গৌতম গম্ভীরের জীবনের দর্শনগুলো সত্যিই অদ্ভুত।
তিনি যখন প্রত্যেক ম্যাচে নামেন, নামেন সেঞ্চুরি টার্গেট নিয়ে। আর বড় সেঞ্চুরি না হলেই তাঁর মনে হতে থাকে, টিমকে আমি মোটেও যথেষ্ট দিতে পারলাম না!
গম্ভীরের নাকি দু’টো সত্ত্বা। একটা ক্যাপ্টেন গম্ভীর। অন্যটা ব্যাটসম্যান গম্ভীর। যেখানে ক্যাপ্টেন গম্ভীর আইপিএল সেভেনে বেশ কয়েক বার চেয়েছে ব্যাটসম্যান গম্ভীরকে বাদ দিয়ে টিম নামাতে!
তিনি বোঝেন, এক-এক সময় নিজের উপর প্রত্যাশাটা বাড়িয়ে দিচ্ছেন অতিমাত্রায়। বাড়াচ্ছেন নিজেই। দেখছেন, সে জন্য তাঁর ফর্ম পড়ছে। কিন্তু তবু নিজের স্টান্স অনড় রেখে দিচ্ছেন অক্লেশে।
নিকটাত্মীয় প্রয়াত হলে চার দিনের বেশি থাকেন না। টিমে যোগ দিতে রওনা হয়ে যান। না, ভারতীয় দল নয়। কাউন্টি টিম। যারা গম্ভীরকে ‘আসতে হবে না’ বললেও তিনি ফিরে যান। কারণ তাঁর মনে হয়, টিমের প্রতি তাঁর একটা দায়িত্ব আছে।
“খুব খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি বেশ কিছু দিন। ক্রিকেটীয় শুধু নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও প্রচুর ঝড়-ঝাপটা সহ্য করতে হয়েছে। এক বছরের মধ্যে দু’জন খুব কাছের মানুষ মারা গেলেন। আমি তখন এসেক্সের হয়ে নিজের ক্রিকেট কেরিয়ারকে গুছোনোর চেষ্টা করছি। একটা সেঞ্চুরি পেয়ে নিজের আত্মবিশ্বাস সবে ফিরছে, তখনই খবর পেলাম পরিবারে একজন নিকটাত্মীয়ের মৃত্যু হয়েছে,” একটি ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেছেন গম্ভীর। সঙ্গে যোগ করেছেন, “দেশে ফিরতে হল। কিন্তু তার চেয়েও যেটা কঠিন, চার দিনের মধ্যে আমাকে আবার ফিরে যেতে হল। আমার কাউন্টি ক্লাব আমাকে বারণ করেছিল। কিন্তু না ফেরাটা অপেশাদারের মতো হয়ে যেত।”
আর মাঠের এই অতিরিক্ত চাপ যে তাঁর ব্যাটিং ফর্মের উপরও প্রভাব ফেলে, সেটাও বলে দিচ্ছেন নাইট অধিনায়ক। “আমার স্বভাবই হল, নিজের উপর সব সময় বেশি চাপ তৈরি করা। আমি নিজেও বুঝতে পারি, নিজের উপর প্রত্যাশাটা খুব বাড়িয়ে ফেলছি। যেটা ফর্ম হারানোর হয়তো একটা কারণ। আসলে কখনও না কখনও বাস্তবকে বুঝতে হয়। বুঝতে হয়, বিদেশে সফল হওয়া খুব কঠিন। কিন্তু ব্যাট করতে নামলেই আমার মনে হতে থাকে, বড় সেঞ্চুরি করতে হবে। না পারলে মনে হয়, টিমকে যথেষ্ট দিলাম না। এ রকম অদ্ভুত টার্গেট তৈরি করলে তো চাপ এমনিই প্রচুর বেড়ে যায়।”
আর এমন চাপে পড়া, অফ ফর্মের ব্যাটসম্যান গম্ভীরকে বাদও দিতেও চেয়েছেন স্বয়ং তিনি। মানে ক্যাপ্টেন গম্ভীর বাদ দিতে চেয়েছেন ব্যাটসম্যান গম্ভীরকে।
“আইপিএল সেভেনে কেকেআরের হয়ে নামার সময় সেটা আমার মনে হয়েছে। আসলে অধিনায়ক গম্ভীর খুবই কড়া ধাতের। সে ব্যাটসম্যান গম্ভীরকে ঠিক সেই চোখেই দেখে, যে ভাবে বাকি দশ ক্রিকেটারকে দেখে। তাই আমার মনে হয়, ব্যাটসম্যান গম্ভীরের অবস্থা খুব সুবিধের নয়। কারণ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচগুলোয় এখনও সে একটা হাফসেঞ্চুরি ছাড়া কিছু করতে পারেনি,” বলে দিয়েছেন কেকেআর ক্যাপ্টেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy