মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বর্ষপূর্তির দিনেই আমেরিকা জুড়ে নেমে এল ‘অন্ধকার’। আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়ে হোয়াইট হাউজ তো বটেই, স্তব্ধ হয়ে গেল বেশির ভাগ সরকারি অফিস।
শুক্রবার সরকারি খরচ চালানো সংক্রান্ত ‘টেম্পোরারি স্পেন্ডিং’ সেনেটে পেশ করেছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাকলিকান পার্টি। কিন্তু তাতে অনুমোদন দেয়নি ডেমোক্র্যাটরা। ‘টেম্পোরারি স্পেন্ডিং’-এর সঙ্গে জড়িত বিলটি পাশ করার শেষ সময়সীমা ছিল শুক্রবার রাত পর্যন্ত। সেনেটে ওই বিল পাশ করাতে গেলে কমপক্ষে ৬০ ভোটের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বিলের পক্ষে ৫০টি ভোট পড়ে। বিল পাশ না হওয়ায় কার্যত আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়তে হল মার্কিন সরকারকে।
আমেরিকায় অ্যান্টি ডেফিসিয়েন্সি অ্যাক্ট চালু আছে। এই আইনের ফলে এ ধরনের ফান্ডিং বিল পাশ না হওয়ার অর্থ সরকারি তহবিল ফাঁকা হয়ে যাওয়া। এই অবস্থায় সরকারি সংস্থাগুলোর কাজ বন্ধ করতে হতে পারে। সরকারি তহবিলের ঘাটতি মেটাতে স্টপগ্যাপ ডিল করা হয়। যেটা আমেরিকার দুই কক্ষেই পাশ করানোটা জরুরি। হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ থেকে বিলটি পাশ করাতে পারলেও সেনেটে গিয়ে আটকে গেলেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন: মানুষের মনে আশঙ্কা ও বিরক্তি যুগপৎ বাড়িয়েছেন
আট লক্ষ অস্থায়ী কর্মীকে স্থায়ী করতে হবে, এই শর্তেই ফান্ডিং বিলে অনুমোদন দেবে বলেছিল ডেমোক্র্যাটরা। এর সঙ্গে রয়েছে অভিবাসী নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের দাবিও। কিন্তু রিপাবলিকানরা সেই সব শর্ত মানতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের প্রথম বছর, কী পেলাম আর কী হারালাম
তবে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দু’পক্ষই মনে করছে সোমবার অফিস খোলার আগে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হবে। অফিস অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট ডিরেক্টর মিক মুলভ্যানে বলেন, “আমরা আশা করছি চলতি সপ্তাহান্তেএই অচলাবস্থা কেটে যাবে।”
সরকারি তহবিলে ঘাটতি মানেই এই নয় যে, সমস্ত সরকারি সংস্থাগুলোর দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। যদি মার্কিন কংগ্রেস একটা সম্মতিতে না পৌঁছয়, তা হলে ৩৫ লক্ষ কর্মচারির মধ্যে প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষ প্রভাবিত হবেন বলে মত দ্য আমেরিকান ফেডারেশন অব গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ-এর।
এই আর্থিক সঙ্কটের ফলে যে সব সংস্থাগুলো প্রভাবিত হবে সেগুলি হল— অভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিষেবা, সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিষেবা, হাউজিং অ্যান্ড আর্বান ডেভেলপমেন্ট, শিক্ষা, বাণিজ্য, শ্রম এবং পরিবেশ রক্ষা। ফলে নাগরিক এবং ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনীয় নথিপত্র পেতে অসুবিধা হবে। দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্ট বলছে, রোগ নির্ধারণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত সংস্থাগুলোর কাজের উপরেও ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে।
তবে স্কুল, সরকারি পরবিহণ, লাইব্রেরি, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল, বিমানবন্দর, ন্যাশনাল পার্ক, মিউজিয়াম, আদালত, ডাক পরিষেবা, আবগারি, সীমান্ত প্রহরা, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট সংক্রান্ত পরিষেবাগুলো বহাল থাকবে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রকের ১৫ লক্ষ সদস্য এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দফতরের ৪০ হাজার সদস্যের কাজ বহাল থাকবে। তবে এই দুই দফতরের ৭ লক্ষ ৪০ হাজার সদস্যের মধ্যে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ যাঁরা পেন্টাগনে কাজ করেন, তাঁরা সাময়িক ভাবে কর্মহীন হয়ে প়ড়বেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy