Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Russia

শুধু করিনা স্কুল যাবে, তাই দিনে দু’বার থামে ট্রেন!

মস্কো শহরের এক কোণায় পাকোন্ডা। তারই সুদূর দক্ষিণের গ্রাম মুরমাঙ্ক। বছরের অর্ধেক সময় ঢেকে থাকে বরফে। তাই বেশির ভাগ বাসিন্দাই গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে হয়তো জনা পঞ্চাশেক মানুষ থাকেন এখন।

অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।

অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৬:০৪
Share: Save:

মস্কো শহরের এক কোণায় পাকোন্ডা। তারই সুদূর দক্ষিণের গ্রাম মুরমাঙ্ক। বছরের অর্ধেক সময় ঢেকে থাকে বরফে। তাই বেশির ভাগ বাসিন্দাই গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে হয়তো জনা পঞ্চাশেক মানুষ থাকেন এখন।

ওই গ্রাম থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটি। সেখানেই নানা কাজ করে দিন গুজরান করেন মুরমাঙ্কের লোকজন। তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন কোজলোভা দম্পতি। সঙ্গে একরত্তি কন্যা করিনা। সে-ই এখন পয়াকোন্ডার একমাত্র শিশু! কারণ বাকি পরিবারগুলিতে কোনও শিশু নেই আর।

বিগত এক দশক ধরে গ্রামের নিয়াঝা স্টেশনে শিশুদের পৌঁছে দিয়ে আসেন করিনার ঠাকুমা নাতালিয়া। সেখান থেকে স্কুলে যেত শিশুরা। দিনের শেষে আবার তাদের গ্রামে ফিরিয়ে আনা। রোজ এই কাজের দায়িত্ব সামলে চলেছেন নাতালিয়া। প্রথমে ১৫, থেকে ৮, ৩…এখন পড়ুয়ার সংখ্যা একে এসে ঠেকেছে। কেবল নাতনি করিনা।

আরও পড়ুন: অত খুশি ওদের কখনও দেখিনি, স্মৃতির পাতায় ‘বিটল্‌স’

গ্রাম থেকে এক কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে নিয়াঝা স্টেশন থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ-মুরমাঙ্ক ইলেকট্রিক ট্রেন ধরতেন তারা। গত বছর ১ ডিসেম্বর থেকে নিয়াঝা স্টেশনে আর দাঁড়ায় না বিকেলের ট্রেন। শুধু একটিই ট্রেন এসে থামে রাত ৯টায়। কনকনে ঠান্ডায় নিয়াঝা তখন গভীর ঘুমে। নিজেদের জন্য প্রাইভেট গাড়ির ব্যবস্থা করার সামর্থও নেই কোজলোভা পরিবারের। তবে কি পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে করিনার?

হার মানতে নারাজ করিনার মা দ্বারস্থ হন রেল কর্তৃপক্ষের। শুধু করিনার জন্যই নিয়াঝা স্টেশনে ট্রেন দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি দিন মাত্র দু’টি দূরপাল্লার ট্রেন দাঁড়ায় নিয়াঝায়। সকালের ট্রেনে ঠাকুমার হাত ধরে স্কুলে যায় করিনা, ফিরে আসে বিকেলের ট্রেনে।

আরও পড়ুন: পর্নস্টারকে দেওয়া অর্থ নিয়ে ট্রাম্প অস্বস্তিতেই

কখনও ভাল স্কুলের অভাব, কখনও অর্থের অভাব। নানা প্রতিকূলতার মুখে পড়ে মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার উদাহরণ পাওয়া যায় পৃথিবী জুড়ে। এর মাঝেই রাশিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের এই পরিবারই উদাহরণ—ইচ্ছে যদি থাকে, উপায়ও হয় তা হলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Russia School Train
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE