অ্যাডিলেড টেস্ট যারা দেখেছে, সবাই বিরাট কোহলির নায়কোচিত কিন্তু দিনের শেষে ব্যর্থ রান তাড়াকে মনে রাখবে। একইসঙ্গে মুরলী বিজয়ের নামটাও। যিনি কিনা জোড়া ধাক্কা খেয়েছিলেন প্রথম টেস্টের শেষ দিন এক রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা এবং ভারতকে জেতাতে না পারা।
গাব্বায় দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন একটা খেদ বিজয় অন্তত মেটাতে পেরেছেন। দুর্ধর্ষ ১৪৪ করে। সেঞ্চুরির রানটাও আবার কিনা এ মাঠেই দশ বছর আগে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই অনবদ্য সেঞ্চুরির ক্রমিক সংখ্যার সমান! এবং খেলার পর সাংবাদিক সম্মেলনে বিজয়ের মুখে সেই কথাও! “নিজের ছেলেবেলায় আমার সিনিয়রদের খেলা অনেক অসাধারণ ইনিংস আমি যাকে বলে গিলে খেয়েছি। বারবার দেখে দেখে। তেন্ডুলকর, দ্রাবিড়ের অ্যাডিলেড সেঞ্চুরি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সৌরভ, লক্ষ্মণের সেঞ্চুরি। বিশ্বক্রিকেটের অন্যতম সেরা টিম অস্ট্রেলিয়া। আর সেরার বিরুদ্ধে বড় রান করাটা সব সময় আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। শুধু ক্রিকেটার হিসাবে নয়, মানুষ হিসেবেও,” বলে দিলেন বিজয়।
ফিল হিউজের অকালমৃত্যুতে ব্রিসবেন টেস্ট সিরিজের প্রথম থেকে দ্বিতীয় হয়ে পড়া। সেখানেই স্টিভন স্মিথের অস্ট্রেলিয়ার ৪৫তম টেস্ট ক্যাপ্টেন হওয়া। এ সবের থেকেও আজ যেন বেশি জলন্ত বাস্তব গাব্বার তীব্র গরম। সেই সাঁইত্রিশ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কিন্তু বিজয় ফায়দা তুলেছেন দাবি করছেন। বললেন, “সত্যিই আজ একটা গরম ছিল বটে। মাঠে সবার পরীক্ষা নিয়েছে। ওদের বোলারদের তো দেখলাম ঘেমে-নেয়ে অস্থির! আমার মনে হচ্ছিল, ওরা একটা সময় ক্লান্ত হয়ে পড়বে। তার জন্য আমি ক্রিজে অপেক্ষা করেছি। আর পরিস্থিতির পুরো ফায়দা তুলেছি।”
গাব্বার গরমটা তাঁর নিজের জন্যও একটা পরীক্ষা ছিল স্বীকার করে নিয়ে বিজয় যোগ করলেন, “আজ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ব্যাট করাটা আমার নিজের কাছে মনে হয়েছে ব্যাপারটা মানসিক ভাবে যত না ক্লান্তির, তার চেয়ে বেশি মনের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ। গরমে বেজায় কষ্ট পেয়েছি ঠিকই। তবে দেশের হয়ে যখন কেউ খেলছে, তার এ সব সামলানোর অস্ত্রও নিজের ভেতর মজুত থাকতে হবে। আমি নিজের ফিটনেস নিয়ে প্রচুর খেটেছি। এই পর্যায়ের ক্রিকেটে পারফর্ম করার জন্য অবশ্যই পরিকল্পনার দরকার। এবং আমি সে রকম পরিকল্পনা নিয়েই এই সিরিজে ব্যাট করছি। যতটা সম্ভব বেশি ব্যাটিংয়ের প্রাথমিক শর্তগুলোর কাছাকাছি থাকছি। আর দেখছি এই মুহূর্তে সেটা আমাকে সাহায্য করছে।”
এ দিন সেঞ্চুরি করেও তাঁর ব্যাট না তোলার প্রসঙ্গ উঠল। এবং বিজয় রাখঢাক না করে বলে দিলেন, “নিজে কত রান করলাম তার দিকে আজ আমার হুঁশ ছিল না। স্কোরবোর্ডে কেবল টোট্যাল রানটার দিকে নজর রেখে ব্যাট করছিলাম। অজিঙ্ক নন স্ট্রাইকার এন্ড থেকে এসে বলল, “মেট, তুমি তো হান্ড্রেডে পৌঁছে গিয়েছ!” তখন আমার সম্বিত ফেরে। কিন্তু মনে হয় ব্যাপারটা ভালই হয়েছে। অ্যাডিলেডে নিরানব্বইয়ে আউট হওয়ার সময় আমি নিজের স্কোরটা কিন্তু জানতাম!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy