যাঁদের গোলে মহমেডানে রামধনু। শনিবার বারাসতে। —নিজস্ব চিত্র
মহমেডান-৭ (বিজয়, অজয়, দীপক, ডলফিন, দীপেন্দু, দীপঙ্কর, নুরুদ্দিন) : বিএনআর-০
অজ্ঞতার মাসুল দিয়ে লিগের দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছে মোহনবাগান। সাদা-কালো জার্সি কিন্তু তাড়া করছে লিগের অশ্বমেধের ঘোড়া ইস্টবেঙ্গলকে।
ডুডু, কাতসুমিদের নিয়েও যখন চূড়ান্ত ব্যর্থ আই লিগ জয়ীরা, তখন একঝাঁক তরুণ আর অনামী ফুটবলার নিয়ে ফুল ফোটাচ্ছেন মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়। রেলকে সাত গোল দিয়ে কলকাতা লিগে নিজের টিমেরই এক চমকপ্রদ রেকর্ড স্পর্শ করে ফেললেন মহমেডান কোচ।
স্বাধীনতার আগে ১৯৪০-এ কালীঘাটকে সাত গোল দিয়েছিল মহমেডান। ২০১৩-এ পুলিশ এসিকে একই ব্যবধানে বিধ্বস্ত করেছিল সাদা-কালো। তার পরে শনিবার আবার। এ বার বিধ্বস্ত বিএনআর।
কিন্তু মহমেডান এ ভাবে নিজেদের ইতিহাস ছুঁতে পারবে সেটা কি কেউ ভাবতে পেরেছিল? মনে হয় না। কিন্তু এ দিন সেটাই করে দেখালেন ডলফিন-তন্ময়রা। সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হল, সাতটা গোল করেছেন সাত ফুটবলার। কেউই দু’টো গোল করেননি। যা সাধারণত হয় না। ডুডু-ডংদের মতো মহমেডান টিমে কোনও তারকা ফুটবলার নেই। ফলে একজন ফুটবলারের উপর নির্ভরশীল নয় মৃদুলের টিম। সেটাই সম্ভবত তাতিয়ে রাখছে পুরো টিমকে। সবাই মিলে গোলের জন্য ঝাঁপাচ্ছেন।
রেলের এই টিম অবশ্য পাতে দেওয়ার মতো নয়। কোনও বিভাগই শক্তিশালী নয়। ইস্টবেঙ্গল হাফ ডজন দিয়েছিল। মহমেডান সেই স্কোরও টপকে গেল। প্রথমার্ধের ৩-০ খেলার শেষে হল ৭-০। রেল এত জঘন্য খেলল যে, সেটা ১০-০ হলেও বলার কিছু ছিল না।
সাত গোলে জিতেও অবশ্য মহমেডান কোচ মৃদুল ছিলেন সংযমী। তাঁর টিমও যে লিগ খেতাবের দাবিদার, এ ধরনের উত্তেজিত ঘোষণার রাস্তায় হাঁটেননি। বরং বলেছেন, ‘‘আমার দলের কাজ তিন পয়েন্ট পাওয়া। সেটা পেয়েছি। প্রতি ম্যাচেই পেতে চাই। তার পর দেখা যাবে কে কোথায় দাঁড়িয়ে।’’ মৃদুল নিজেকে দাবিদার না বললেও লিগ টেবল অবশ্য অন্য কথা বলছে। শীর্ষে থাকা ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে মহমেডানের পয়েন্টের ব্যবধান পাঁচ। ফলে অনেক কিছুই হতে পারে।
কোচ সংযত থাকলেও, সাত গোলের জয় কিন্তু ফুটবলারদের তাতিয়ে দিয়েছে। ঘানা থেকে আসা ডলফিন যেমন বললেন, ‘‘ভারতে আসার পর আজই প্রথম গোল করলাম। লিগ কিন্তু আমরাও জিতে যেতে পারি।’’ মোহনবাগান থেকে বাতিল এবং এ দিন ম্যাচের সেরা দীপেন্দু দুয়ারি জানিয়ে গেলেন, ‘‘কারও কাছে কিছু প্রমাণ করার নেই। দলকে সাহায্য করতে পেরে খুশি আমি। দেখি কত দূর যেতে পারি।’’
কলকাতা থেকে লিগের ম্যাচ বারাসতে সরে যেতেই মনে হল আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন সাদা-কালো সমর্থকরা। দলের এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের দিনেও তাই সে ভাবে উচ্ছ্বাস চোখে পড়েনি। মহমেডানের খেলায় যা বেশ বেমানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy