Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

দলীপে ঝড় তুলে নির্বাচকদের প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন লক্ষ্মী

এক দিকে অশোক দিন্দা ও বরুণ অ্যারন। অন্য দিকে স্টুয়ার্ট বিনি, বিনয় কুমার ও অভিমন্যু মিঠুন। লাহলির বংশীলাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই ক’জন বোলারের উপরই নজর ছিল দুই জাতীয় নির্বাচক রজার বিনি ও সাবা করিমের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:৩১
Share: Save:

এক দিকে অশোক দিন্দা ও বরুণ অ্যারন। অন্য দিকে স্টুয়ার্ট বিনি, বিনয় কুমার ও অভিমন্যু মিঠুন। লাহলির বংশীলাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই ক’জন বোলারের উপরই নজর ছিল দুই জাতীয় নির্বাচক রজার বিনি ও সাবা করিমের। কিন্তু বল হাতে এ দিন তাঁদের নজর কেড়ে নিলেন অন্য আর একজন। লক্ষ্মীরতন শুক্ল। যাঁর নাম জাতীয় নির্বাচকদের খাতা থেকে প্রায় মুছে গেলেও বুধবারের পারফরম্যান্সের পর ফিরে এলেও আসতে পারে।

লাহলির পেস সহায়ক উইকেটে ঠিক কেমন বল করা উচিত, তা বিনি, অ্যারনদের শিখিয়ে দিলেন পোড় খাওয়া লক্ষ্মী। দক্ষিণাঞ্চলের বিরুদ্ধে দলীপ ট্রফির সেমিফাইনালের প্রথম দিনের মাঝামাঝি প্রথম দুটো উইকেট লক্ষ্মীই তুলেছিলেন। তবে তা সত্ত্বেও দিনের শেষ দিকে দক্ষিণাঞ্চলের স্কোরবোর্ড দাঁড়ায় ২১১-২। যা পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য বোলারদের হতাশ করে তোলার পক্ষে যথেষ্ট ছিল। ওপেনার রবিন উথাপ্পা সেঞ্চুরি করে এগিয়ে চলেছেন। সঙ্গী মণীশ পাণ্ডে। দিনের শেষ সেশনের শুরুতে পাণ্ডেকে ফিরিয়ে ধস নামানো শুরু করলেন ত্রিপুরার পেসার রাণা দত্ত। পরের ওভারেই তিনি ফেরালেন উথাপ্পাকেও। এর পর ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন লক্ষ্মী। দিন্দাও নিলেন দুই উইকেট। তাতে দিনের শেষে দক্ষিণাঞ্চলের স্কোর দাঁড়াল ২৩৬-৯।

লক্ষ্মীর পারফরম্যান্স এ দিন মাঠে বসে দেখলেন দুই জাতীয় নির্বাচক। দু’জনে বাংলার অলরাউন্ডারকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন। কিন্তু এই পারফরম্যান্স তাঁকে কতটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে? লক্ষ্মী অবশ্য আশা ছাড়তে রাজি নন। সন্ধ্যায় লাহলি থেকে ফোনে বলছিলেন, “ওঁরা আমার বোলিংয়ের প্রশংসা করলেন, অভিনন্দন জানালেন। তাতে আমি খুশি। তবে ওঁদের কাছ থেকে শুধু আশার কথা শুনে তৃপ্ত থাকতে চাই না। দলে আমার নাম দেখতে চাই। সেই আশা নিয়ে এখনও মাঠে নামি আমি। সামনে বিশ্বকাপ। কে বলতে পারে, সেই দলে আমি থাকব না? আমি আশা ছাড়ছি না। এই আশাই তো এখন আমার ভাল খেলার মোটিভেশন।”

আগের ম্যাচে মনোজ তিওয়ারি। এই ম্যাচে লক্ষ্মী। বঙ্গ ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সে খুশি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। এ দিন বলছিলেন, “আমি তো ঠিক এটাই চাই। বাংলা ক্রিকেটের পক্ষে এটা খুব ভাল দিক। আশা করব, ওরা যেখানে খেলবে, সেখানেই এ রকম পারফর্ম করবে।”

এ দিন উথাপ্পা ও করুণ নায়ারের ৯৪ রানের পার্টনারশিপ ভাঙেন লক্ষ্মী। উথাপ্পার সঙ্গী ওপেনার লোকেশ রাহুলকেও ফেরান তিনিই। শেষের দিকেও বিপক্ষ ব্যাটিং ভাঙলেন লক্ষ্মীই। ভারতীয় দলের দুই ক্রিকেটার দীনেশ কার্তিক ও বিনয় কুমারকে ফিরিয়ে। “উইকেটে বল মুভ করছে। তার সুবিধা তো কিছুটা পেয়েছিই,” বললেন লক্ষ্মী। কিন্তু সেই সুবিধা যে ভাবে আদায় করলেন লক্ষ্মী, তা বাকিরা সে ভাবে আদায় করতে পারলেন কই? দিন্দা ৫১ রান দিয়ে ফেরালেন বিনি ও ওঝাকে। রাণা দত্তও দু’উইকেট নিলেন ৬০ রান দিয়ে। কিন্তু লক্ষ্মী উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি রানটাও আটকে দিয়েছেন। ১৭ ওভারে দেন ৩০ রান।

তবে পূর্বাঞ্চলের ব্যাটসম্যানদের পক্ষেও কাজটা কঠিন হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন লক্ষ্মী। বললেন, “এ যা উইকেট। ওদের বোলাররাও ভাল বল করবে বলেই মনে হয়। তাই আমাদের ভাল ব্যাটও করতে হবে। না হলে এই ম্যাচ জেতা কঠিন হবে।” মনোজ, ঋদ্ধিমান, সৌরভ তিওয়ারি, সুদীপদের কোর্টে যে বল ঠেলছেন, তা মনে করার কারণ নেই। দায়িত্ব নিতে চান নিজেও। আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফোটা লক্ষ্মী বললেন, “আমাকেও ভাল ব্যাট করতে হবে। মন দিয়ে খেলতে হবে। যেমন বল করেছি তেমন ব্যাটও করতে চাই। না হলে ভারতীয় দলে ফিরব কী করে?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

laxmi ratan shukla cricket duleep trophy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE