প্রকাশ্যেই ছোট ঝুলের জামা ও মিনি স্কার্ট পরে ঘুরছিলেন খুলুদ নামের মডেলটি। শুধু তাতেই থেমে থাকেননি তিনি। গত সপ্তাহের শেষে সেই দৃশ্যাংশ স্ন্যাপচ্যাটেও পোস্ট করেন।
তাঁকে ঘুরতে দেখা গিয়েছে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধের থেকে ৯৬ মাইল উত্তরে, উশাকিরের ঐতিহাসিক দুর্গের রাস্তায়। জায়গাটি নাজদ রাজ্যে। এই রাজ্যটি সৌদি আরবের অন্যতম রক্ষণশীল অঞ্চল বলে পরিচিত। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে এখানেই সুন্নি ইসলামের কট্টরপন্থা ওয়াহাবি প্রথার জন্ম। সৌদি রাজপরিবার ও ধার্মিক প্রতিষ্ঠানগুলি এই কট্টরপন্থাই অনুসরণ করে থাকেন। সেই জায়গায় এই পোশাক পরে মডেলটিকে ঘুরতে দেখে আগুনে ঘি পড়েছে। সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ তাঁর খোঁজ করছে।
ভিডিওটি সামনে আসার পর, সোশাল মিডিয়ায় তর্কাতর্কি শুরু হয়ে যায়। অনেকেই রক্ষণশীল মুসলিম দেশের পোশাকনীতি ভাঙার জন্য মেয়েটির গ্রেফতারি দাবি করেন। অনেকে আবার তাঁর সাহসের প্রশংসা করেন।
নিয়ম বলে, সৌদি আরবের মেয়েরা জনসমক্ষে ‘আবায়া’ নামের ঢিলেঢালা, বড় ঝুলের আলখাল্লার মতো জামা পরবেন, মাথায় থাকবে উড়নি। তাঁরা গাড়ি চালাবেন না। পরপুরুষের সঙ্গে কথাও বলবেন না।
আরও পড়ুন: আবার হোঁচট ‘ট্রাম্পকেয়ারে’
বিষয়টি নিয়ে টুইটার দু’ভাগে বিভক্ত। কারও দাবি খুলুদকে চরম শাস্তি দেওয়া হোক। কেউ বলছেন, ওঁর মন যা চায়, তাই ওঁকে পরতে দেওয়া উচিত। সাংবাদিক খালেদ জিদান লিখেছেন, ‘‘এখানে হায়া (ধর্মীয় পুলিশ)-কে ফিরিয়ে আনা উচিত।’’ আর এক জনের মন্তব্য, দেশের আইনকে প্রত্যেকেরই সম্মান দেওয়া উচিত। যেমন ফ্রান্সে নিকাব (মুখ ঢাকা ঘোমটা) নিষিদ্ধ। সেখানে ওটি পরলে জরিমানা নেওয়া হয়। তেমনই সৌদি আরবে আবায়া ও শালীন পোশাক পরা দেশের নিয়ম। সেটিকে গুরুত্ব দিতেই হবে।’’
লেখক ও দার্শনিক ওয়ায়েল আল গাসিম বলেছেন এমন রাগে গরগরে, ভয়াবহ সব টুইট দেখে তিনি হতবাক। তাঁর কথায়, ‘‘একটা স্কার্ট নিয়ে এমন প্রতিক্রিয়া! মনে হচ্ছে, মেয়েটি যেন কাউকে বোমা মেরেছেন বা খুন করেছেন!’’
অনেকেই আবার খুলুদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ও মেয়ে ইভাঙ্কা তো মে মাসে সৌদি-সফরের সময় আবায়া ও উড়নি পরেননি। ফতিমা অল-ইসসা লিখেছেন, ‘‘বিদেশিনি হলে ওঁর কোমরের সুন্দর গড়ন ও চোখের আকর্ষণ নিয়ে প্রশস্তি হতো। সৌদি বলেই ওঁকে আটক করার কথা হচ্ছে।’’
সোমবার সংবাদপত্র ওকাজ জানিয়েছে, উশাকিরের আধিকারিকরা প্রাদেশিক প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। পুলিশ মেয়েটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। ধর্মীয় পুলিশ, পবিত্রতা রক্ষক ও দোষ-প্রতিরোধক কমিটি টুইটারে লিখেছে, তারা ভিডিওটি দেখেছে। কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় তাই নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাবার্তা বলছে। গভীর রাতের খবর, খুলুদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy