সাউদাম্পটনে রোহিত শর্মা। শনিবার। ছবি: পিটিআই
বিদেশের মাঠে ভারতের টেস্ট জয়গুলোর মধ্যে দিনকয়েক আগের লর্ডস জয় অন্যতম সেরা। গুরুত্বপূর্ণ টস হেরে ওদের সবুজ উইকেটে প্রথম ব্যাট করতে হয়েছিল। ইংল্যান্ডের পক্ষে এর চেয়ে ভাল শুরুর আশা অসম্ভব ছিল। কিন্তু দিনের শেষে ব্যাপারটা সুযোগের অপচয় হয়ে দাঁড়াল। ইংল্যান্ড যদি প্রথম দু’টো সেশনের সুবিধে নিতে পারত, তা হলে ম্যাচের ফল হয়তো অন্য রকম হত। এখন তৃতীয় টেস্টে কুক, বেল আর ইংল্যান্ডের অন্য ব্যাটসম্যানদের উপর বড় স্কোর তৈরি করার ব্যাপারে প্রচুর চাপ।
লর্ডসে প্রথম ইনিংসে রাহানের সেঞ্চুরি আমার দেখা বিদেশের মাঠে ভারতীয়দের খেলা অন্যতম সেরা ইনিংস। যদি না সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস হয়! বিজয় আবার একটা অসাধারণ ইনিংস খেলল। বেচারার দুর্ভাগ্য সামান্য ক’টা রানের জন্য লর্ডসে টেস্ট সেঞ্চুরি করার দুর্লভ সম্মান থেকে বঞ্চিত হল। ততক্ষণে চতুর্থ দিনের পিচ মজার ব্যবহার শুরু করে দিয়েছিল। ফলে দ্বিতীয় ইনিংসে তিনশো প্লাস রান তোলার পিছনে ভারতের মনোযোগের প্রশংসা করতে হবে। উল্টো দিকে একমাত্র গ্যারি ব্যালান্স বাদে ইংল্যান্ডের কোনও ব্যাটসম্যানের থেকে বিশেষ করে শেষ দিনে সেই মানসিকতা আর প্রয়োগ ক্ষমতার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
ভারতীয় বোলারদের বিশেষ করে ভুবনেশ্বর আর ইশান্তের অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। প্রথম দু’দিন অ্যান্ডারসন অ্যান্ড কোম্পানির তুলনায় পিচ আর পরিস্থিতির ফায়দা তোলাটা ইশান্তদের পক্ষে কঠিন ছিল। তা সত্ত্বেও প্রথম ইনিংসে ওরা লাইন-লেংথে একেবারে টাইট ছিল। আর দ্বিতীয় ইনিংসে তো ইশান্ত বাউন্সার দিয়েই ইংল্যান্ডকে পরাজয়ের গহ্বরে ঠেলে দিল। আমাদের বোলাররা ইশান্তদের থেকে শিক্ষা নিতেই পারে।
ধোনি শর্ট পিচড্ বোলিং নিয়ে জুয়া খেলেছিল এবং সেটা কাজ দিয়েছে। তবে আমি মনে করি জাডেজার বোলিংয়ের সময় ধোনি ফিল্ড প্লেসিং নিয়ে বড্ড বেশি নাড়াচাড়া করেছে। যেটা নিয়ে পরের টেস্টে ওর ভাবা দরকার। আর যেহেতু ধোনির ব্যাটিংকে এখনও একটু নড়বড়ে দেখাচ্ছে আর কোহলি ওর অফস্টাম্পের সঠিক অবস্থান নিয়ে সমস্যায় পড়ছে, সে কারণে রোজ বোলে ভারত এক জন বাড়তি ব্যাটসম্যান নিয়ে নামার কথা ভাবতেই পারে। রোজ বোলের উইকেট সম্ভবত একটু বেশি দ্রুত হবে। আমি হলে বিনির জায়গায় রোহিতকে খেলিয়ে ওকে ছয় নম্বরে পাঠিয়ে ধোনিকে সাত নম্বরে নামিয়ে আনতাম।
সবশেষে একটা অন্য কথা। অ্যান্ডারসন-জাডেজা দু’জনেই কঠিন মানসিকতার ক্রিকেটার। ওদের লর্ডস-কাণ্ডের ঘটনাটা আমি স্বচক্ষে দেখিনি বলে কোনও মন্তব্য করব না। শুধু এটুকু বলছি, টেস্ট ম্যাচ হল ক্রিকেটের সব ক’টা ফর্ম্যাটের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন। আর সেটাই দর্শকদের টানে। ইংল্যান্ড অধিনায়ক হিসাবে আমি কঠিন ক্রিকেটটা খেলতেই পছন্দ করতাম। যেমন সৌরভও পছন্দ করত। কিন্তু ক্রিকেট খেলাটার ক্ষতি করে প্লেয়ারদের গেমসম্যানশিপের সীমানা অতিক্রমের পক্ষে আমি কোনওকালেই নই। লর্ডসের ঝামেলাটায় যেহেতু অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ উঠেছে, সে জন্য আইসিসি-ই মনে হয় ঘটনার বিচারের সেরা জায়গা। তবে আশা করব, তার চাপে পরের টেস্টে ওই দুই ক্রিকেটারের তাদের নিজেদের দলের হয়ে সেরা পারফরম্যান্স করায় ব্যাঘাত ঘটবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy