Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ভারগাসের জোড়া গোলে ফাইনালে চিলি

স্বপ্নের আরও কাছে পৌঁছল চিলি। ঘরের মাঠেই কোপা আমেরিকা ট্রফি তোলার আশা টিকিয়ে রাখল অ্যালেক্সিস সাঞ্চেজের দল। সেমিফাইনালের লড়াইয়ে পেরুকে ২-১ হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার থেকে মাত্র একটা জয় দূরে চিলি।

গোলোর পর উচ্ছ্বাস চিলির খেলোয়াড়দের। ছবি: এএফপি

গোলোর পর উচ্ছ্বাস চিলির খেলোয়াড়দের। ছবি: এএফপি

সোহম দে
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৫ ১০:৫৩
Share: Save:

স্বপ্নের আরও কাছে পৌঁছল চিলি। ঘরের মাঠেই কোপা আমেরিকা ট্রফি তোলার আশা টিকিয়ে রাখল অ্যালেক্সিস সাঞ্চেজের দল। সেমিফাইনালের লড়াইয়ে পেরুকে ২-১ হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার থেকে মাত্র একটা জয় দূরে চিলি।

সোমবার রাতের এই কোপা ম্যাচ যেমন দেখল হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তেমনই আবার দেখল কেন চিলি এখন হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক ফুটবলের অন্যতম শক্তিশালী দল। দলে যেমন গতি। তেমন ফুটবলারদের দ্রুত মুভমেন্ট। পেরুর বিরুদ্ধেও সেটাই হল। শুরুর থেকেই সাঞ্চেজ-ভালিদিভিয়ারা আক্রমণ তৈরি করতে থাকে। উইং দখল করে। ছোট ছোট পাস খেলে। সুইচ প্লে করে চিলি আত্মবিশ্বাসী মেজাজে শুরু করে। তবে চিলির ঘরের মাঠে খেললেও সাহস দেখায় পেরু। গুটিয়ে বসে না থেকে আক্রমণের জবাবে আক্রমণ করে। জেফারসন ফারফানের হেড যেমন দুর্ভাগ্যজনক ভাবে বারপোস্টে লাগে। আবার লোবাতনের শট নেটের ধারে গিয়ে লাগে।

ফুটবলারদের তর্কাতর্কি বা রেফারির পকেট থেকে লাল কার্ড বেরোনো— এ সবই চেনা ছবি হয়ে গিয়েছে কোপায়। চিলি-পেরু ম্যাচেও ধরা পড়ল এক ছবি। প্রথমার্ধের মাঝামাঝি চিলির আরানগুইজকে খারাপ ভাবে ট্যাকল করে লাল কার্ড দেখেন পেরুর কার্লোস জামব্রানো। রেফারির এই সিদ্ধান্তে পেরুর ফুটবলাররা তেড়ে যান তাঁর দিকে। দশ জন পেরুর রক্ষণকে আরও বেশি নাজেহাল করতে থাকে‌ন ভিদাল-ভালদিভিয়ারা। অবশেষে গোলটাও আসে। সাঞ্চেজের কার্ল করা শট বারপোস্টে লাগলেও রিবাউন্ডে গোল করে চিলিকে ১-০ এগিয়ে দেন এডুয়ার্ডো ভারগাস।

তবে বিরতির পরে সমতা ফেরানোর সু্যোগ তৈরি করে পেরু। কি‌ন্তু চিলি হাই প্রেস করায় বল বেশি দখলে রাখতে পারে‌‌নি পেরু। যদিও ফারফান একটা ভাল সু্যোগ পেয়েও নষ্ট করেন। কিন্তু লড়াকু মানসিকতা দেখিয়ে গোলটা ঠিক পায় পেরু। এক পেরু ফুটবলারের ক্রস থেকে বল বাইৱে পাঠাতে গিয়ে নিজের জালে জড়িয়ে দিয়ে আত্মঘাতী গোল করেন চিলির গ্যারি মেডেল। সান্তিয়াগোর গ্যালারি তখন নিস্তব্ধ। চিলি সমর্থকরা বিশ্বাস করতে পারেননি পেরু দশ জন নিয়েও ম্যাচে প্রত্যাবর্তন করবে। যদিও খুব দ্রুতই সেই ছবি পাল্টায়। প্রায় ৩০ গজ থেকে দুর্দান্ত লং রেঞ্জ শট নিয়ে ২-১ করেন সেই ভারগাসই। যা ছিল দেশের জার্সিতে তাঁর ২২তম গোল। যে গোলের পরে সান্তিয়াগোর গ্যালারি আবার যে‌‌ন জেগে ওঠে। চিলি সমর্থকরা আবার বলতে থাকেন- ‘‘কোপা আমাদের ঘরে আসছে।’’ গত মরসুমে ইং‌‌ল্যান্ডের ক্লাব কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের হয়ে খুব ভাল খেলতে না পারলেও দেশের জার্সিতে এ যে‌‌‌ন এক অন্য ভারগাস। বাকি ফুটবলারদের সঙ্গে কম্বিনেশন তৈরি করে গোটা ম্যাচেই ক্রমাগত উপর-নীচ করেন। আবার গোলের আশে পাশে থেকে বিপদে ফেলেন পেরু রক্ষণকে।

গোটা টুর্নামেন্টেই মনোরঞ্জক ফুটবল উপহার দিয়েছে চিলি। কোপায় অনেক দলের পাশে ‘বোরিং’ তকমা বসলেও, চিলি কিন্তু আক্রমণাত্মক ফুটবলই খেলেছে। গোলও করেছে।

১৯৪১-এর পরে টানা দশ ম্যাচে গোল করার রেকর্ড ছুয়েছে এই দল। প্রথম বার কোপা জেতার রাস্তায় আর মাত্র একটা বাঁধা। হয় আর্জেন্তিনা নয় প্যারাগুয়ে। তবে আজকের মতো এত গোলের সু্যোগ নষ্ট করলে হয়তো সেই বাঁধা টপকে কোপার ট্রফি ছোয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে চিলির জন্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE