আফগান পুলিশের সেই লেফটেন্যান্ট সৈয়দ বাসাম পাচা।
দূর থেকে তার চলাফেরা দেখেই সন্দেহ হয়েছিল আফগান পুলিশের তরুণ লেফটেন্যান্টের। আন্দাজ করেছিলেন, লোকটা সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেওয়ার ফন্দি এঁটেই গুটিগুটি পায়ে গেট পেরিয়ে মাঠের স্টেজটার কাছে এগিয়ে যাচ্ছে। কাবুলের ওই মাঠে তখন একটা রাজনৈতিক সমাবেশ চলছিল। ভিড়ে গিজগিজ করছে মাঠ।
লোকটা একটু কাছে এগিয়ে আসতেই আফগান পুলিশের তরুণ লেফটেন্যান্ট সৈয়দ বাসাম পাচা বুঝতে পেরেছিলেন লোকটা আদতে সুইসাইড বম্বার। আত্মঘাতী জঙ্গি। যার জামার নীচে বুকে জড়ানো রয়েছে জিলাটিন স্টিকের ভেস্ট। মাঠের যেখানটায় ভিড় রাজনৈতিক নেতাদের, সেই দিক লক্ষ্য করে জোর কদমে হাঁটতে শুরু করল লোকটা।
ভেস্টের সুইচ টিপে লোকটা বিস্ফোরণ ঘটানোর আগেই ছুটে তার হাতটা ধরে ফেলেছিলেন পাচা। ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণের হাত থেকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন জনসভায় আসা মানুষদের।
আরও পড়ুন- জিম্বাবোয়েতে সেনা অভ্যুত্থানের পিছনেও কি চিনের হাত?
আরও পড়ুন- ভারত-চিন সীমান্ত বৈঠক হল, ডোকলামের পর এই প্রথম
কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। তত ক্ষণে সুইচটা টিপে দিয়েছে ওই আত্মঘাতী জঙ্গি। আর তার পরেই ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ। যাতে এক লহমায় ওই আত্মঘাতী জঙ্গির সঙ্গে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় আফগান পুলিশের তরুণ লেফটেন্যান্ট সৈয়দ বাসাম পাচার দেহও। বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ১৪ জন। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন পাচা সহ ৭ পুলিশ অফিসার ও জনসভায় আসা ৬ জন।
আফগান পুলিশের মুখপাত্র বাসির মুজাহিদ মার্কিন সংবাদপত্র ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’কে বলেছেন, ‘‘অন্যের জীবনের জন্য যাঁরা নিজের জীবনকে তুচ্ছ ভাবতে পারেন আর এক লহমায় ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন অনিবার্য মৃত্যুর মুখে, তিনি সেই বিরলতমদেরই এক জন লেফটেন্যান্ট সৈয়দ বাসাম পাচা। উনি হিরো। উনি না থাকলে সে দিন আরও মানুষ মারা যেতেন ওই জনসভায়। মাঠের যেখানটায় ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি, সে দিকেই এগোচ্ছিল আত্মঘাতী জঙ্গিটি। পাচাই সাহস দেখিয়ে নিজের জীবন তুচ্ছ করে তার পথ রুখে দিয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy