Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
International News

দম্পতি জানতে পারলেন তাঁরা আসলে যমজ-ভাইবোন, এ খবরটি ভুয়ো

বিয়ে হয়েছে বেশ কিছু দিন। সন্তানও চাইছেন কয়েক বছর ধরেই। কিন্তু ইচ্ছাপূরণ কিছুতেই হচ্ছিল না। চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মার্কিন যুবক-যুবতী। আইভিএফ (ইন ভিটরো ফার্টিলাইজেশন) পদ্ধতিতে সন্তান ধারণের পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৭ ১৪:৩৯
Share: Save:

গত ১৬ এপ্রিল আমরাও নীচে দেওয়া এই খবরটি প্রকাশ করেছিলাম। সূত্র ছিল সারা বিশ্বের অনেকগুলি সংবাদমাধ্যম। দেশের এবং বিদেশের পয়লা সারির বহু সংবাদমাধ্যমই এই খবরটি প্রকাশ করেছিল। কিন্তু পরবর্তী কালে খোঁজখবর করে দেখা যাচ্ছে, এমন কোনও ঘটনা আদৌ ঘটেনি। গোটাটাই একটা বানানো খবর ছিল যা আমরা এবং বিশ্বের আরও বহু নিউজ ওয়েবসাইট প্রকাশ করেছি। অনেক ওয়েবসাইটই এই খবরটি ভুল ধরা পড়ার পর বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু পাঠকদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমরা নিজেদের ভুল স্বীকার করে দুঃখপ্রকাশ করছি।

যে বানানো খবরটি ঠিক ভেবে আমরাও দিয়েছিলাম সেটি নীচে দেওয়া হল:

বিয়ে হয়েছে বেশ কিছু দিন। সন্তানও চাইছেন কয়েক বছর ধরেই। কিন্তু ইচ্ছাপূরণ কিছুতেই হচ্ছিল না। চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মার্কিন যুবক-যুবতী। আইভিএফ (ইন ভিটরো ফার্টিলাইজেশন) পদ্ধতিতে সন্তান ধারণের পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। দম্পতিও রাজি ছিলেন। কিন্তু তার আগে যুবক-যুবতীর যে রুটিন শারীরিক পরীক্ষা হল, সেই পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে হতভম্ব হয়ে গেলেন ডাক্তাররা। প্রায় হুবহু মিলে গেল স্বামী-স্ত্রীর ডিএনএ। ডাক্তারদের চেষ্টায় জানা গেল, ওই দম্পতি আসলে যমজ ভাই-বোন!

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এই বেনজির ঘটনার খবর প্রকাশ্যে এনেছে। ঘটনাটি মিসিসিপির। তরুণ-তরুণীর আলাপ হয়েছিল কলেজে গিয়ে। দু’জনে দু’জনের মধ্যে অনেক মিল খুঁজে পেয়েছিলেন। সেই থেকেই প্রেম এবং বিয়ে। দু’জনের চেহারার মিল দেখে পরিচিতরা, বন্ধু-বান্ধবরা রসিকতাও করতেন। কিন্তু কখনও দুঃসপ্নেও কেউ ভাবতে পারেননি, ওই দম্পতি যমজ ভাই-বোন।

মিসিসিপির যে ফার্টিলিটি ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন দম্পতি, সেই ক্লিনিকের ডাক্তার জানিয়েছেন, দু’জনের ডিএনএ-র মধ্যে অদ্ভুত মিল দেখে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তিনিই বিষয়টি চিকিৎসকের নজরে আনেন। চিকিৎসকের নাম প্রকাশ করেনি মার্কিন সংবাদমাধ্যম। কিন্তু তাঁকে উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, দু’জনের ডিএনএ দেখে চিকিৎসকের মনে হয়েছিল, তাঁরা নিশ্চয়ই পরস্পরের তুতো ভাই-বোন হবেন। না হলে দু’জনের ডিএনএ-তে এত মিল থাকা সম্ভব নয়। তুতো ভাই-বোনদের মধ্যে বিয়ের কথা মাঝে-মধ্যে শোনা যায়। সেই কারণেই চিকিৎসক সে রকম ভেবেছিলেন। কিন্তু পরের চেক-আপের তারিখে ওই দম্পতি ক্লিনিকে যাওয়ার পর চিকিৎসকদের ভুল ভাঙে।

আরও পড়ুন:গর্বের ক্ষেপণাস্ত্র ডাহা ফেল, মুখ চুন কিমের

চিকিৎসক ওই দম্পতিকে জানিয়েছিলেন, তাঁদের দু’জনের ডিএনএ অনেকাংশেই মিলে যাচ্ছে। দম্পতি হেসেছিলেন। চিকিৎসক জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তাঁরা কি তুলো ভাই-বোন। দম্পতি আরও হেসেছিলেন, এবং জানিয়েছিলেন, তেমন কিছু নয়। এতেই আশ্চর্য হন চিকিৎসক। অন্তত পক্ষে তুতো ভাই-বোন না হলে দু’জনের ডিএনএ এই ভাবে মিলে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই তিনি দু’জনের পরিচয়ের শিকড়ে পৌঁছনোর চেষ্টা করেন। শিকড়ে পৌঁছে যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে চিকিৎসক নিজে তো বটেই, ওই দম্পতিও আশ্চর্য হয়ে গিয়েছেন।

জানা গিয়েছে, ১৯৮৪ সালে একই মায়ের গর্ভ থেকে ওই দু’জনের জন্ম। কিন্তু তাঁদের শৈশবেই তাঁদের বাবা-মা একটি পথ দুর্ঘটনায় মারা যান। আত্মীয় পরিজনদের কেউই ওই দুই অনাথ শিশুর দায়িত্ব নেননি। তাই দায়িত্ব নেয় সরকার। পরে সরকারি শিশু সুরক্ষা কেন্দ্র থেকে দু’টি আলাদা পরিবার ওই দুই শিশুকে দত্তক নেয়। সেখানেই তারা বড় হয়। কোনও যমজ ভাই-বোনের এক জনকে যে দত্তক দেওয়া হচ্ছে, দুই পরিবারের কোনওটিকেই তা জানানো হয়নি। ভাই-বোন জানতেন যে তাঁদের দত্তক নেওয়া হয়েছিল। যে বাবা-মা তাঁদের জন্ম দিয়েছিলেন, তাঁরা যে পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন, তাও সম্ভবত তাঁরা জানতেন। কিন্তু তরুণী জানতেন না, তাঁর একটি যমজ ভাইও ছিল। তরুণ জানতেন না, তাঁর একটি যমজ বোনও ছিল।

চিকিৎসকের কথায়, ‘‘যাঁদের সন্তান হচ্ছে না, তাঁদের সন্তান পেতে সাহায্য করাই আমার কাজ। কিন্তু এই প্রথম বার সফল হতে না পেরেও আমি খুশি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Twin Couple Fertility Clinic Sibling Marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE