Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বড় অঘটন ছাড়া ইস্টবেঙ্গলের খেতাব জয় অসম্ভব

তামিলনাড়ুর রেফারি শ্রীকৃষ্ণ ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজাতেই টিভির ক্লোজ ফ্রেমে ধরা পড়ল পরপর দুটো মুখ। প্রথম মুখে হাইভোল্টেজ হাসি। দ্বিতীয়টায় আশাভঙ্গের তীব্র বেদনা। চার্চিল সিইও ভালাঙ্কা আলোমাও এবং ইস্টবেঙ্গল কোচ আর্মান্দো কোলাসো। কিন্তু তিনি! তিনি কোথায়? মাঠের বাইরে থেকে যার কৌশলী চালে এই পাশাপাশি হাসি-কান্নার দুই বিপরীত চিত্র!

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:২১
Share: Save:

চার্চিল ব্রাদার্স-১ (রাজু)

ইস্টবেঙ্গল-০

তামিলনাড়ুর রেফারি শ্রীকৃষ্ণ ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজাতেই টিভির ক্লোজ ফ্রেমে ধরা পড়ল পরপর দুটো মুখ। প্রথম মুখে হাইভোল্টেজ হাসি। দ্বিতীয়টায় আশাভঙ্গের তীব্র বেদনা। চার্চিল সিইও ভালাঙ্কা আলোমাও এবং ইস্টবেঙ্গল কোচ আর্মান্দো কোলাসো। কিন্তু তিনি! তিনি কোথায়?

মাঠের বাইরে থেকে যার কৌশলী চালে এই পাশাপাশি হাসি-কান্নার দুই বিপরীত চিত্র!

তেরো দলের আই লিগে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে শেষ ধাপ থেকে দলের এক ধাপ উপরে উঠে আসায় চার্চিল আলোমাওয়ের মেয়ে ভালাঙ্কা বুকে ক্রস আঁকার ফাঁকে হাসিমুখে গোয়ার মাপুসা স্টেডিয়ামের দর্শকদের সঙ্গে সারলেন শুভেচ্ছা বিনিময়। আর একরাশ হতাশা নিয়ে আর্মান্দো ফোনে বললেন, “চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারটা আর আমাদের হাতে থাকল না। লড়াই এখন অসম্ভব কঠিন।”

আর মাঠের বাইরের সেই তৃতীয় ব্যক্তি? যাঁর স্ট্র্যাটেজি কাজে লাগিয়ে পাঁচ বারের আই লিগ খেতাব জয়ী আর্মান্দোর এ বারের জয়ের রাস্তা এবড়োখেবড়ো করে দিল গোয়ার দলটি, চার্চিলের সেই বঙ্গসন্তান টিডি সুভাষ ভৌমিক জ্বরের জন্য মাঠে যাননি। ফোনে বললেন, “ছেলেদের বলেছিলাম, জেতা-হারা নয়। নিজেদের কথা ভেবে খেলো। তবে আজ জিতলেও লাফালাফির কিছু নেই। ২২ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট হল আমাদের। শনিবার ইউনাইটেডের কাছে হারলে কিন্তু আবার আইসিইউ- তে ঢুকতে হতে পারে।” একটু থেমে ইস্টবেঙ্গলের ঘরের ছেলে আবার— “কলকাতায় গিয়ে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে ড্র করেছিলাম। জিততে গেলে ভাল খেলার পাশাপাশি দশ ভাগ চান্স ফ্যাক্টর লাগে। আজ সেটা লেগে গিয়েছে।”

২২ ম্যাচে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে আর্মান্দোর ইস্টবেঙ্গল যে ‘লিগ লিডার’ বেঙ্গালুরুর চেয়ে চার পয়েন্ট পিছনে (২২ ম্যাচে ৪১ পয়েন্ট) রয়ে গেল সেটা এই চান্স ফ্যাক্টর আর চার্চিলের স্টপার রাভানন এবং গোলকিপার ললিত থাপার জন্য। বড় কিছু অঘটন না ঘটলে আর্মান্দোর কলকাতায় এসে আই লিগ জয়ের স্বপ্ন অসম্ভবই বলা চলে। এ দিন ২৩ মিনিটে লাল-হলুদ বক্সের সামনে থেকে শরণ সিংহ গোলে শট নিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে চলে যায় বাঁ-দিকে। বল গোলের দিকে যাচ্ছে ভেবে মুহূর্তের জন্য দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলের রাইট ব্যাক অভিষেক এবং দুই স্টপার অর্ণব-রাজু। বিপক্ষের সেই ভুলের সুযোগ নিয়ে চিলের মতো ছোঁ মারার ভঙ্গিতে ছুটে এসে বাঁ পায়ের জোরালো ইনস্টেপে ১-০ করেন চার্চিলের রাজু ইয়ুমনাম।

এর পরেই রাভাননের নেতৃত্বে চার্চিলের রক্ষণ ইস্টবেঙ্গল আক্রমণ ভাগের সামনে পাঁচিল তুলে দিয়েছিল। তা সত্ত্বেও প্রথমার্ধেই একাধিক গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন চিডি এবং সুয়োকা। দ্বিতীয়ার্ধে নিষ্প্রভ জোয়াকিমের বদলে তুলুঙ্গাকে নামানোয় লাল-হলুদ আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ে। কিন্তু সেই বিপর্যয় থেকে সুভাষের দলকে রক্ষা করলেন কিপার ললিত থাপা। ম্যাচের সেরাও তিনিই।

শেষের ৪৫ মিনিট ইস্টবেঙ্গলের প্রশ্নাতীত প্রাধান্য নিয়ে সংশয় নেই। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। কোচের দাবি, গোয়ার মাঠে বড় ঘাসের এবং আর্দ্রতার জন্য এ দিন উইথ দ্য বল রান কিংবা পাসিং কোনওটাই শেষ তিন ম্যাচের মতো হচ্ছিল না সুয়োকাদের। তার উপর দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে খাবরা মাঠের বাইরে চলে যাওয়ায় শেষ দশ মিনিট দশ জনে খেলতে হয় ইস্টবেঙ্গলকে।

বুধবার রাতেই পুণে রওনা দিল আর্মান্দো ব্রিগেড। শনিবার ম্যাচ পুণে এফসি-র বিরুদ্ধে। ইস্টবেঙ্গল কোচ আগাম বলে রাখলেন, “খাবরা নেই, রবার্টকেও চোটের জন্য পাব না। কাজটা আরও কঠিন হয়ে গেল।”

ইস্টবেঙ্গল: অভ্র, অভিষেক, রাজু, অর্ণব, রবার্ট (নওবা), জোয়াকিম (তুলুঙ্গা), খাবরা, লোবো, লালরিন্দিকা, সুয়োকা, চিডি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

east bengal i league
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE