Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সংস্কারে নেমেও সিএবি-র প্রাপ্তি সেই বিতর্ক

প্রাক্তন সিএবি যুগ্ম সচিব সুজন মুখোপাধ্যায়কে প্রধান কিউরেটরের শূন্যস্থানে বসানোর প্রাথমিক ভাবনা। যে কোনও বোর্ড ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে এ বার থেকে গোটা মাঠ ঢেকে ফেলার নির্দেশিকা জারি।

যে মাঠের সংস্কার প্রয়োজন বিশ্বকাপের আগে।

যে মাঠের সংস্কার প্রয়োজন বিশ্বকাপের আগে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:১১
Share: Save:

প্রাক্তন সিএবি যুগ্ম সচিব সুজন মুখোপাধ্যায়কে প্রধান কিউরেটরের শূন্যস্থানে বসানোর প্রাথমিক ভাবনা।

যে কোনও বোর্ড ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে এ বার থেকে গোটা মাঠ ঢেকে ফেলার নির্দেশিকা জারি।

সিএবি গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান দেবব্রত দাসের ক্ষোভে ফেটে পড়া। বিতর্কিত কিউরেটর প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নতুন বিষোদগার আর তাতে ক্ষুব্ধ প্রবীরের পাল্টা।

ইডেন-কলঙ্কের চব্বিশ ঘণ্টা পর সমান্তরাল ভাবে দু’টো ব্যাপারই চলল সিএবিতে। এক দিকে, ড্যামেজ কন্ট্রোল। যেখানে দীর্ঘ দিনের কিউরেটর প্রবীরবাবুর জায়গায় এ বার কে, তা নিয়ে জল্পনা চলল গোটা দিন। ঠিক হয়ে গেল যে, কোনও বোর্ড ম্যাচের আগে ইডেনকে আর উন্মুক্ত রাখা হবে না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ‘কোরিং’ পদ্ধতি ব্যবহারে ইডেনের নীচের মাটি তুলে বালি ভরে আউটফিল্ডে কাদা জমা বন্ধ করা যায় কি না, ভাবনা-চিন্তা হল। আবার একই সঙ্গে আরও একটা ব্যাপার ঘটল। সেটা, ইডেন-কলঙ্ককে ঘিরে কাদা ছোড়াছুড়ি। দোষারোপ-পাল্টা দোষারোপের যুদ্ধ।

ঠিক কী হল গোটা দিনে?

শোনা গেল, এ দিন ইডেনে পৌঁছে সরাসরি মাঠকর্মীদের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনায় বসে যান সিএবির ঘোষিত প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। মাঠকর্মীদের কাছে গত রাতের বিপর্যয়ের কারণ জানতে চাওয়া হলে তাঁরা নাকি সৌরভকে বলে দেন, প্রবীরবাবুর নির্দেশ মেনে তাঁরা চলেছেন। যতটা ঢাকতে বলা হয়েছিল, ততটাই ঢাকা হয়েছে। বিতর্কিত ইডেন কিউরেটর সিএবি আসেননি এ দিন। ইডেনকে চিরবিদায়ের স্টান্সও বদলাননি। সিএবিও তাঁকে ফেরাতে আর ইচ্ছুক নয়। বরং তাঁর জায়গায়, কয়েকটা বিকল্প ভাবা হচ্ছে।

যেমন, সুজন মুখোপাধ্যায়। সিএবি-র প্রাক্তন যুগ্ম সচিব কল্যাণীর বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির পিচ তৈরির দায়িত্বে আছেন। সিএবি-র একটা গোষ্ঠী চাইছে তাঁকে। কিন্তু আর একটা অংশের যুক্তি হল, প্রবীরবাবুর মতো সুজনও যুগ্ম সচিব থেকে কিউরেটর হবেন। মানে, হাইপ্রোফাইল পদ থেকে নিম্ন পদে আসবেন। সেক্ষেত্রে আর একটা প্রবীর মুখোপাধ্যায় যে তৈরি হবে না, গ্যারান্টি নেই। বাকি কর্তাদের সঙ্গে কাজ করার সময় তিনিও ইগো সমস্যায় ভুগতে পারেন, যা নাকি ভুগতেন প্রবীরবাবু। এই গোষ্ঠীর বক্তব্য, বাংলা যদি বাইরে থেকে কোচ আনতে পারে, তা হলে কিউরেটর কেন নয়? আর ঘরের লোক চাইলে প্রবীরের সহকারী সঙ্কর্ষণ পাল আছেন। কাজ জানেন। আগামী ১৫ অক্টোবরের রঞ্জি পিচের দায়িত্বও তো তাঁকেই দেওয়া হয়েছে।

এত পর্যন্ত ঠিকই ছিল। কিন্তু তখনও গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান দেবব্রত দাস বিস্ফোরণ ঘটাননি। সন্ধের দিকে আচমকাই যিনি বলতে থাকেন, আভ্যন্তরীণ রাজনীতি করে তাঁকে বিপর্যয়ের সঙ্গে জড়ানো হচ্ছে। বলে দেন, ‘‘যাঁরা আমার নামে অভিযোগ তুলছেন যে প্রবীরদার নিশ্চেষ্ট থাকা দেখে কিছু বলিনি তাঁদের বলি আপনারা কোথায় ছিলেন গত কাল? প্রবীরদাকে ফোন করেছিলেন? না আমাকে?’’ যে বা যাঁরা আদতে কে— চাপাচাপি সত্ত্বেও বলেননি দেবব্রত। ঘটনা হল, গত রাতে সিএবি-র একাংশের অভিযোগ ছিল, প্রবীরকে কথা শুনতে না দেখেও তা উপরমহলে জানাননি গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান। যা নিয়ে দেবব্রতর হুঙ্কার, ‘‘প্রবীরদা কথা শুনছেন না দেখে সঙ্গে সঙ্গে আমি সেটা সৌরভকে জানাই। সৌরভ ফোনে বলেও ওঁকে মাঠ ঢাকতে। আমি বলতে প্রবীরদা বললেন, ও সব উনি বুঝে নেবেন। মাঠকর্মী বাড়ানোর প্রস্তাবেও প্রবীরদা ‘না’ করে দেন। না জেনে বলা খুব সহজ আসলে।’’

রাতে যা শুনে ফোনে প্রবীরের গর্জন, ‘‘দেবব্রত তখন ছিল কোথায়? ও তো ব্যবসা দেখতে চলে গেল! সম্পূর্ণ মিথ্যে এটা।’’ সঙ্গে সংযোজন, ‘‘আর ও তো গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান। মাঠে থাকলে মাঠ ঢাকার নির্দেশ দিত না হয়। ওর তো ক্ষমতা আছে সে সবের।’’

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ইডেন ছেড়ে বেরনোর সময় এ দিন আর কিছু বলেননি। কী-ই বা বলতেন? যে দিনটা হওয়ার কথা ছিল ড্যামেজ কন্ট্রোলের, সেখানেও তো শেষে থাকল একটাই শব্দ। বিতর্ক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE