পরের বিশ্বকাপে প্রতিযোগী টিমের সংখ্যা চোদ্দো থেকে কমিয়ে দশ করার সিদ্ধান্তকে তিনি বলছেন ‘পিছিয়ে যাওয়া’। এ-ও বলছেন, অ্যাসোসিয়েট দেশগুলির প্রতি ‘অবিচার’ হচ্ছে। সব মিলিয়ে সিডনির এক চ্যারিটি ডিনারে আইসিসির সমালোচনায় অপ্রত্যাশিত রকমের ধারালো সচিন তেন্ডুলকর!
সচিন বলেছেন, “শুনলাম পরের বিশ্বকাপে মাত্র দশটা দল খেলবে! শুনে বেশ হতাশ লাগছে। ক্রিকেটার হিসাবে চাই খেলাটায় বিশ্বের আরও অনেক দেশ আগ্রহী হয়ে উঠুক। তাই দশ টিমের বিশ্বকাপ করা মানে ক্রিকেটকে পিছিয়ে দেওয়া।” তাঁর সাফ কথা, আইসিসি যদি প্রকৃতই ক্রিকেটের বিশ্বায়ন চায়, তা হলে অ্যাসোসিয়েট সদস্য দেশগুলোকে আরও বেশি করে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ দিতে হবে। পরের বিশ্বকাপে চোদ্দো থেকে বাড়িয়ে প্রতিযোগী টিমের সংখ্যা পঁচিশ করতে বলছেন সচিন। সঙ্গে মাঝের চার বছরে অ্যাসোসিয়েট টিমগুলোর সঙ্গে আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশের ‘এ’ টিমগুলোর নিয়মিত সিরিজ খেলার প্রস্তাবও রেখেছেন।
আরও বেশি দেশকে ক্রিকেটে টানতে হলে আইসিসির উচিত ছোট টিমগুলোর উৎসাহ বাড়ানো, বলছেন সচিন। পরের বিশ্বকাপ থেকে ছোট দলগুলিকে ছেঁটে ফেলার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে আইসিসির সিইও ডেভ রিচার্ডসন বলেছিলেন, “বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে লড়াই সে সব টিমের মধ্যেই হওয়া উচিত যারা শক্তির দিক থেকে সমান। তা হলেই প্রতিযোগিতা জমবে।” সচিন যে যুক্তি চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন, “প্রত্যেকটা বিশ্বকাপে ছোট টিমগুলো কোনও না কোনও অঘটন ঘটিয়ে চমকে দিয়েছে। প্রতিভা প্রমাণ করার উপযুক্ত মঞ্চ পেলে এমন অঘটন ওরা ধারাবাহিক ভাবে করে দেখাবে। কিন্তু সেই মঞ্চটা ওদের নিয়মিত দিতে হবে।” এর পর তিনি যোগ করেন, “এখন যে ব্যবস্থা চলছে, তাতে চার বছর অন্তর ছোট টিমগুলোকে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় মঞ্চে নামিয়ে দিয়ে আশা করা হয় ওরা অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত-সহ সেরাদের সঙ্গে সমান তালে টক্কর দেবে। এটা কিন্তু ছোট টিমগুলোর প্রতি অবিচার!”
দশ টিমের বিশ্বকাপের বিরোধিতায় যাঁরা স্বোচ্চার, সেই আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড বা স্কটল্যান্ডের ক্যাপ্টেন প্রেস্টন মমসেনের মতো অনেকেই সচিনের এই কথায় উৎসাহিত হবেন। চলতি বিশ্বকাপেই আইরিশরা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে এবং আফগানরা বিশ্বকাপ অভিষেকেই স্কটদের হারিয়ে সমান শক্তির টিমদের লড়াই নিয়ে রিচার্ডসনের তত্ত্বকে চাপে ফেলেছে। সচিন বলছেন, “ক্রিকেটের বিশ্বায়ন চাইলে আমাদের বরং ভেবে দেখতে হবে পরের বিশ্বকাপে টিমের সংখ্যা চোদ্দো থেকে বাড়িয়ে কী করে পঁচিশ করা যায়।” তাঁর নিজের প্রস্তাবে রয়েছে পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর ‘এ’ টিমের সঙ্গে অ্যাসোসিয়েট টিমগুলোর নিয়মিত সিরিজ খেলা।
সচিনের হিসাব, বিশ্বায়ন চাইলে ক্রিকেটের আকর্ষণ বাড়াতে হবে। তাঁর কথায়, “প্রশ্নটা ছ’সাতটা বড় টিমের নয়। আসল হল আরও বেশি মানুষকে ক্রিকেটে আকৃষ্ট করা। যার জন্য ছোট টিমগুলোকেও সঙ্গে নিতে হবে। লড়াই যত বেশি আর যত উত্তেজক হবে, ততই লোকে আগ্রহী হবে ক্রিকেটে। সমর্থকদের সংখ্যা বাড়বে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy