Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আইএস মুক্ত সিরিয়ার রাকা, মারাউইতেও এক ছবি

বিশ্বের দু’প্রান্তের এই দুই খবর আইএসকে কোণঠাসা করার পক্ষে যথেষ্ট বলে মনে করছেন অনেকে।

রাকা মুক্ত করার পর সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের উল্লাস। ছবি: রয়টার্স।

রাকা মুক্ত করার পর সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সের উল্লাস। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
দামাস্কাস ও ম্যানিলা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩০
Share: Save:

একটা লড়াই শুরু হয়েছিল তিন বছর আগে। অন্যটা মাস পাঁচেক আগে। ২০১৪ সালে সিরিয়ার রাকা দখল করে সেখানে নিজেদের প্রাদেশিক রাজধানী স্থাপনের ঘোষণা করেছিল ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস। আর চলতি বছরের গোড়ায় দক্ষিণ ফিলিপিন্সের মারাউই শহরে স্থানীয় মাউতে জঙ্গিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজেদের শাসন কায়েম করেছিল আইএস। দুই শহর থেকেই জঙ্গিদের হটানোর লড়াই চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। আজ একইসঙ্গে এই দু’জায়গাকেই আইএস মুক্ত বলে ঘোষণা করেছে সিরিয়া আর ফিলিপিন্স সরকার। তবে রাকায় আইএসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শেষ হলেও মারাউইতে এখনও অভিযান চালাচ্ছে সেনা। যদিও ফিলিপিন্স সরকার জানিয়েছে, দেশের দক্ষিণ ভাগের মিন্দানাও দ্বীপের ওই শহর পুরোপুরি ভাবে আইএস দখলমুক্ত ঘোষণা শুধু সময়ের অপেক্ষা।

বিশ্বের দু’প্রান্তের এই দুই খবর আইএসকে কোণঠাসা করার পক্ষে যথেষ্ট বলে মনে করছেন অনেকে।

‘সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স’ (এসডিএফ)-এর মুখপাত্র তালাল সেলো আজ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কুর্দ, আরব আর আমেরিকার জোট বাহিনী ছাড়া এখন আর কারও অস্তিত্ব নেই রাকায়। তাঁর কথায়, ‘‘রাকায় সব শেষ। আমাদে বাহিনীর দখলে এখন গোটা শহর।’’

সিরিয়া সরকারের সূত্র বলছে, রাকা শহরে আইএসের শেষ দুই শক্ত ঘাঁটি ছিল মিউনিসিপ্যাল স্টে়ডিয়াম আর জাতীয় হাসপাতাল। তার মধ্যে শুধু হাসপাতালেই ৩০০ আইএস লুকিয়ে ছিল। শেষ কয়েক মাসে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের কিছু পরিবারও ঠাঁই নিয়েছিল ওই হাসপাতালে। স্থানীয় উপজাতি নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার পরে সেখান থেকে বিদ্রোহীদের সরিয়ে আনে সিরিয়া সরকার। তার পর গত কয়েক দিন ধরে ওই হাসপাতালেই চলছিল জঙ্গি দমন অভিযান। সেলো জানাচ্ছেন, জোট বাহিনীর সর্বশেষ অভিযানে ২২ জন জঙ্গির মৃত্যু হয়। আর তার পরই রাস্তায় উৎসব পালনে মেতেছেন এসডিএফ বাহিনীর সদস্যরা। সেনা ট্যাঙ্কারে সবুজ-হলুদ পতাকা উড়িয়ে জয়ের স্বাদ নিতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। আসাদ সরকার আজ জানিয়েছে, রাকায় এখন ‘ক্লিন আপ অপারেশন’ চলছে। কোনও স্লিপার সেল বা মাটিতে পোঁতা মাইনের খোঁজ চলছে। খুব ছোট কোনও জায়গায় যদি এক-দু’জন জঙ্গি লুকিয়েও থাকে, তাদের সেখান থেকে বার করে নিকেশ করার জন্য এখন শহরের আনাচকানাচ তল্লাশি চালাচ্ছে বাহিনী।

প্রায় একই ছবি ফিলিপিন্সের মারাউইতেও। স্থানীয় মাউতে জঙ্গিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শহরের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর গত পাঁচ মাস অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছে আইএস জঙ্গিরা। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কাল পর্যন্ত মোট ১৭০০ পণবন্দিকে মুক্ত করেছে দেশের সেনা। জঙ্গি দমন অভিযানে মারা গিয়েছেন সেনা বাহিনীর ১৬২ জন সদস্য। আর সেনা অভিযানে মৃত্যু হয়েছে আটশোরও বেশি জঙ্গির।

ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতের্তে আজ গোটা মারাউইকেই আইএস মুক্ত বলে ঘোষণা করেছেন। যদিও এই শহর পুরোপুরি জঙ্গি মুক্ত বলতে এখনই রাজি নন ‘আর্মড ফোর্স ফিলিপিন্স’ (এএফপি)-এর মুখপাত্র মেজর জেনারেল রেস্তিতুতো পাডিল্লা। তাঁর কথায়, ‘‘এখনও ২০ জনকে পবন্দি করে রেখেছে জঙ্গিরা। তবে তারা সংখ্যায় ১৫-২০ জনের বেশি নয়। আমাদের কাজ এখন ওদের কোণঠাসা করে গোটা শহর অতি দ্রুত জঙ্গিমুক্ত ঘোষণা করা।’’ দুতের্তের কথায়, ‘‘সেটা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Syria IS Raqqa সিরিয়া আইএস
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE