কলকাতা বনাম পুণের আইএসএলের ফিরতি লড়াইয়ের কাল ক্যাচলাইন কী!
গোল-যুদ্ধে ডুডু ওমেগবেমি বনাম ফিকরু তেফেরা একে অন্যকে টপকে যাওয়ার লড়াই? না।
দু’দলের দুই সাপ্লাইলাইন লুই গার্সিয়া এবং কোস্তাস কাতসুরানিসের পাস আর শটের ফুলঝুরি? না।
প্রাক্তন বার্সা মিডিও হোফ্রে বনাম আর্সেনালের প্রাক্তন জেরমান পেন্যান্টের জেট গতির উইং প্লে-তে বিপক্ষকে ফাঁদে ফেলার তীব্র লড়াই? না।
ক্যাচলাইন— ধুন্ধুমার মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে নামার চব্বিশ ঘণ্টা আগেও দু’দলের কোচেরই সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা!
কলকাতা ডার্বির আগে যেমনটা দেখা যায় দুই প্রধানের অন্দরমহলে! সেটাই ফিরে এল হাইপ্রোফাইল টুর্নামেন্ট আইএসএলেও!
ছেলে ডেভিড কলকাতার মতো এখানেও কাল গোল করলে তাঁকে উপহার দেবেন ঠিক করে রেখেছেন পুণে কোচ ফ্র্যাঙ্কো কোলোম্বা। কিন্তু ঠিক করতে পারেননি ডুডুর সঙ্গী হিসাবে শুরুতে ত্রেজেগুয়ে না আব্রাঞ্চেজ কাকে নামাবেন!
উল্টো ড্রেসিরুমে আবার কার্ড সমস্যায় বাইরে থাকা নাতোর জায়গায় কাকে খেলাবেন তা ঠিক করে উঠতে পারছেন না আটলেটিকো কোচ আন্তোনিও হাবাস। রাকেশ মাসি না বাংলাদেশের মামুনুল ইসলাম?
অথচ সুচাগ্র মেদিনী না ছাড়ার যুদ্ধে কলকাতা এবং পুণের কাছে দু’টো সিদ্ধান্তই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বালেওয়াড়ির ছত্রপতি শিবাজি স্টেডিয়ামে ঢোকার রাস্তার দু’পাশে পুণে ফুটবলারদের ছবি সার দিয়ে লাগানো। ত্রেজেগুয়ের ছবি যত, ততই ডুডুরও! আর জোয়াকিম? সদ্য চোট সারিয়ে ফেরা সুন্দর মুখের গোয়ান ফুটবলারের ছবি বিশাল করে লাগানো মূল ফটকের উপরেই। ডুডুর সঙ্গে জোয়াকিমের কম্বিনেশন খুব ভাল। ক্লিকও করছে। কিন্তু ডুডু-ত্রেজেগুয়ে যুগলবন্দি যে দু’টো ম্যাচে নেমেছে কার্যকর হয়নি। কাল হবে?
সাংবাদিক সম্মেলনে এসে পুণে কোচ বললেন, “কাল সকালে ঠিক করব কাকে খেলাব। ত্রেজেগুয়ে আজ পুরো অনুশীলন করেছে। ফিটও।” তখন একটু দূরে দাড়িয়ে জোয়াকিমও। শুনছিলেন কোচের কথা। কোলোম্বা যা ইঙ্গিত দিলেন, তাতে ত্রেজেগুয়ের জন্য ফর্মেশন বদলে ৪-৪-১-১-এ চলে যেতে পারেন তিনি। ডুডকে সামনে রেখেও।
পুণে কোচ যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন তখনও হাবাস পালা করে অনুশীলন করিয়ে চলেছেন রাকেশ মাসি আর মামুনুলকে? টিম সূত্রের খবর, সুযোগ না পেয়ে পেয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাকি কয়েক দিন আগে হাবাসকে সরাসরি প্রশ্ন করেছেন, “স্যার, আমি তো ফিট। তা হলে সুযোগ পাব না কেন?” দলের মার্কি ফুটবলার গার্সিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে টিম গড়েন আটলেটিকো কোচ। সবার জানা। মামুনুলের সাহস করে বলা ‘কেন সুযোগ দেবেন না’ সম্ভবত হাবাসকে ভাবাচ্ছে। মামুনুলকে শুরুতে নামান বা না নামান— সন্ধ্যায় পুরো কলকাতার অনুশীলন দেখার পর একটা জিনিস খুব খারাপ ইঙ্গিত দিয়ে গেল বলেই মনে হচ্ছে।
অনুশীলনের শুরুতে ফিটনেস ট্রেনিংয়ের সময় গার্সিয়া-সহ স্প্যানিশ ফুটবলারদের এক দিকে পাঠিয়ে দিলেন হাবাস। অন্য দিকে অস্পেনীয়রা। কোন স্ট্র্যাটেজির জন্য এটা করা তা আটলেটিকো কোচই জানেন। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলছে, ড্রেসিংরুম-রসায়নের পক্ষে জিনিসটা খারাপ। তা হলে কি কলকাতার অন্দরমহল থেকে টিম-বিভাজনের যে খবর চুইয়ে বেরোচ্ছে সেটাই সত্যি? কে জানে?
তবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের টিম নিয়ে যাবতীয় গুঞ্জন থামিয়ে দিতে পারে একটাই ওষুধ—পুণের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠের হারের প্রতিশোধ তোলা অ্যাওয়ে ম্যাচ জিতে। হাবাস এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে আসেননি। পাঠিয়ে ছিলেন গোলকিপার কোচ দেশি বক্তাবরকে। তিনি কিন্তু ঘুরিয়ে প্রতিশোধের কথাই বলে গেলেন। “জানি কঠিন ম্যাচ। তবু আমরা জেতার জন্যই এসেছি। আগেরটা হেরেছি। এ বার জিততে চাই।” তাঁর পাশে তখন বসে স্ট্রাইকার আর্নল আর লেফটব্যাক মোহনরাজ। দু’জনেই দেখা গেল সম্মতিসূচক ঘাড় নাড়ছেন। কলকাতায় নিজেদের মাঠে তিন গোল হজমের স্মৃতি যে এখনও টাটকা।
আসলে ফিকরুদের বুকে আগুন জ্বলছে। চমকপ্রদ হেয়ারস্টাইলের ফিকরু কলকাতার মতো এখানেও প্রচণ্ড জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। সকালে আটলেটিকোর টিম হোটেলে গিয়ে দেখলাম তাঁর সঙ্গে সেলফিতে ফটো তোলার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। তাঁর মাঝেই ফিকরু বলে গেলেন, “আমার বুকে ওই হারটা এখনও টাটকা। কাল গোল করতেই হবে। একা ডুডু গোল করবে এটা হতে পারে না।”
মজার ব্যাপার হল ফিকরুকে নিয়ে ভাবছে না পুণে শিবির। আটলেটিকো স্ট্রাইকারকে রোখার জন্য ব্রুনো সিরিলো মজুত আছে যে তাদের! তবে কলকাতার মাঠের সেই জয় ভুলে যেতে চাইছেন কোলোম্বা। “ওই ম্যাচ আমি ভুলে গিয়েছি। কাল নতুন ম্যাচ। নতুন যুদ্ধ,” মোবাইলে নিজের ফুটবলারজীবনের ছবি দেখানোর ফাঁকে চোখ টিপে বলেন পুণে কোচ। সবাই বলে তিনি নাকি স্ট্র্যাটেজি তৈরিতে মাস্টার!
তবে কোলোম্বা যদি বুনো ওল হন, তা হলে হাবাস পাকা তেঁতুল। অনুশীলনে দেখা গেল ডুডু-ত্রেজেগুয়ের কথা মাথায় রেখেই রক্ষণে লকগেট ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আটলেটিকো কোচ।
এখন দেখার, হাবাসের বদলা নেওয়ার স্ট্র্যাটেজি না, কোলোম্বার ধূর্ততা— কোনটা শেষমেশ জয়ী হয়!
মুম্বইকে হারিয়ে পাঁচে দিল্লি
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
প্রথম পর্বে এক গোলে হারের বদলা ফিরতি ম্যাচে মুম্বই সিটি এফসি-কে ৪-১ হারিয়ে নিল দিল্লি ডায়নামোস। শুক্রবার ঘরের মাঠে পিটার রিডের দলকে কার্যত উড়িয়ে দেন মুল্ডার, জুঙ্কার, মণীশ ভার্গবরা। জয়ের ফলে ১১ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে উঠে এল দেল পিয়েরোর দিল্লি। মুম্বই পয়েন্ট তালিকায় এখন সবার শেষে।
এ দিন বিরতির ঠিক আগে দিল্লির প্রথম গোল মুল্ডারের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ম্যাডস জুঙ্কার ব্যবধান বাড়ান। দস সান্তোসের গোলে ৩-০ হওয়ার পর মুম্বইয়ের কফিনে শেষ পেরেকটি পোঁতেন মণীশ ভার্গব। মুম্বইয়ের সান্ত্বনার গোলটি অভিষেক যাদবের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy