একজন কৃষক পরিবারের সম্তান। অপরজনের বাবা দিনমজুর। সর্বদা দারিদ্রের ঘেরাটোপে থাকা এমন দুই পরিবার থেকেই দুই ছাত্র জায়গা করে নিয়েছে বাংলা স্কুল ফুটবলের অনূর্ধ্ব ১৭ দলে। মালদহ থেকে এই প্রথম কোনও ছাত্র সুযোগ পেল এই বিভাগের বাংলার ফুটবল দলে। পুরাতন মালদহের ওই দুই ছাত্রের সাফল্যে খুশির হাওয়া জেলার ক্রীড়া মহল থেকে স্কুলেও।
পুরাতন মালদহের পোপড়ার হাটগাছি গ্রামের বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর গুড্ডা সোরেনের ছেলে নিরেন সোরেন। নিরেন পোপড়া ইশ্বরটোলা হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। আর পুরাতন মালদহেরই যাত্রাডাঙা গ্রামের বসবাস করে আকমান হোসেন। আকমান যাত্রাডাঙা কেবি হাই মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা পেশায় কৃষক। নিরেন ও আকমান এবার সুযোগ পেয়েছেন অনূর্ধ্ব ১৭ বাংলা স্কুল ফুটবল দলে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক ধরে প্রথমে ব্লক স্তরের স্কুলগুলিকে নিয়ে ফুটবল ম্যাচ হয়েছে। তারপরে জেলা স্তরে চলে সেই ম্যাচ। এর পরেই বাছাই করা খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠন করা হয় জেলা দল। রাজ্য স্তরে স্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতায় বাংলা দলের নির্বাচকদের নজর কাড়ে নিরেন এবং আকমান। আগামী ৪ জুন হায়দ্ররাবাদে প্রথম ফুটবল ম্যাচ রয়েছে। তার জন্য আগামী ৩ জুন জেলা থেকে রওনা দেবে এই দুই ছাত্র। পোপড়া ঈশ্বরটোলা হাই স্কুলের শারীরশিক্ষার শিক্ষক রাম বাস্কে বলেন, ‘‘এখন খেলাধুলা করে কোনও সুযোগ না পাওয়ায় ছেলেদের খেলার প্রতি উৎসাহ নেই।’’ জেলাতে খেলাধূলার কোনও পরিকাঠামো নেই বলেও জানান তিনি। এই পরিস্থিতিতে লড়াই করে দুই ছাত্রের জেলা থেকে বাংলার দলে সুযোগ পাওয়া দারুণ বিষয় বলে জানান তিনি। নিরেন ও আকমান জানিয়েছে, খেলার জন্য স্কুল থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছে তারা। বাংলা দলের হয়ে ভালো করে খেলাই এখন তাদের প্রধান লক্ষ্য বলে জানায় তারা। আগামী দিনে বাংলার ফুটবল দলেও খেলার স্বপ্ন দেখছে এই দুই কিশোর।
মালদহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য শান্তানু সাহা বলেন, ‘‘পুরাতন মালদহের প্রত্যন্ত গ্রামের ওই দুই ছাত্র স্কুল স্তরের বাংলা দলে সুযোগ পাওয়ায় আমরা খুবই খুশি।’’ এই ঘটনায় জেলার ফুটবল খেলোয়াড়েরা উৎসাহিত হবে বলে দাবি তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের তরফ থেকেও ওদের সব রকম সাহায্য করা হবে।’’ ওই দুই ছাত্রকে সংবর্ধনা দেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলেও জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy