Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
‘ফ্যাব ফোর’কে দেড় কোটি

শ্রীনি জমানার ৫৬ কোটিতে আক্রান্ত ক্রিকেটাররাও

নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের জমানায় গত দু’বছরে আইনি খাতে খরচের অঙ্কটা কত? শুনলে আঁতকে উঠতে হবে। ৫৬ কোটি! ভুল হল। বলা উচিত, এখনও পর্যন্ত ছাপ্পান্ন কোটি এবং যা দিন-দিন বাড়ছে! যা খরচ হয়েছে বোর্ডের নানাবিধ মামলার পিছনে। যার অধিকাংশে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িয়ে শ্রীনি নিজে। তাঁর নিজের মামলার পিছনে যেমন জলের মতো টাকা খরচ হয়েছে, তেমনই আইপিএল দুর্নীতি নিয়ে তদন্তের পিছনেও চলে গিয়েছে প্রচুর। শেষ উদাহরণ যেমন লোঢা কমিশন। যাদের একটা সিটিংয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ। এখনও পর্যন্ত হয়েছে নাকি ছাব্বিশটা সিটিং এবং যা আরও বাড়বে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০৩:৫১
Share: Save:

নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের জমানায় গত দু’বছরে আইনি খাতে খরচের অঙ্কটা কত?

শুনলে আঁতকে উঠতে হবে। ৫৬ কোটি! ভুল হল। বলা উচিত, এখনও পর্যন্ত ছাপ্পান্ন কোটি এবং যা দিন-দিন বাড়ছে!

যা খরচ হয়েছে বোর্ডের নানাবিধ মামলার পিছনে। যার অধিকাংশে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িয়ে শ্রীনি নিজে। তাঁর নিজের মামলার পিছনে যেমন জলের মতো টাকা খরচ হয়েছে, তেমনই আইপিএল দুর্নীতি নিয়ে তদন্তের পিছনেও চলে গিয়েছে প্রচুর। শেষ উদাহরণ যেমন লোঢা কমিশন। যাদের একটা সিটিংয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ। এখনও পর্যন্ত হয়েছে নাকি ছাব্বিশটা সিটিং এবং যা আরও বাড়বে।

আর এমন ক্রমবর্ধমান আইনি খরচপাতি মেটাতে গিয়ে নানাবিধ সমস্যার মুখে পড়ছে বোর্ড। যে ভারতীয় বোর্ডকে ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে ধোনি ক্রিকেট-সংস্থা বলা হত, তাদের এখন খরচ কমানোর কথা ভাবতে হচ্ছে। বাজেটে কাঁটছাঁটের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে বোর্ডের ফিনান্স কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানেই শ্রীনি-জমানার এই আইনি খরচ প্রকাশ্যে আসার পর শোনা গেল উপস্থিত কেউ কেউ বিস্ফারিত হয়ে যান অঙ্ক শুনে। ফিনান্স কমিটির চেয়ারম্যান জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া— তিনিও নাকি প্রবল চিন্তায় পড়ে যান। দ্রুত ‘কস্ট কন্ট্রোলের’ গোটা কয়েক পরিকল্পনা ছকে ফেলা হয়।

এক, পরিকাঠামোগত খাতে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাদের অনুদান পঞ্চাশ থেকে পঁচাত্তর কোটি করবে ভেবেছিল বোর্ড। ঠিক হয়, সেটা আর হবে না।

দুই, একান্ত গুরুত্বপূর্ণ না হলে অন্যান্য মামলা এই পরিস্থিতিতে না চালানোর কথা ঠিক করে ফেলা হয়।

তিন, বোর্ডের আয়ের একটা অংশ ক্রিকেটাররা সাধারণত পেয়ে থাকেন। গত দু’বছরে বোর্ড ক্ষতির মুখে পড়ায় নাকি ঠিক হয়েছিল যে, ক্রিকেটারদের আর্থিক দিক নিয়ে আপস করা হবে না। নিজেদের ফান্ড দিয়ে তাদের প্রাপ্য দিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু ছাপ্পান্ন কোটির পাল্লায় পড়ে সেটাও করা যাচ্ছে না।

চার, ঠিক হয়েছে বার্ষিক অনুদান দেওয়ার আগে রাজ্য সংস্থাদের অ্যাকাউন্টস দেখা হবে। দেখা হবে, সত্যিই টাকা ক্রিকেটের পিছনে খরচ হচ্ছে কি না। দেখেশুনে এ বার থেকে অনুদান দেওয়া হবে।

এ দিন রাতে নয়াদিল্লি থেকে ফোনে ফিনান্স কমিটির সদস্য তথা সিএবি কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে বলছিলেন, ‘‘একটা ক্রিকেট সংস্থায় ছাপ্পান্ন কোটি মামলা চালাতে গিয়ে খরচ হচ্ছে, মানা যায় না। এই কাটছাঁটগুলো করা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না।’’ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, শ্রীনি জমানায় এমন কর্মকাণ্ডের ধাক্কায় এ বার ক্রিকেটাররাই আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের আয়ের উপরও এর প্রভাব পড়ছে।

বৈঠকে আরও কয়েকটা সিদ্ধান্ত হল। যেমন মেয়েদের ক্রিকেটের ‘গ্রেডেশন’ চালু করা। যেমন জুনিয়র ক্রিকেটারদের দৈনিক ভাতা বাড়ানো। আরও একটা বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। ভারতীয় ক্রিকেটের ‘ফ্যাব ফোর’-কে ‘ওয়ান টাইম বেনিফিট’ হিসেবে দেড় কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রাহুল দ্রাবিড় এবং ভিভিএস লক্ষ্মণ এই টাকা পেতে চলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE