Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

পাকিস্তানকে সামরিক সাহায্য নয়: পেন্টাগন

শুক্রবার মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জিম ম্যাটিস মার্কিন কংগ্রেসকে জানিয়েছেন, হক্কানি জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করেনি পাকিস্তান। তার পরেই পেন্টাগন সরাসরি ঘোষণা করে, এ বছর ইসলামাবাদকে আর কোনও সামরিক সাহায্য দেওয়া হবে না।

ওয়াশিংটন
সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৭ ০৪:৩৪
Share: Save:

পাকিস্তানকে অর্থ সাহায্য দেওয়ার বিষয়ে কঠোর শর্ত চাপানোর পক্ষে কালই ভোট দিয়েছিল মার্কিন কংগ্রেসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্যানেল। শুক্রবার মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জিম ম্যাটিস মার্কিন কংগ্রেসকে জানিয়েছেন, হক্কানি জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করেনি পাকিস্তান। তার পরেই পেন্টাগন সরাসরি ঘোষণা করে, এ বছর ইসলামাবাদকে আর কোনও সামরিক সাহায্য দেওয়া হবে না।

ট্রাম্প প্রশাসন পাকিস্তানের প্রতি যথেষ্ট কড়া অবস্থান নিতে চাইছে। এই সিদ্ধান্ত তারই ফলশ্রুতি। কিন্তু ম্যাটিসের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিপুল মার্কিন অনুদানের যে ৫ কোটি ডলার সাহায্য বাকি ছিল, তা আর আসবে না ইসলামাবাদের হাতে। কূটনীতিকদের দাবি, তাতে পাক সেনাকে যথেষ্ট চাপে পড়তে হবে। আর ঠিক সেটা করতেই আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত।

ভারতকে ‘নড়বড়ে’ রাখতে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে ইসলামাবাদের স্বার্থ রক্ষা করতে তালিবান, হক্কানি এবং লস্কর ই তইবার মতো জঙ্গি গোষ্ঠী তৈরি করেছে পাকিস্তান— প্রাক্তন এক মার্কিন কূটনীতিকের তেমনটাই দাবি। উইলিয়াম মিলাম নামে ওই কূটনীতিক ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে মার্কিন দূত হিসেবে কাজ করেছেন। মিলামের পাশাপাশি ওবামা প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত প্রাক্তন অধিকর্তা ফিলিপ রেনারেরও মত, পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এই জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে বরাবর মদত এবং সুরক্ষা দিয়ে আসছে।

আরও পড়ুন:

দিল্লিতে চিনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক পাকিস্তানি হাইকমিশনার বাসিতের

প্রাক্তন এক রিপাবলিকান সেনেটরের মন্তব্য, পাকিস্তানকে উত্তর কোরিয়ার মতো ‘দুর্বৃত্ত দেশ’ হিসেবেই দেখা উচিত আমেরিকার। প্রবীণ ওই প্রাক্তন সেনেটর ল্যারি প্রেসলার তাঁর লেখা বই ‘‘নেবার্স ইন আর্মস: অ্যান আমেরিকান সেনেটর্স কোয়েস্ট ফর ডিসআর্মামেন্ট ইন আ নিউক্লিয়ার সাবকন্টিনেন্ট’-এ বলেছেন, ‘‘সন্ত্রাস-প্রশ্নে পাকিস্তান নিজের অবস্থান না পাল্টালে তাদের দেশকেই ‘জঙ্গি রাষ্ট্র’ হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। আমার মতো অনেক বিদেশনীতি বিশেষজ্ঞ এই কথা আগে বলেছেন। ১৯৯২ সালে প্রথম বুশ প্রশাসন সেটা অনেকটা ভেবেও ফেলেছিল।’’

এক সময়ে সাউথ ডাকোটার সেনেটর ল্যারির যুক্তি, ‘‘পাকিস্তানকেও উত্তর কোরিয়ার মতো দেশ হিসেবে দেখা উচিত। পাকিস্তান যে পুরোপুরি ব্যর্থ রাষ্ট্র নয়, তার একমাত্র কারণ চিন এবং আমেরিকা ওদের বিপুল অনুদান দিয়ে এসেছে।’’

মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করা এক রিপোর্টে সম্প্রতি পাকিস্তানকে যথেষ্ট কোণঠাসা করেছে বিদেশ দফতর। সে রিপোর্টে বলা হয়, পাকিস্তান হল এশিয়ার এমন এক দেশ যেখানে জঙ্গিরা লালিত-পালিত হয়। তার পর থেকে মার্কিন প্রশাসনের অনেক প্রাক্তন কূটনীতিক মুখ খুলছেন। বৃহস্পতিবার একটি অনলাইন পোর্টালে মিলাম এবং রেনারের প্রতিক্রিয়া সেই সূত্রেই মিলেছে।

‘দ্য সাইফার ব্রিফ’ নামে ওই পোর্টালে আইএসআই-এর দু’মুখো নীতির সমালোচনা করা হয়েছে। মিলাম সেখানে বলেছেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ আফগানিস্তান নিয়ে কোনও উৎসাহ নেই পাকিস্তানের। কারণ সেখানে তাদের চিরশত্রু ভারতের প্রভাব থাকবে। আফগানিস্তানে স্বার্থ জিইয়ে রাখতে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকেই ‘বিকল্প’ হিসেবে রেখেছে তারা।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, নব্বইয়ের দশকে মাঝামাঝি তালিবান যখন একটু একটু করে তৈরি হচ্ছে, তখন থেকেই পাকিস্তান তাদের পাশে। তালিবানের সঙ্গে মিলে এখন হক্কানি গোষ্ঠীও ভয়ঙ্কর জঙ্গি দলে পরিণত হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE