সেরা উঠতি স্পিনার আমির গনিকে সৌরভের টিপস। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাংলায় না কি ভাল ব্যাটসম্যান নেই! এমনই ধারণা খোদ প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের। তাই এ রাজ্যে ভাল ব্যাটসম্যান তৈরির শপথ নিয়ে শুরু করলেন ভিশন ২০২০-র অভিযান।
মুথাইয়া মুরলীধরন, ওয়াকার ইউনিসরা তো আগেই এসে বেছে গিয়েছেন এ শহরের প্রতিভাবান স্পিনার, পেসারদের। বিভিন্ন জেলাতেও সিএবি কোচেদের অভিযান শেষ। গত তিন দিনে প্রায় দেড়শো ব্যাটসম্যানের ঝাঁক থেকে এ বার সৌরভ বের করে নিলেন সেরা ২৫। নাম ঘোষণা হবে শনিবার। তার পরই শুরু হবে প্রকল্পের আসল কাজ। বুধবার ব্যাটসম্যান বাছাই পর্বের শেষে সৌরভ বলেন, “সবে তো কাজ শুরু হল। এখন দেখা যাক, কত দূর এগোনো যায়। সিনিয়র-জুনিয়র বলে আলাদা কিছু নেই। যাদের পারফরম্যান্স ভাল, তারাই এই ক্যাম্পে সুযোগ পেয়েছে।”
বাংলায় ব্যাটসম্যানের খরা নিয়ে সৌরভের বক্তব্য, “এখানকার ব্যাটিং নিয়েই বেশি চিন্তা।” এমনকী, বাংলার রঞ্জি দলের ব্যাটসম্যানদের নিয়েও তেমন দরাজ সার্টিফিকেট দিতে পারলেন না আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩৮ সেঞ্চুরির মালিক। সেই সঙ্গে শামি, দিন্দাদের যে এখনও শেখার আছে, তাও জানিয়ে দিলেন বঙ্গ ক্রিকেটের ত্রাতা সৌরভ। তাঁর বক্তব্য, “মনোজ, ঋদ্ধি, শামি, দিন্দাদেরও প্রয়োজনে ঘষা-মাজা হতে পারে। এরা বাংলার হয়ে খেলার পক্ষে হয়তো ফিট। কিন্তু আমরা তো টেস্ট ক্রিকেটার তৈরির উদ্দেশ্য নিয়েই এই ক্যাম্পটা করছি।”
এই রাজ্যের পরিকাঠামোর সমস্যা নিয়ে যে সৌরভ অতটা চিন্তিত নন, তা সাফ জানিয়ে দিয়ে বলেন, “দিল্লি, মুম্বইয়েই বা কী এমন বিশাল বিশাল মাঠে লিগের খেলা হয়? শিবাজি পার্কই বা কী এমন বড় মাঠ? আমাদের যা আছে, তাই নিয়েই কাজ করতে হবে। তা ছাড়া কল্যাণী, সল্টলেক আর ইডেনে তো খারাপ পরিকাঠামো নেই। দরকারে আমার অ্যাকাডেমিকেও কাজে লাগানো যেতে পারে। তা ছাড়া স্থানীয় লিগ ম্যাচ আরও বেশি দিনের করে লাভ হয় কি না, তাও দেখতে হবে।” এই প্রকল্পের পেস বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনিস, যিনি পাকিস্তানের কোচ হতে পারেন বলে খবর, তাঁর সঙ্গে এখনও কথা হয়নি বলে জানান সৌরভ। তবে পাক কোচের পদ পেয়ে ওয়াকার এই দায়িত্ব ছাড়তে চাইলে তাঁকে আটকে রাখার পক্ষে নন তিনি। বুধবার সল্টলেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে বাছাই শিবিরের শেষ দিনে উঠতি স্পিনার আমির গনির সঙ্গে বেশ খানিকক্ষণ কথা বলেন সৌরভ। নেটে তাঁর বোলিংয়ে বিরুদ্ধে ব্যাটও করেন। তাঁর ব্যাপারে বিশেষ কোনও পরিকল্পনা আছে কি না, জিজ্ঞাসা করায় সৌরভ বলেন, “পরিকল্পনা তো ওর থাকবে। আমরা ওকে সাহায্য করব। আমার ধারণা, ও ঠিক পথে এগোতে পারলে ভারতের হয়ে খেলবে।” এ দিন সৌরভের সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা নিয়ে গনি বলেন, “মুরলী স্যর যা যা করতে বলে গিয়েছেন, সেগুলোই ঠিকঠাক করে যেতে বললেন দাদা।” মুরলী, সৌরভ দু’জনেই যে তাঁকে শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে বলেছেন, তা জানিয়ে গনি বলেন, “এটাই এখানে সবচেয়ে বড় পাওয়া আমার। কী ভাবে শারীরিক সক্ষমতা ও টেকনিক, দুটোতে একসঙ্গে উন্নতি করলে দেশের হয়ে খেলতে পারব, এটা এই ক’দিনে ভাল ভাবে বুঝে নিলাম। সেই রাস্তাটা দেখিয়ে দিয়েছেন মুরলী স্যার, সৌরভ স্যাররা। সেই পথেই হাঁটার চেষ্টা করছি।”
ভিশন ২০২০ নিয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত গনি বললেন, “দারুণ একটা ব্যাপার হচ্ছে। আমাদের মতো ক্রিকেটারদের এটাই দরকার ছিল। এটা বুঝতে পারছি যে, টেস্ট ক্রিকেটার তৈরির লক্ষ্য নিয়েই এই ক্যাম্প শুরু হয়েছে। মুরলী স্যর আপাতত ফিটনসে ও বেসিক স্কিলে উন্নতির কাজ দিয়ে গিয়েছেন। বলের গতিও বাড়াতে বলেছেন। এগুলো ঠিকঠাক হয়েছে কি না দেখে নিয়ে ভবিষ্যতে আরও অনেক কিছু শেখাবেন বলেছেন। এখন সেই দিনগুলোর দিকেই তাকিয়ে আছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy