ডোপ পরীক্ষা দিতে বসে। ছবি: টুইটার
ড্রেসিংরুমে তখন সবাই মেতে উঠেছেন উৎসবে। কিন্তু তিনিই নেই।
একটু আগে দেখা গিয়েছে আর্জেন্তিনার শেষ পেনাল্টিটা ডাচ গোলকিপারকে হার মানিয়ে গোলে ঢুকে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাগলের মতো ছুটছেন তিনি। চোখে জল, মুখে হাসি। একটু পরেই ড্রেসিংরুমে শুরু সাদা-নীল উৎসব। কিন্তু লিওনেল মেসি কোথায়?
উত্তরটা নিজেই দিয়েছেন আর্জেন্তিনার অধিনায়ক। টুইট করে। “কী অকল্পনীয় মুহূর্ত। আমরা ফাইনালে। কিন্তু এই উৎসবের সময়টা আমি ড্রেসিংরুমে সতীর্থদের সঙ্গে কাটাতে পারছি না। কারণ আমাকে ডোপ পরীক্ষা দিতে আসতে হয়েছে।” ফাইনালে ওঠার পর এখন তার পাখির চোখ যে একটাই, সেটা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে পরের টুইটগুলো থেকে। বলছেন, “এ রকম এক ঐতিহাসিক দলের সদস্য হতে পেরে আমি গর্বিত। ইতিহাস থেকে আমরা একটা ছোট ধাপ দূরে।”
পুরো বিশ্বকাপে বলা হয়েছে আর্জেন্তিনা মেসি-কেন্দ্রিক দল। কিন্তু কিংবদন্তি জানিয়ে দিচ্ছেন, তাঁর দলের সবাই সমান ভাবে সাহায্য করেছেন আর্জেন্তিনাকে ফাইনালে তুলতে। মেসি বলে দিচ্ছেন, “দলে সবাই বিশ্বমানের প্রতিভা। কী দারুণ খেললো সবাই। ভাবতেই পারছি না। আমরা এখন ফাইনালে। এই মুহূর্তটা উপভোগ করা উচিত। আর্জেন্তিনার সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের পাশে থাকার জন্য।”
পাশাপাশি আবার বুয়েনস আইরেসেও উৎসবের আমেজ। প্রায় হাজার হাজার সমর্থক প্রতিটা গলিতে গলিতে জায়ান্ট স্ক্রিনের সামনে ভিড় করে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মাটিতে ফাইনালে উঠে উৎসবের আমেজেই গোটা দেশ। কিন্তু এই উৎসবের পিছনেই আবার আর্জেন্তিনা হারালো তাঁদের আর এক ক্রীড়া সাংবাদিককে। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে জয় প্রয়াত সাংবাদিক বন্ধুকে উৎসর্গ করলেন লিওনেল মেসি। বুধবার জয়ের পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় মেসির বার্তা, “গোটা আর্জেন্তিনাকে অভিনন্দন আর জোর্জ ‘টোপো’ লোপেজকেও। এই জয়টা বিশেষ করে তোমার জন্য বন্ধু।” আর্জেন্তিনার সাংবাদিক জর্জ লোপেজ মেসিদের সেমিফাইনাল ম্যাচের দিন সকালে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। সাও পাওলোয় হোটেলে ফেরার সময় লোপেজের ট্যাক্সি দুর্ঘটনায় পড়েছিল। দুষ্কৃতীরা একটি গাড়ি চুরি করে পালানোর সময় পুলিশ তাড়া করলে সেটি গিয়ে লোপেজের ট্যাক্সিতে ধাক্কা মারে। ৩৮ বছর বয়সি লোপেজ একটি সংবাদপত্রের হয়ে বার্সেলোনায় বেশ কিছু দিন কাজ করার সূত্রেই মেসির সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল।
পাশাপাশি ফাইনালে উঠে আবার দলের আর এক তারকা সের্জিও আগেরো জানিয়ে দিলেন সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে পেরেই সন্তুষ্ট আর্জেন্তিনা। বলেন, “আমি বলতে চাই কেউ আশা করেনি আর্জেন্তিনা ফাইনালে উঠবে। কিন্তু আমরা দেখিয়ে দিলাম মনের জোর থাকলে কতদূর যাওয়া যায়। সবাইকে ভুল প্রমাণিত করে খুব খুশি। আর্জেন্তিনা দল কী দিয়ে তৈরি, সবাই এ বার সেটা বুঝতে পারছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy