ভারতীয় ক্রিকেটার ও বোর্ড কর্তাদের মধ্যে কাদের বিরুদ্ধে স্বার্থ সংঘাতের অভিযোগ উঠতে পারে, তার তালিকা চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। যার জবাবে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সুনীল গাওস্কর, রবি শাস্ত্রী, কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তের মতো প্রাক্তনদের নাম আদালতে টেনে আনলেন বোর্ডের আইনজীবীরা। মনে করা হচ্ছে শ্রীনিবাসন ছাড়া স্বার্থ সংঘাতে অন্যরাও জড়িত, তা প্রমাণ করতেই এই চাল শ্রীনি শিবিরের।
এক ডজনেরও বেশি নামের যে তালিকা বোর্ড এ দিন পেশ করল, তাতে পাঁচ প্রাক্তন ক্যাপ্টেন ছাড়াও রয়েছেন ভারতের হয়ে খেলা ও জাতীয় দলের কোচিংয়ে যুক্ত লালচাঁদ রাজপুত ও বেঙ্কটেশ প্রসাদ। আবার সংবাদসংস্থার খবর, অনিল কুম্বলের নামও রয়েছে এই তালিকায়।
আদালতে তালিকা পেশ করে বোর্ড আইনজীবী সিএ সুন্দরম জানান, বোর্ডের টেকনিক্যাল কমিটিতে থাকার সময় পুনে ওয়ারিয়র্সেও খেলতেন সৌরভ। তিনি এখন ধারাভাষ্যকার। বিচারকরা প্রশ্ন করেন, “এখনও কি সৌরভ খেলেন?” বলেন, “সৌরভ তাঁর ক্রিকেট-জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ধারাভাষ্য দেন। কারা জিতল-হারল, তাতে তাঁর আগ্রহ থাকার কথা নয়। ওঁদের ভূমিকা অনেকটা মহাভারতের সঞ্জয়ের মতো।” এই প্রসঙ্গে একটি টিভি চ্যানেলে গাওস্কর এ দিন বলেন, “বোর্ডের অভ্যন্তরীন কাজে কখনও যুক্ত ছিলাম না। আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলে নিযুক্ত হই, নির্বাচিত নয়।” শ্রীকান্ত নিয়ে বলা হয়েছে, তিনি জাতীয় নির্বাচন কমিটিতে ছিলেন এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদের মেন্টর ছিলেন। ২০০৮-’১১ নির্বাচক প্রধান থাকার পাশাপাশি তিনি যে সিএসকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডরও ছিলেন, তা অবশ্য আদালতকে জানানো হয়নি।
বোর্ডের গঠনতন্ত্রে যে ধারার বলে এই স্বার্থ সংঘাত, সেটা নিয়ে নতুন করে ভাবার পরামর্শ দিয়ে বিচারকরা বলেন, “যে জাতীয় নির্বাচন কমিটিতে আছে, সে আইপিএল টিমের মেন্টর! এটা কী করে সম্ভব? ধোনি জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন। দল বাছাইয়ে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে। সে-ই সিএসকে-কে প্রোমোট করছে! এই ধারা থাকাই উচিত নয়।”
স্বার্থ সংঘাতের ধারণার বিরুদ্ধেও এ দিন জোরালো সওয়াল করেন শ্রীনির আইনজীবী কপিল সিব্বল। শ্রীনির হয়ে বলেন, “বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদের পাশাপাশি আমার কোনও টিমের মালিকানা থাকা স্বার্থ-সংঘাত হলে আমার বিরুদ্ধেই রায় দিন। সারা বিশ্বে এমন উদাহরণ প্রচুর আছে। এর সঙ্গে বেটিং-ফিক্সিংয়ের সম্পর্ক নেই। ’৯০-এর দশকে গড়াপেটার সময় তো এই নিয়ম ছিল না। তখনও তো হত।” এই প্রসঙ্গে বিচারকদের পাল্টা মন্তব্য, “আপনি বোর্ড প্রেসিডেন্ট, এক দলের মালিক পক্ষের এমডিও। আপনার স্বার্থ সংঘাতের জন্যই আপনার জামাই বেটিংয়ে জড়িত। দুর্ভাগ্য, এ সব বন্ধ করার কোনও সিস্টেম বোর্ডে নেই।”
যা পরিস্থিতি, তাতে নতুন বছরের উত্সব শ্রীনি উত্কন্ঠা নিয়ে কাটাবেন। কারণ তার আগে স্পট-ফিক্সিং মামলা ফয়সালা হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। আগামী সপ্তাহ থেকেই আদালতে শীতের ছুটি। ৫ জানুয়ারি আদালত খোলার দিন। তার আগে রায় দেওয়া হবে না বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy