Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
জট কাটাতে কথার কথাও

ডোকলামে চুপ, বাহিনীতে জোর

তার পরেই বুক ঠুকে বলে বসলেন, কী ভাবে তিনি তাঁর ‘পিপল্‌স লিবারেশন আর্মি’-কে (পিএলএ) বিশ্বমানের বাহিনীতে পরিণত করতে চান।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
বেজিং শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৪৮
Share: Save:

প্রতিবেশীদের আশ্বস্ত করলেন বটে, কিন্তু ভারতের সঙ্গে চলতে থাকা টানাপড়েন নিয়ে একটি কথাও নয়। স্পষ্ট জানালেন, উন্নয়নের স্বার্থে চিন কারও জমি গিলতে চায় না। জটিলতা যা কিছু, সব আলোচনাতেই মিটিয়ে ফেলা হবে। তবে তা কোনও ভাবেই বেজিংয়ের ‘কৌশলগত স্বার্থের’ বিনিময়ে নয়।

আর ঠিক তার পরেই বুক ঠুকে বলে বসলেন, কী ভাবে তিনি তাঁর ‘পিপল্‌স লিবারেশন আর্মি’-কে (পিএলএ) বিশ্বমানের বাহিনীতে পরিণত করতে চান। মাঝে এক বার কড়া কথা শুনিয়ে দিলেন তাইওয়ানকেও। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির ১৯তম কংগ্রেসের প্রধান বক্তা হিসেবে আজ এমনই নরমে-গরমে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা পরে গিয়ে থামলেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং।

তাঁর মতলব তবু স্পষ্ট হলো না পড়শিদের কাছে। কূটনীতিকরা চিনফিংয়ের বক্তব্য শেষে বলছেন, এ বার চিনের রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং সমাজের উপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত ভাবেই আরও দৃঢ় হবে। গত পাঁচ বছরে যে ভাবে তিনি নিজের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের কোণঠাসা করেছেন, তাতে মনে করা হচ্ছে দেশের শীর্ষ পদে ফের মনোনীত হতে পারেন চিনফিং। কিন্তু আগামী দিনে বেজিংয়ের বিদেশনীতি কী হবে, তা-ই যে স্পষ্ট হলো না! আলাদা করে কোনও দেশের নাম উল্লেখ না করেও চিনফিং এ দিন বলেন, ‘‘চিনের স্বার্থ, নীতি এবং নিজস্বতা বজায় রেখে আমরা প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতেই চাই। এমন পথে হাঁটতে চাই যাতে দু’পক্ষই লাভবান হবে।’’

কিন্তু দক্ষিণ ও পূর্ব চিন সাগরে বেজিংয়ের দাদাগিরি নিয়ে যে পড়শিদের অভিযোগ রয়েছে, তা নিয়ে এ দিন টুঁ শব্দও করেননি চিনা প্রেসিডেন্ট। উচ্চবাচ্য নেই ডোকলাম প্রসঙ্গেও। এ সবের তা হলে সমাধান কোথায়? আশ্বাস দেওয়ার মতো করেই চিনফিং বলেন, ‘‘রফাসূত্র খোঁজার ক্ষেত্রে আমাদের কূটনৈতিক আলোচনাতেই ভরসা থাকতে হবে। সব পক্ষের সহযোগিতা চাই। সন্ত্রাস-সহ যাবতীয় হুমকির মোকাবিলায় একজোট হতেই হবে আমাদের।’’

আমেরিকা এবং রাশিয়ার মতো বিশ্বের তাবড় দেশ চাইছে, উত্তর কোরিয়ার বেপরোয়া কর্মসূচি ঠেকাতে অবিলম্বে কিম জং উনের সঙ্গে আলোচনায় বসুক বেজিং। অথচ চিনা প্রেসিডেন্ট এ দিনও ‘বন্ধু’ কিমকে নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেই রইলেন।

বরং বেশি জোর দিলেন ২৩ লক্ষ সদস্যের ‘পিপল্‌স লিবারেশন আর্মি’-র পুনর্গঠন নিয়ে। ২০১২-য় ক্ষমতায় এসেই বাহিনীকে ঢেলে সাজতে শুরু করেন চিনা প্রেসিডেন্ট। প্রতিরক্ষা খাতে বেজিংয়ের বাজেট ১৪১০ কোটি ডলার, আমেরিকার ঠিক পরেই। আর সেনাসংখ্যার নিরিখে পিএলএ-কে বিশ্বের সব চেয়ে বড় বাহিনীর মর্যাদা দেওয়া হয়। চিনফিং এ দিন আরও জানালেন, তাঁর লক্ষ্য ২০৩৫-এর মধ্যে এই বাহিনীকে বিশ্বমানে উন্নীত করা।

আর ঠিক এই প্রেক্ষিতেই জটিলতা সমাধানে চিনফিংয়ের ‘আলোচনায় জোর’ দেওয়ার ব্যাপারটা ঠিক মেলাতে পারছেন না কূটনীতিকদের বড় অংশ। তবে বিচ্ছিন্নতাকামী তাইওয়ানকে যে বেজিং কোনও ভাবেই ছা়ড় দিতে রাজি নয়, এ দিন তা ফের স্পষ্ট করে দেন চিনা প্রেসিডেন্ট। মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে প্রদেশটিকে জুড়ে রাখতে প্রয়োজনে সেনা ব্যবহারের হুমকিও দেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘চিনে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করলে কোনও ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা রাজনৈতিক দলকেই রেয়াত করা হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE