‘ভেরি ভেরি স্পেশ্যাল’ ক্লাসে মনোজ তিওয়ারি। সোমবার ইডেনে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
রঞ্জি ট্রফিতে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে মহাযুদ্ধের ছ’দিন আগে ‘সান্তা ক্লজ’-এর সন্ধান পেয়ে গেলেন মনোজ তিওয়ারি।
বড়দিনের পোশাকে আসেননি ঠিকই, কিন্তু তাঁর নামটা অনুমান করা কঠিন নয়।
ভিভিএস লক্ষ্মণ। পরিস্থিতি ধরলে, বড়দিনের আগে বঙ্গ ব্যাটসম্যানের নিঃসন্দেহে যিনি ব্যাটিং-সান্তা।
দেওধর ট্রফি-উত্তর মনোজের ব্যাটে রান নেই। বাংলার হয়ে দু’টো রঞ্জিতে রান পাননি। আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে রঞ্জির তৃতীয় ম্যাচ। যার আগে বেশ কিছু ভেরি ভেরি স্পেশ্যাল টিপস পেয়ে গেলেন বাংলার মনোজ।
যেমন?
যেমন মনোজকে বলা হল, দু’টো একটা ম্যাচে রান পাওনি, সেটা নিয়ে ভেবো না। তুমি খুব ভাল ব্যাটসম্যান। ম্যাচ উইনার। রান তুমি পাবে। তাই দু’টো ম্যাচের ব্যর্থতা নিয়ে ভাবতে বসে আত্মবিশ্বাস কমিয়ে ফেলার কোনও যুক্তি নেই। মনে রাখতে হবে, মুম্বই জাহির খানকে নামাতে পারে বাংলার বিরুদ্ধে। আর জাহির খেললে, ওর সুইং সামলাতে যতটা টেকনিকের প্রয়োজন হবে, ঠিক ততটাই দরকার পড়বে আত্মবিশ্বাসের।
“কেন নিজের উপর চাপ তৈরি করবে মনোজ? ও কোথায় রান করল না করল, সেটা আমি ঠিকই খেয়াল রাখি। পরিষ্কার বলছি, ও ম্যাচ উইনার। দেওধর তো একা পূর্বাঞ্চলকে জিতিয়ে দিল। হ্যাঁ, ও দু’একটা ম্যাচে পারেনি। কিন্তু সেটা কোন ক্রিকেটারের হয় না? আমি শুধু ওকে বলব, নিজের উপর চাপটা না তৈরি করতে। মাত্র দু’টো ম্যাচে রান পায়নি বলে আত্মবিশ্বাস কমিয়ে ফেলার কোনও মানে হয় না,” এ দিন মনোজের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ সেশনের পর বলে দেন লক্ষ্মণ। যিনি মনোজের টেকনিক বা আত্মবিশ্বাস কোথাওই কোনও সমস্যা দেখছেন না। বলছেন, “আরে, সিমিং পরিবেশে ভাল ডেলিভারিতে যে কেউ আউট হয়ে যেতে পারে। মনোজের টেকনিক, আত্মবিশ্বাস সবই ঠিক আছে। সেই আত্মবিশ্বাসটাই ধরে রাখতে হবে।”
এ দিন মনোজ ছাড়াও শ্রীবৎস গোস্বামী, অরিন্দম দাসদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলতে দেখা যায় লক্ষ্মণকে। শোনা গেল, মনোজ সহ বেশ কয়েক জনকে নাকি জাহির নিয়ে আলাদা পরামর্শ দিয়ে রেখেছেন ভিভিএস। বলেছেন, জাহির সবে ফিট হয়ে নামবে বলে ওকে হালকা ভাবে নিও না। ওকে ঠিকঠাক খেলতে হলে ওর বলের রিলিজটা খেয়াল করতে হবে। বাংলা টিম ম্যানেজমেন্টও জাহির খেলতে পারেন ধরে নিয়েই এগোচ্ছে।
এমনিতে আগামী রবিবার থেকে রঞ্জি ট্রফির তৃতীয় ম্যাচে একটাই সম্ভবত বদল দেখা যাবে। শিবশঙ্কর পালের জায়গায় বাংলা জার্সি পরবেন সৌরভ সরকার। শিব মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে বাংলা দল থেকে এ দিন বাদ পড়লেন। প্রীতম চক্রবর্তীকে তাঁর জায়গায় নেওয়া হল। অভিমন্যু ঈশ্বরণকে রাখা হল আবার ব্যাকআপ ওপেনার হিসেবে। নির্বাচকরা এখনই বিরাট রদবদল টিমে চাইছেন না। মুম্বই ম্যাচটা তাঁরা দেখে নিতে চান। বলে দেওয়া হচ্ছে, রঞ্জি ট্রফিতে বাংলা কোন দিকে যাবে, নির্ধারণ করবে এই ম্যাচ। টিমে যদি বড়সড় পরিবর্তনের দরকার হয়, তা হলে হবে মুম্বই ম্যাচের পরে।
‘ভিশন ২০২০’-র ব্যাটিং কোচের আবার মনে হচ্ছে, একটা হারে এতটা ‘গেল গেল’ করার কিছু হয়নি। বাংলা ব্যাটিং নিয়েও ভিভিএস দুশ্চিন্তার কিছু দেখছেন না। বরং শ্রীবৎস গোস্বামীর উন্নতি নিয়ে তুমুল প্রশংসা করে গেলেন। বলে গেলেন, শ্রীবৎসকে এখন শুধু ৬০-৭০-এ আটকে থাকলে চলবে না। ওগুলোকে সেঞ্চুরিতে রূপান্তরিত করতে হবে। রঞ্জি অভিযানে লক্ষ্মীরতন শুক্ল-র টিমকে শুধু দুটো ব্যাপারে নজর দিতে বলছেন। এক) ধারাবাহিকতা। উদাহরণ হিসেবে কর্নাটক যেমন। দেশের প্রত্যেকটা টুর্নামেন্টে যারা নির্দিষ্ট একটা পারফরম্যান্সের মান ধরে রেখে গিয়েছে। দুই) শুরুটা কেমন হল সেটা নয়, শেষটা কী ভাবে ভাল করা যায় সেটাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া। উদাহরণ বাংলার বিরুদ্ধে কর্নাটকের শ্রেয়স গোপালের ইনিংস। লক্ষ্মণ বলে দিলেন, শ্রেয়স গোপালের উইকেট যদি বাংলা তাড়াতাড়ি তুলে নিতে পারত, তা হলে ম্যাচটাও তারা জিতে যেতে পারত। অর্থাৎ, শুরুর মতো শেষটাও ভাল হওয়া দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy