সকাল এগারোটা। ‘সুপার ইউ’ নামের সুপারমার্কেটে তখন কেনাকাটার ব্যস্ততা। হঠাৎই সেখানে চিৎকার করতে করতে হাজির হয় এক বন্দুকবাজ। কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়েই সে বলতে শুরু করে, ‘‘তোমাদের সকলকে মারব।’’ আতঙ্কিত ক্রেতারা তত ক্ষণে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছেন। শুরু হয়ে যায় হুড়োহুড়ি। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই ভিতরে ঢুকে সেখানে উপস্থিত বেশ কয়েক জনকে পণবন্দি বানিয়ে ফেলে সে। আজ সকালে দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের ছোট্ট শহর ত্রেবের ওই সুপারমার্কেটে বন্দুকবাজের হামলায় মারা গিয়েছেন দু’জন। কয়েক ঘণ্টার অভিযান শেষে ওই বন্দুকবাজকে মেরে ফেলে ফরাসি পুলিশের বিশেষ বাহিনী। বন্দুকবাজের হামলায় বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ত্রেবের মেয়র।
২০১৫ থেকে ’১৭ সালের মধ্যে ফ্রান্সের নানা প্রান্তে একের পর এক জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছে প্রায় আড়াইশো মানুষের। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হামলার দায় নিয়েছে মুসলিম জঙ্গি সংগঠন আইএস। আজকের ঘটনাতেও সেই আইএস যোগই দেখছে ফরাসি পুলিশ-প্রশাসন। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ ক্ষমতায় আসার পরে এই প্রথম এত বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটল ফ্রান্সে।
মধ্য তিরিশের ওই জঙ্গি আদতে মরক্কোর বাসিন্দা। নিজেকে সে আইএসের সদস্য বলেই দাবি করে। সিরিয়া আইএস বিরোধী অভিযানের প্রতিশোধ নিতেই সে এমন কাণ্ড করছে বলেও হামলার সময় চিৎকার করে জানাতে থাকে। নিহত জঙ্গির নাম প্রকাশ না করলেও সে অনেক দিন ধরেই তার কট্টর মৌলবাদী ভাবধারার জন্য ফরাসি পুলিশের নজরে ছিল বলে জানা গিয়েছে। সুপারমার্কেটে ক্রেতা আর দোকানদারদের বন্দি বানিয়ে রাখার সময় ২০১৫ সালের নভেম্বরে প্যারিস হামলার অন্যতম মূল অভিযুক্ত সালাহ আবদেসলামের মুক্তির দাবিও জানাতে থাকে সে। হামলার সময় শুধু বন্দুক নয়, গ্রেনেড আর ছুরিও সঙ্গে ছিল ওই জঙ্গির।
তবে এই হামলাই শুধু নয়। পুলিশ জানাচ্ছে, ওই সুপারমার্কেটে হামলার আগে আরও দুই জায়গায় হামলা চালিয়েছিল ওই জঙ্গি। ত্রেব থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে কারকাসঁয়ে প্রথমে একটি গাড়ি ছিনতাই করে সে। ওই গা়ড়ির এক যাত্রীকে খুন করে আর চালককে আহত করে গাড়িটি নিয়ে সেখান থেকে পালায় ওই জঙ্গি। রাস্তায় পুলিশের একটি দলের উপরও হামলা চালায় সে। তার গুলিতে আহত হন এক পুলিশ অফিসার। তার পর ছিনতাই করা সেই গা়ড়িতেই সুপারমার্কেটে হামলা চালাতে রওনা হয় ওই জঙ্গি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy