Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ফের হামলা হলে ভুগবে সারা বিশ্ব, হুমকি পুতিনের

পুতিনের বক্তব্য, ‘‘সিরিয়ার উপরে এর পরে আমেরিকা আর কোনও আঘাত করলে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ভয়ঙ্কর গোলমাল তৈরি হবে। সারা বিশ্বকে ভুগতে হবে তার জন্য।’’

যুদ্ধবিধ্বস্ত: সিরিয়ার দৌমায়। সোমবার। এপি

যুদ্ধবিধ্বস্ত: সিরিয়ার দৌমায়। সোমবার। এপি

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৪৫
Share: Save:

তিনি বলেছিলেন বলেই আর ক’টা দিন সিরিয়ায় থেকে গিয়েছিল মার্কিন বাহিনী। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ রবিবার দাবি করেছেন, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন এখনই সিরিয়া থেকে সেনা সরাবেন না। কারণ দুমায় রাসায়নিক হামলার অভিযোগ ওঠার কয়েক দিন আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, আসাদের দেশ থেকে এ বার মার্কিন বাহিনী সরানোর কথা ভাবছেন তিনি।

যদিও ট্রাম্পের সে ভাবনায় ছেদ পড়ে দুমার হামলার পরেই। পাশাপাশি মাকরঁও তাঁকে সেনা মোতায়েন রাখার আর্জি জানান। ফরাসি সংবাদমাধ্যমের সামনে মাকরঁর বক্তব্য, ‘‘দিন দশেক আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, সিরিয়া থেকে আমেরিকার সেনা এ বার পাততাড়ি গোটাবে, তেমনটাই ইচ্ছে তাঁদের। তখন আমরা ওঁকে বোঝালাম, এখনও সে সময় আসেনি। মার্কিন সেনা রাখার প্রয়োজন আছে।’’ এর সঙ্গে মাকরঁর দাবি, তাঁরা ট্রাম্পকে এটাও বুঝিয়েছিলেন যে, যেখানে রাসায়নিক অস্ত্র ভাণ্ডার রয়েছে বলে সন্দেহ, শুধু সেখানেই হামলা সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

যদিও এই হামলা নিয়ে তৈরি হয়েছে আরও নানা জটিলতা। সিরিয়ার বন্ধু হিসেবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আর এক মিত্র দেশ ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। পুতিনের বক্তব্য, ‘‘সিরিয়ার উপরে এর পরে আমেরিকা আর কোনও আঘাত করলে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ভয়ঙ্কর গোলমাল তৈরি হবে। সারা বিশ্বকে ভুগতে হবে তার জন্য।’’ মার্কিন জোটের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সিরিয়ায় রাজনৈতিক সমাধান খোঁজার লক্ষ্যে বড়সড় ধাক্কা বলে মত পুতিন-রৌহানির। তবে এ দিন ক্রেমলিন জানিয়েছে, এত কিছুর পরেও ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার পক্ষে তারা। ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেস্কভ বলেছেন, ‘‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কিছুটা ক্ষতি হলেও আমাদের আশা, কোনও এক ধরনের আলোচনা ফের শুরু করা যাবে।’’

সিরিয়ার পাশে ইরান এবং রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কও রয়েছে। পশ্চিমি শক্তি তুরস্কের এই ভূমিকা মোটেই ভাল চোখে দেখছে না। মাকরঁ যদিও বলেছিলেন, তুরস্ক রাসায়নিক হামলার নিন্দা করে মার্কিন জোটের হানাকে স্বাগত জানিয়েছে। তাই তুরস্ক এবং রাশিয়ার অবস্থানগত পার্থক্য স্পষ্ট। কিন্তু আজ তুরস্কের বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমরা অন্য ভাবে ভাবতে পারি। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ভিত অনেক শক্ত। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এত সহজে তা ভেঙে দিতে পারবেন না।’’

এত রকম সমীকরণের মধ্যে অবশ্য মুখ বন্ধ রেখেছে ইজরায়েল। একটি মার্কিন দৈনিক দাবি করেছিল, গত ৯ এপ্রিল সিরিয়ার হোমসের কাছে বিমানঘাঁটিতে যে হামলা হয়েছে, তার পিছনে ছিল ইজরায়েল। সিরিয়া এবং রাশিয়াও ওই হামলার জন্য দুষেছিল ইজরায়েলকে। তার পরেই দুমায় রাসায়নিক হামলার অভিযোগ ওঠে। ইজরায়েল ওই হামলার দায় স্বীকারও করেনি, আবার তারা হামলা চালায়নি, এ কথাও বলেনি। ইজরায়েলি অফিসারদের অভিযোগ, হোমসের কাছে ওই বিমানঘাঁটি ব্যবহার করছিল ইরানের সেনা। সিরিয়ার মাটিতে ইরানের এমন উপস্থিতি মেনে নেবে না ইজরায়েল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Vladimir Putin Russia Syria
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE