আইসিসি চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহরকে ‘ডুবন্ত জাহাজ ছেড়ে চলে যাওয়া ক্যাপ্টেন’-এর সঙ্গে তুলনা করলেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট অনুরাগ ঠাকুর। শনিবার মিডিয়াকে তিনি যা বলেছেন, তাতে ভারতীয় বোর্ড ও ক্রিকেটের বিশ্ব নিয়ামক সংস্থার সম্পর্কের তিক্ততাটা একেবারে স্পষ্ট হয়ে উঠল।
লোঢা বিতর্কের মাঝে শশাঙ্ক মনোহরের বিসিসিআই ছেড়ে চলে যাওয়া, আইসিসি থেকে লভ্যাংশ কমে যাওয়া ইত্যাদি নানা ব্যাপার নিয়ে ঝামেলাটা চলছিলই। কিন্তু এ রকম প্রকাশ্যে এর আগে আসেনি। এ বার যা হল ঠাকুরের বিস্ফোরক মন্তব্যের পর। এ দিন অনুরাগ বলেন, ‘‘শশাঙ্ক মনোহরকে যখন বোর্ডের দরকার ছিল, তখনই তিনি মাঝপথে বোর্ড ছেড়ে চলে যান। যেন কোনও ডুবন্ত জাহাজের ক্যাপ্টেন সবার আগে জাহাজ ছেড়ে চলে গেলেন।’’
ভারতীয় বোর্ড যখন সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে লড়াইয়ের মাঝপথে, তখনই আইসিসি চেয়ারম্যানের পদ পাওয়ার উদ্দেশ্যে বোর্ড প্রেসিডেন্টের পদ ছেড়ে চলে যান তিনি। অনুরাগ সেই ঘটনারই উল্লেখ করে বলেন, ‘‘ ‘বিগ থ্রি’ নিয়ে আইসিসি-র নিয়ম যখন বদল করা হয়েছিল, তখন মনোহরই ছিলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। মনোহরের উচিত ছিল, বিসিসিআই সদস্যদের তখনই সব কিছু জানানো। কিন্তু সে সব না করে উনি তখন আইসিসি-তে একটা বড় পদের খোঁজে ছিলেন।’’
মনোহরের আইসিসি-কেও এক হাত নিয়ে অনুরাগ বলেন, ‘‘শ্রীলঙ্কা, নেপালের মতো দেশে বাইরে থেকে কেউ নাক গলাতে এলে আইসিসি তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। আর ভারতীয় ক্রিকেটে যখন গোলমাল চলছে, তখন আইসিসি চুপচাপ। সব দিক থেকেই আমাদের বিপদে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। ঘরে এবং আইসিসি-তেও। যেটা ভারতীয় ক্রিকেটের পক্ষে মোটেই ভাল নয়। একেই লোঢা সুপারিশের জন্য আমরা সমস্যায় পড়েছি। তার উপর ও দিকে আইসিসি-ও আমাদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে। তাই ভারতীয় ক্রিকেটের দুর্দিন চলছে বলা যায়।’’
তারই মধ্যে ক্রিকেট দুনিয়ায় যে ভারত এখনও নেতা, সেই ঘোষণা করে বোর্ড প্রেসিডেন্ট সাফ বলে দেন, ‘‘ক্রিকেটবিশ্বের ছোট দেশগুলোর স্বার্থ দেখা আমাদের কর্তব্য। আমাদেরই তা দেখতে হবে। মনোহর যতই বলুন বিসিসিআই নিয়ে তিনি ভাবতে রাজি নন, কিন্তু বিসিসিআই যে আইসিসি-র সদস্যদের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তাই সবাই চুপ থাকলেও আমাদেরই বলতে হল যে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাজেট আমাদের জানাতে হবে।’’
যে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চেয়েও অনেক বেশি বাজেট চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য তৈরি করা হয়েছে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সঙ্গে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তুলনা করে অনুরাগ বলেন, ‘‘বিশ্বকাপে ৪৯ দিনে ৫৬টা ম্যাচ। আটটা ভেনু। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তিনটে ভেনু, ১৫টা ম্যাচ। মাত্র ২০ দিনের টুর্নামেন্ট। ফলে প্রতিটা ম্যাচের জন্য খরচ তিনগুন বেশি। এক একটা পয়সা বাঁচানো মানে এক একটা পয়সা রোজগার করা। ১০৫টা সদস্য দেশের পক্ষেই যা জরুরি। এটা আইসিসি না ভেবে অযথা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য বিশাল খরচের বাজেট করেছে।’’ এর প্রতিবাদ করেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বয়কটের হুমকিও দিয়েছে ভারত। শেষ পর্যন্ত তা হলে সেটা হবে আইসিসি-র বিরুদ্ধে বোর্ডের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy