Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
গাওস্কর হাঁটলেন স্মৃতির সরণিতে

ধোনি আউট হয়ে গেলে ঝামেলা ছিল, বলছেন সৌরভ

ভারত হোলি খেলল, জয়োত্‌সবও করল! ডারেন স্যামির চ্যালেঞ্জ খাটল না। “ভারতীয়রা শুক্রবার হোলি খেলুক, আমরা ম্যাচ জিতে উত্‌সব করব”— প্রাক্তন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়কের হুঙ্কার বেকার গেল! যার কৃতিত্ব আবার এক প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক দিচ্ছেন বর্তমান অধিনায়ককে।

ওয়াকায় একান্ত আড্ডায় গাওস্কর-সৌরভ। ছবি: প্রতিবেদক।

ওয়াকায় একান্ত আড্ডায় গাওস্কর-সৌরভ। ছবি: প্রতিবেদক।

দেবাশিস সেন
পারথ শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৫ ০৪:০৪
Share: Save:

ভারত হোলি খেলল, জয়োত্‌সবও করল!

ডারেন স্যামির চ্যালেঞ্জ খাটল না।

“ভারতীয়রা শুক্রবার হোলি খেলুক, আমরা ম্যাচ জিতে উত্‌সব করব”— প্রাক্তন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়কের হুঙ্কার বেকার গেল!

যার কৃতিত্ব আবার এক প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক দিচ্ছেন বর্তমান অধিনায়ককে।

ক্যারিবিয়ান দলের অলরাউন্ডার স্যামির দিন দুয়েক আগে ছোড়া চ্যালেঞ্জ প্রায় সত্যি হয়ে যাচ্ছিল যখন জেতার থেকে পঞ্চাশের মতো রান দূরে থাকা অবস্থায় ভারতের ষষ্ঠ উইকেট পড়ে পারথে। কিন্তু সেখান থেকে ক্যাপ্টেন কুল-এর ধৈর্যশীল ৪৫ নট আউট আর কোনও হ্যাঁচকানি ছাড়াই টিম ইন্ডিয়ার এই বিশ্বকাপে চারে চার করে দিল ১০ ওভারেরও বেশি ম্যাচ বাকি থাকতে। কমেন্ট্রি বক্স থেকে যা দেখার পর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, “যদি ওই সময় ধোনির উইকেটটা পড়ে যেত তা হলে এই ম্যাচ ভারতের জেতা খুবই কঠিন হত।”

সৌরভের মতে, আজকের ম্যাচ থেকে ভারতের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি— ক্যাপ্টেনের অনেকটাই নিজের ব্যাটিং ফর্মে ফিরে দল নিয়ে নক আউটে পা রাখাটা। এ ছাড়া এ দিনও ভারতের ভাল বোলিংয়ের ব্যাপারটা তো আছেই। যেটাকে এ বারের বিশ্বকাপে প্রায় বিপ্লব আখ্যা দেওয়া যায়।

মার্লন স্যামুয়েলসের ওভারে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি উইনিং স্ট্রোক নেওয়ামাত্র এ দিন ওয়াকার গ্যালারি আর স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তায় ভারতীয় সমর্থকদের হোলি খেলা শুরু হয়ে যায়। হাজার হাজার অনাবাসী ভারতীয় হাতে নানা রঙের আবির আর মুখে ধোনির নামে জয়ধ্বনি সমেত টিম ইন্ডিয়ার সরকারি ভাবে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পাওয়ার উত্‌সবপালনে মেতে ওঠেন। হাওয়ায় প্রচুর পরিমাণ আবিরের ওড়াউড়ির সঙ্গে একাধিক তেরঙ্গার দোলাদুলি—সব মিলিয়ে পারথের রাতে সে এক অনির্বচনীয় দৃশ্য!

তার মধ্যেই সুনীল গাওস্কর খুব সঙ্গত একটা প্রশ্ন তুলে দিলেন। ভারতীয় ক্রিকেটের আসল লিটল মাস্টারের প্রশ্ন, বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালের শিডিউল নিয়ে। কেন আইসিসি আগেভাগে দুই সংগঠক দেশ অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা আর ইংল্যান্ডের জন্যও কোয়ার্টার ফাইনালের মাঠ চূড়ান্ত করে রেখেছে! এই চার দেশ শেষ আটে উঠলে সেটা তারা নিজেদের পুলে যত নম্বরে শেষ করেই উঠুক না কেন খেলবে যথাক্রমে অ্যাডিলেড, ওয়েলিংটন, সিডনি আর মেলবোর্নে। গাওস্করকে যেটা অবাক করছে— আগের বারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া সত্ত্বেও ভারতের জন্য কেন এ রকম কোয়ার্টার ফাইনালের নির্দিষ্ট জায়গা আগেভাগে ঠিক করে রাখা হয়নি আইসিসির তরফে? কেন আজই নক আউটের টিকিট পাকা করে ফেলেও ভারতকে প্রাথমিক পর্বের সব ম্যাচ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে নিজেদের কোয়ার্টার ফাইনালের মাঠ জানার জন্য! এতে তো গুরুত্বপূর্ণ নক আউট ম্যাচের প্রস্তুতিতে সমস্যা হতে পারে।

যদিও গাওস্কর পারথে ভারতের নাটকীয় জয় নিয়ে নস্ট্যালজিক হয়ে পড়ছেন। তিরাশির বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত অল আউট হয়েছিল ১৮৩-তে। ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজ যা তুলতে পারেনি। বত্রিশ বছর পরে আবার এক বিশ্বকাপ ম্যাচে এ বার ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৮৩ রানের টার্গেট দিয়েছিল ভারতকে। সে দিনের জয়ী দলের অন্যতম তারকা গাওস্কর আজ ছিলেন ওয়াকার কমেন্ট্রি বক্সে। আর লয়েড মাঠে ছিলেন ক্যারিবিয়ান নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে। এবং বত্রিশ বছর পরেও লয়েডের সামনে শেষ হাসি হাসলেন গাওস্কর। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসার জেরম টেলর যখন ধবন আর রোহিত দুই ভারতীয় ওপেনারকে অল্প রানে আউট করে মাঠে আগুন ঝরাচ্ছিলেন, সেই সময় সৌরভের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় গাওস্কর কিন্তু কিছুটা আশঙ্কা প্রকাশ করে ফেলেন এই ম্যাচে ভারতের সাফল্য নিয়ে।

সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন।

গাওস্করের আশঙ্কাকে যিনি শেষমেশ অমূলক প্রমাণ করলেন টিমের প্রবল চাপের মুখে নিজের ব্যাটের জোরে, সেই ধোনির মুখে কিন্তু বেশি প্রশংসা শামির নেতৃত্বে টিমের বোলিং বিভাগ নিয়ে। এর পরে ভারত অধিনায়ক জয়ের কৃতিত্ব দিলেন ‘টিম এফোর্ট’-কে। নিজের ব্যাটিং প্রসঙ্গ এল তিন নম্বরে। এবং ধোনির মতে, ইনিংসটা তাঁকে যথেষ্ট তৃপ্তি দিয়েছে। তাঁর কাছে একটা ধুন্ধুমার ৪০ রান কিংবা আজকের মতো ধৈর্যশীল ইনিংসের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই। যদি সেই দু’টোই দলের জয়ের সাহায্যে লাগে।

ধোনি মনে করছেন রায়না (এ দিন ২৫ বলে ২২ করেন) ভারতের ব্যাটিং লাইন আপে পাঁচ নম্বর জায়গাটা নিয়ে সমস্যা অনেকটা মিটিয়েছেন। জাডেজারও প্রচুর প্রংশসা করলেন। যদিও তাঁর ‘স্যর জাডেজা’কে ধোনি ব্যাট হাতেও জ্বলে উঠতে দেখতে চান পরের ম্যাচে।

নক আউট পর্ব পাকা। সেখানে ভারতকে কত দূর দেখছেন? ধোনির ঠান্ডা জবাব, নক আউট শুরু হওয়ার আগে এই নিয়ে বেশি ভাবতে তিনি নারাজ। বরং এ ভাবে ভাবতে চাইছেন ক্যাপ্টেন কুল সেই বিশেষ দিনে যারা ভাল খেলবে তারাই জিতবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

world cup 2015 debashis sen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE