পূর্বাঞ্চল ক্রিকেটাররা এখন নাকি ম্যাচটা কোনও মতে শেষ হলে বাঁচেন!
না, ইনিংস হারের সম্ভাবনা কারণ নয়। সেটা যে সম্ভাব্য ভবিতব্য, অবিশ্বাস্য কোনও ইনিংস লক্ষ্মীরতন শুক্ল বা সৌরভ তিওয়ারির ব্যাট থেকে শুক্রবার না বেরোলে যে আটকানো যাবে না, পূর্বাঞ্চল ক্রিকেটাররা তা বুঝতে পারছেন।
তাঁরা বাঁচতে চান লাহলি পিচ থেকে!
হরিয়ানার লাহলি পিচ বরাবরের সবুজ হয়, পেসার-বন্ধু হয়, সেটা কারও অজানা নয়। দলীপ ট্রফি সেমিফাইনালেও অন্য রকম কিছু ছিল না। কিন্তু সেটা যে এমন ‘আনপ্লেয়েবল’ উইকেটে পরিণত হবে ভাবতে পারেননি লক্ষ্মীরতনরা।
এক দিনে চোদ্দো উইকেট, তা-ও কিনা মাত্র ১১৪ তুলতে না তুলতে! দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম ইনিংসে তোলা ২৬৪ রানের জবাবে পূর্বাঞ্চলের প্রথম ইনিংস উড়ে গেল মাত্র ৮৪ রানে! দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও ধস। দিনের শেষে পূর্বাঞ্চল ৩০-৪! আর ‘অভিশাপের’ ছবি এ রকম: নটরাজ বেহরা অভিমন্যু মিঠুনের বল লাফিয়ে আঙুলে লাগল। দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেন করতে পারলেন না।
ঋদ্ধিমান সাহা— কিপিং করতে গিয়ে আঙুলে লেগেছে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে পারবন কি না টিম জানে না।
মনোজ তিওয়ারি— বাংলার সেরা ব্যাট দু’ইনিংসে মিলিয়ে করলেন ১২! দু’বারই তাঁর ঘাতক এস শরথ।
দু’ইনিংস মিলিয়ে পূর্বাঞ্চলের সাত-সাতটা উইকেট তুলে নিলেন দক্ষিণাঞ্চলের এক মিডিয়ার পেসার। ডেল স্টেইনের গতির ধারেপাশে তাঁর গতি নয়, আর বোলিংয়ের চেয়ে ব্যাটিংয়ের তাঁর বেশি নামডাক। ইনি, স্টুয়ার্ট বিনি।
সন্ধের দিকে লাহলি থেকে ফোনে লক্ষ্মীরতন শুক্লের মতো কেউ কেউ বলছিলেন, বিনি নন। পূর্বাঞ্চলকে আসলে শেষ করে দিয়েছে লাহলি পিচ। “গত কাল যখন আমরা বল করছিলাম, তখন উইকেটটা সফ্ট ছিল। সেখানে কিছু ক্ষত তৈরি হয়। আজ দেখলাম, উইকেট আনপ্লেয়েবল হয়ে গিয়েছে। কোন বল কখন যে লাফাবে কেউ জানে না,” ফোনে বলছিলেন লক্ষ্মী। শোনা গেল, ঋদ্ধিমান সাহাকে এখনই বলা হচ্ছে যে, এই পিচে ঝুঁকি নিয়ে ব্যাট না করতে। আঙুলে এমনিই লেগেছে। আরও বড় কিছু ঘটে গেলে মুশকিল হবে। এক সপ্তাহ পরেই শ্রীলঙ্কা সিরিজ। সুবিধেজনক অবস্থায় থেকেও এমন অবিশ্বাস্য ভরাডুবির আরও দু’টো কারণ পাওয়া যাচ্ছে। প্রথমত, নিয়মিত ওপেনার নটরাজ বেহরার চোট পেয়ে যাওয়া। তাতে নাকি টিমের কম্বিনেশন বড় ধাক্কা খেয়েছিল। দ্বিতীয়ত, খারাপ আম্পায়ারিং।
কেউ কেউ মোক্ষম প্রশ্ন তুলছেন, পূর্বাঞ্চল বনাম দক্ষিণাঞ্চলের ম্যাচে কী ভাবে দক্ষিণের আম্পায়ার পোস্টিং পেতে পারেন! অভিযোগ, রবিন উথাপ্পার নিশ্চিত এলবিডব্লিউ এক বার দেওয়া হয়নি। রবিনের সেঞ্চুরি না হলে এমন ভরাডুবি হয়তো আটকানো গেলেও যেতে পারত। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে উথাপ্পাদের দ্বিতীয় ইনিংসে নামার সম্ভাবনা খুবই কম। পূর্বাঞ্চলের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করছেন শেষ স্বীকৃত জুটি। সৌরভ তিওয়ারি (২ ন:আ:) ও লক্ষ্মী (১০ ন:আ:)। ইনিংস হার বাঁচাতে এখনও চাই দেড়শো রান।
এর পরেও কি কিছু সম্ভব? ম্যাচে বাংলা ক্রিকেটারদের মধ্যে একমাত্র ঝকঝকে দেখানো লক্ষ্মী শুধু বললেন, “অপমান কমাতে চেষ্টা করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy