বিশেষ ছ’টি মুসলিম দেশে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা তো আগেই ছিল। এ বার নজরে পশ্চিম এশিয়া এবং উত্তর আফ্রিকা মিলিয়ে মোট ১০টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ট্রাম্প প্রশাসনের কোপ পড়েছে এই সব বিমানবন্দর থেকে আমেরিকার উদ্দেশে রওনা দেওয়া বিমানের উপরে। যার মধ্যে রয়েছে দোহা এবং দুবাইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও!
মার্কিন প্রশাসনের নির্দেশ, সংশ্লিষ্ট দশটি বিমানবন্দর থেকে আমেরিকার উদ্দেশে যাত্রা করলে সেলফোন বাদে অন্য কোনও ইলেকট্রনিক গ্যাজেট হাত-ব্যাগে নিয়ে ওঠা যাবে না। সেগুলি যে ব্যাগে রাখা হবে, তা তল্লাশির পরে চলে যাবে বিমানের পেটে। জঙ্গি হানার আশঙ্কা থেকেই এমন পদক্ষেপ— মঙ্গলবার এইটুকুর বেশি কিছু জানায়নি ট্রাম্প প্রশাসন। এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে শুক্রবার পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। আশ্চর্যজনক ভাবে মার্কিন প্রশাসনের দাবি, আমেরিকায় ঢোকা নিয়ে ছ’টি মুসলিম দেশের উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, তার সঙ্গে এই নিষেধাজ্ঞার কোনও সম্পর্ক নেই!
আমেরিকার দেখাদেখি এই নিষেধাজ্ঞা জারির রাস্তায় হেঁটেছে ব্রিটেনও। ব্রিটিশ প্রশাসন সূত্রে খবর, তারাও আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ার ছ’টি মুসলিমপ্রধান দেশ থেকে গ্যাজেট নিয়ে ব্রিটেনে ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে।
আমেরিকায় ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস)-এর তরফে জানানো হয়েছে, যে কোনও ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, ডিভিডি প্লেয়ার, ক্যামেরা, প্রিন্টার, কিন্ডল — এই সব কিছু অর্থাৎ সেলফোনের তুলনায় বড় যে কোনও বৈদ্যুতিন গ্যাজেট হাত-ব্যাগে নিয়ে আমেরিকাগামী বিমানে ওঠা যাবে না। ছাড় রয়েছে কিছু মেডিক্যাল সরঞ্জামের ক্ষেত্রে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় যে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলি রয়েছে, সেগুলি হচ্ছে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আবু ধাবি ও দুবাই, মিশরের কায়রো, জর্ডনের আম্মান, কুয়েতের কুয়েত সিটি, মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কা, কাতারের দোহা, সৌদি আরবের রিয়াধ ও জেড্ডা, তুরস্কের ইস্তানবুল। অর্থাৎ ফের মুসলিমপ্রধান দেশের উপরেই চাপছে এই নিষেধাজ্ঞা।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প টাওয়ারে আড়িপাতার অভিযোগ ভিত্তিহীন, মানলেন দুই কর্তা
যাতায়াতে নিষেধের সঙ্গে এই নতুন নিষেধাজ্ঞার সম্পর্ক নেই বলে আলাদা করে দাবিই বা করা হচ্ছে কেন? প্রশাসনের তরফে এর স্পষ্ট জবাব মেলেনি। যদিও প্রাথমিক ভাবে যে সাতটি মুসলিম দেশের উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপে, তার মধ্যে মিশর, সৌদি আরবের মতো দেশ ছিল না। তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এ বার তালিকায় জুড়ল এই দুই দেশও।
এই নির্দেশের ফলে মোট ন’টি বিমানসংস্থার উপরে প্রভাব পড়বে। রয়্যাল জর্ডনিয়ান এয়ারলাইন্স, ইজিপ্ট এয়ার, টার্কিশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এয়ারলাইন্স, কুয়েত এয়ারওয়েজ, রয়্যাল এয়ার মারোক, কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস এবং ইতিহাদ এয়ারওয়েজ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন মার্কিন অফিসার জানিয়েছেন, কিছু সপ্তাহ আগেই উড়ো হুমকি তাদের নজরে এসেছে। তার জেরেই এমন পদক্ষেপ। ডিএইচএস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, জঙ্গিরা মূলত এ ধরনের ভোগ্যপণ্যের দিকেই নজর রাখে যার মাধ্যমে সহজে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা পাচার করা যায়। দিন দিন এ ব্যাপারে অত্যাধুনিক সব পন্থা খুঁজে বার করছে তারা। তাই এ বার কোপ গ্যাজেটেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy