আবার একজোট। গুরু মর্গ্যানের সঙ্গে শিষ্য মেহতাব (বাঁ দিকে)। পাশে নির্মল ছেত্রী। ছবি: পিটিআই
বুড়ো রেনেডি সিংহ-কে নিলেন? ও তো বহু দিন খেলার মধ্যেই নেই!
ভ্রু কুঁচকে পরিচিত হাসি হাসলেন ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। “আমি যদি ক্রিকেট টিম করতাম তা হলে কিন্তু সচিন তেন্ডুলকরকে নিতাম।”
ক্রিকেটের মাস্টার ব্লাস্টার তাঁর টিমের অন্যতম মালিক। ক্রিকেট মাঠে সচিনের নামের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া বিশেষণের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই কেরল টিমের নাম হয়েছেকেরল ব্লাস্টার্স এ সি। মুম্বইতেই অন্য একটি অনুষ্ঠানে গেলেও সুপার লিগের ফুটবল বাজারে আসেননি ভারতীয় খেলাধুলার আইকন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে দেখা করতে উদগ্রীব হয়ে আছেন মেহতাব হোসেন, নির্মল ছেত্রীরা। এমনকী ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচও। “ওর সঙ্গে কলকাতায় একবার দেখা হয়েছিল। তবে এখানে নিশ্চয়ই সচিনের সঙ্গে দেখা হবে।” বলছিলেন নিয়মিত ইংল্যান্ড ক্রিকেট টিমের খেলা দেখা বর্তমান কেরল কোচ।
আগের দিন কলকাতা দলের ফুটবলার নির্বাচন দেখে ঠোঁট উল্টেছিলেন। হোসে ব্যারেটোর এ দিনের ফর্ম দেখে অবশ্য মর্গ্যানের স্বীকারোক্তি, “ব্যালান্সড দল হয়েছে।” গ্রেসরুমে এসেছিলেন মেহতাব হোসেন, নির্মল ছেত্রীদের সঙ্গে নিয়ে। “আমার টিমের ১৪ ফুটবলারের মধ্যে ছ’জন আমার কোচিংয়ে ইস্টবেঙ্গলে খেলেছে। আড়াই মাসের টুর্নামেন্ট। চেনা ফুটবলার নিলে দল সাজাতে সুবিধা,” বলছিলেন মর্গ্যান। যিনি আজ, বুধবার রাতেই অস্ট্রেলিয়া পাড়ি দিচ্ছেন। বারবার ঘুরে ফিরে এল ইস্টবেঙ্গল প্রসঙ্গ। মনে হল, কর্তারা তাঁর সঙ্গে কথা বলেও কোচ না করায় মর্গ্যান ক্ষুব্ধ। “ইস্টবেঙ্গল আমার কাছে অতীত। সামনের দিকে তাকাতে চাই।” বহু দিন পর মর্গ্যানের পাশে বসে মেহতাব-নির্মলদের উচ্ছ্বাসও ছিল চোখে পড়ার মতো। “এই কোচের চেয়ে আমাদের কে বেশি ভাল চেনে!” বলছিলেন মেহতাব।
সৌরভ যে আসবেন না, সেটা জানাই ছিল। তবে সংগঠকরা ঘোষণা করা সত্ত্বেও আসেনন সচিন তেন্ডুলকর, রণবীর কপূর, সলমন খানরা। তাই মর্গ্যানকে ঘিরেই ছিল ভিড়। শুধু বাংলা নয়, কেরল-মুম্বইয়ের সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখেও পড়তে হল মর্গ্যানকে। জানালেন, কোনও বিদেশি ফুটবলার তিনি আনছেন না। “আই লিগের মতো বিদেশি নির্বাচন যে বড় ফ্যাক্টর সেটা আইএসএলে বুঝে গিয়েছি,” বলছিলেন ব্রিটিশ কোচ।
ফুটবল বাজারের প্রথম দিন যতটা উত্তেজনা ছিল, ফুটবলার নির্বাচন ঘিরে তার চেয়ে কিছু কম ছিল না এ দিন। কলকাতা এবং কেরল ছাড়া প্রায় সব দলই সময় নিয়েছে ফুটবলার বাছতে। নির্ধারিত পাঁচ মিনিটের শেষ সেকেন্ডে ফুটবলার বেছেছে। প্রথমে ঠিক ছিল, ফুটবলাররা টেবিলে বসবেন। কিন্তু কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি আপত্তি করায় শেষ পর্যন্ত তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
মুম্বইতে ডাক পাওয়া ফুটবলাররা মঙ্গলবারের মতোই বসেছিলেন বড় স্ক্রিনের সামনে। ফুটবল বাজার চলছে যে বলরুমে, তার পাশের ঘরে। চব্বিশ ঘণ্টা অপেক্ষার পর কলকাতা তাঁকে নিয়েছে। শান্ত, অভিজ্ঞ ক্লাইম্যাক্স লরেন্সের গলায় তাই উত্তেজনা। “বহু দিন পর কলকাতায় ফিরছি। আটলেটিকোর জার্সি পরে খেলব কোনও দিন ভবিইনি।” তাঁর পাশেই গোমড়া মুখ স্টিভন ডায়াসের। “বহু দিন স্বপ্ন দেখেছি কলকাতায় খেলব। এ বারও হল না। আগের দিন শুনেছিলাম কলকাতা আমাকে নেবে। কেন নিল না বলুন তো?” বলছিলেন ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সফল মুখ। সিকিম থেকে ফোনে উত্তেজিত শোনাল হোসে ব্যারেটোর টিমে ঢুকে পড়া সঞ্জু প্রধানকেও। “ধরেই নিয়েছিলাম কলকাতা নেবে। ওটাই তো আমার খেলার সেরা জায়গা।” ক্লাইম্যাক্স-স্টিভনরা এ দিনই ফিরে গেলেন নবি-সুব্রত-মেহতাবদের সঙ্গে। যাওয়ার আগে যে যাঁর টিমের নতুন কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে গেলেন নানা বিষয়ে। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, ডেম্পোর পরিচিত কর্তা নয়। একেবারে নতুন সব কর্তা।
ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মধ্যে ভারতীয় ফুটবলারদের বিক্রির সাফল্য এবং দেশজোড়া মিডিয়ার আগ্রহ দেখে খুশি আইএমজি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট জেফারসন স্ল্যাগ। জনপ্রিয় ক্রিকেট আইপিএলের দল বিক্রি থেকে বিপণন, সবই করেছে আইএমজি। তার সঙ্গে অবশ্য আইএসএলের তুলনায় যেতে চান না জেফারসন। চান না তাঁর সঙ্গে ক্রিকেটের ললিত মোদীর তুলনা হোক। বলছিলেন, “মোদী আরও অনেক বড় কাজের সঙ্গে যুক্ত। আমার সঙ্গে তুলনা করবেন না।” পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, “আমরা আইপিএল জনপ্রিয় করার দায়িত্ব পেয়েছিলাম। এটার কিন্তু আমরাই মালিক!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy