিয়ায় জরুরি অবস্থা জারি হওয়ার খবর কানে পৌঁছনো সত্ত্বেও অনেকটা সময় চুপ করেই ছিলেন তিনি। শেষমেশ অবশ্য বাধ্য হয়ে এ ব্যাপারে রবিবার প্রথম টুইট করেন তিনি, ‘‘আমরা একজোট হয়ে এই বিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমেরিকায় এই রকম হিংসার কোনও জায়গা নেই।’’ ট্রাম্পের দ্বিতীয় টুইট, ‘‘নানা পক্ষের এই বিদ্বেষ, হিংসা ও ধর্মান্ধতার চরম নিন্দা করছি।’’ সমালোচকদের বক্তব্য, ট্রাম্পের এই প্রতিক্রিয়া মোটেই তেমন ‘কড়া’ নয়। ‘নানা পক্ষের’ ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে কৌশলে দক্ষিণপন্থীদের দোষমুক্ত রাখতে চেয়েছেন ট্রাম্প।
অশান্তির সূত্রপাত শার্লটসভিল থেকে মার্কিন গৃহযুদ্ধের সময়ের কনফেডারেট জেনারেল রবার্ট ই লি-র একটি মূর্তি সরিয়ে দেওয়া নিয়ে। শুক্রবার এর প্রতিবাদে পথে নামেন অতি দক্ষিণপন্থীরা। এ দিন সকাল থেকেই লি-র মূর্তির তলায় জমায়েত করেন বিক্ষোভকারীরা। কেউ হাতে রাইফেল নিয়ে। কারও গায়ে কালো শার্ট-পায়ে বুট। ‘দেশের রক্ত–দেশের মাটি’, ‘এক দেশ, এক মানুষ, অভিবাসন বন্ধ হোক’, এই সব স্লোগান দিতে দিতে এগোতে থাকেন তাঁরা। এর প্রতিবাদে পাল্টা শান্তিমিছিল করে বিরোধীরাও। যদিও কিছু ক্ষণের মধ্যেই সংঘর্ষ বাধে দু’পক্ষের মধ্যে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে প্রশাসন। কিন্তু তা সত্ত্বেও থামানো যাচ্ছে না হিংসা। আপাত শান্ত শার্লটসভিলের রাস্তায় এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে সশস্ত্র পুলিশ, মাথার উপর চক্কর কাটছে নজরদারি হেলিকপ্টার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy