চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টি শেষ হয়েছিল যে বিতর্ক দিয়ে, আইপিএল আট শুরুর মুখে ফিরে এল সেই বিতর্ক।
সুনীল নারিন বিতর্ক।
সোমবার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড জানিয়ে দিল, নারিনকে খেলতে হলে চেন্নাইয়ের বায়োমেকানিক্যাল ল্যাবে পরীক্ষা দিয়ে ছাড়পত্র আনতে হবে। এর পরই প্রশ্ন উঠে যায়, নারিন কি সময় পাবেন ৮ এপ্রিল প্রথম ম্যাচের আগে পরীক্ষা দিয়ে ছাড়পত্র আনতে? না পারলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে হয়তো তাঁকে বাইরে বসতে হবে।
আইপিএলের নিয়ম অনুযায়ী বুধবারের মধ্যেই সব ফ্র্যাঞ্চাইজিকে তাদের চূড়ান্ত দলের তালিকা পেশ করতে হবে বোর্ডের কাছে। এ বার প্রশ্ন উঠছে, ছাড়পত্র না পেলে নারিনকে কি এই তালিকায় রাখা যাবে? নাকি শর্তসাপেক্ষে তাঁকে দলে রাখার অনুমতি দেবে বোর্ড? এই দু’দিনের মধ্যে নারিনকে চেন্নাইয়ের শ্রী রামচন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে তাঁর বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিতে হবে এবং পাশ করতে হবে। বোর্ডের পক্ষ থেকে পুরো বিষয়টা দেখার দায়িত্ব পেয়েছেন ক্রিকেট অপারেশনস ম্যানেজার এম শ্রীধর। যেহেতু আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের অস্তিত্ব এখন নেই, তাই আইপিএলের তরফে থাকছেন সিএবি-র যুগ্মসচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়।
সোমবার দিনভর কেকেআর শিবিরে অবশ্য চলল দফায় দফায় বৈঠক। যাতে রহস্য স্পিনারকে প্রথম ম্যাচ থেকেই খেলানো যায়। এ দিন সিএবি-তে বোর্ড প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়া পরিষ্কার বলে দিলেন, “বোর্ডের যা নিয়ম রয়েছে সুনীল নারিনের ক্ষেত্রে সেই নিয়মই মানা হবে। ওর জন্য আলাদা নিয়ম হবে না। ওকে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিয়ে ছাড়পত্র পেতে হবে।” নারিন নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে দেখে গত কয়েক দিন ধরে বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা চলছে নাইট কর্তাদের। কিন্তু সোমবার রাত পর্যন্ত কোনও সমাধান বেরোয়নি বলে জানা গেল।
এ দিন দুপুর থেকে আবার ছড়িয়ে যায়, নারিনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ কেকেআর নাকি এ বারের আইপিএল থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ভাবছে। বিকেলে অবশ্য কেকেআর সিইও বেঙ্কি মাইসোর ফোনে বলে দিলেন, “আইপিএলে না খেলার কথা এখন ভাবছি না। নিজেদের মধ্যে ব্যাপারটা মিটিয়ে নিলেই হবে।” সন্ধ্যায় জগমোহন ডালমিয়া এই ব্যাপারে বোর্ডের কঠোর অবস্থানের কথা জানানোর পর এসএমএস-এ বেঙ্কি এবিপি-কে জানিয়ে দেন, “এই মুহূর্তে এই নিয়ে আমাদের কোনও মন্তব্য নেই।”
তবে প্রশ্ন উঠছে, আইসিসি নারিনের বোলিং অ্যাকশনকে সবুজ সঙ্কেত দিলেও বিসিসিআই কেন এখন তাঁর পরীক্ষা চাইছে?
সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের জন্য গত বছর সেপ্টেম্বরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টি ফাইনালের আগে যখন সাসপেন্ড হয়েছিলেন নারিন, তখন বলা হয়েছিল এই সাসপেনশন শুধু বিসিসিআই টুর্নামেন্টের জন্য। কারণ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ তাদের টুর্নামেন্ট। নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভারত সফর থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন নারিন। বিশ্বকাপ থেকেও নাম তুলে নেন। মাঝে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্থানীয় টুর্নামেন্টে অবশ্য খেলেছিলেন।
নারিন অ্যাকশন শুধরে ইংল্যান্ডের লাফবরোয় বায়োমেকানিক্যাল ল্যাবে পরীক্ষা দিয়ে আইসিসি-র ছাড়পত্র পেলেও তা ক্রিকেটের বিশ্ব নিয়ামক সংস্থার তত্ত্বাবধানে নেওয়া নয়। কারণ, তাঁর অ্যাকশনের বিরুদ্ধে রিপোর্ট হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। যা আইসিসি টুর্নামেন্ট নয়। ফলে আইসিসি নিজস্ব তত্ত্বাবধানে নারিনের কোনও পরীক্ষা নেয়নি। সে জন্যই বিসিসিআই তাদের নিয়ম অনুযায়ী, নতুন করে নারিনের অ্যাকশনের পরীক্ষা নিয়ে তার পর তাঁকে আইপিএলে খেলার ছাড়পত্র দেবে। যা ডালমিয়া এ দিন পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন।
কেকেআর শিবিরের খবর, নারিনকে প্রথম থেকেই খেলানো নিয়ে আশা এখনও ছাড়ছে না তারা। আর এ দিন ডালমিয়াও বলেন, “কাউকে বঞ্চিত করতে চাই না। কেকেআরের শীর্ষ কর্তার সঙ্গে আমার এই ব্যাপারে কথা হয়েছে। নিয়মটা ওদের বলে দিয়েছি। ওরা ওদের অসুবিধার কথা জানিয়েছে। দেখা যাক, নিয়ম মাফিক এগিয়ে ওদের জন্য কী করা যায়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy