একটা টিমের লড়াই নতুন করে ঘুরে দাঁড়িয়ে ট্রফির যুদ্ধে টিকে থাকার।
অন্য দল লড়াইয়ে নামবে অবনমনের আওতা থেকে মুক্তিকে পাখির চোখ করে!
লড়াইটা আবার দুই বাঙালি কোচেরও। বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য সঙ্গে টক্করে নামবেন জহর দাস!
আজ শনিবার, আইজলে এ রকম অনেক লড়াইয়ের মিলিত বিস্ফোরণের জমি তৈরি। তবে ইস্টবেঙ্গল না আইজল— শেষ পর্যন্ত বারুদে অগ্নিসংযোগটা কারা ঘটায় সেটা দেখার।
র্যান্টি-ডং-মেন্ডিরা পর পর দু’ম্যাচে জঘন্য হারের পর কোচ বিশ্বজিতের কাছে নতুন শপথ নিয়েছেন! শুক্রবার প্র্যাকটিসের পর র্যান্টি মার্টিন্সরা কোচকে গিয়ে বলেছেন, ‘‘আমরা যে ভাবে ম্যাচ হেরে নিজেদের জায়গায় কঠিন করেছি, সেটা নিজেরাই শুধরে দেব। কথা দিচ্ছি, আমরা ঘুরে দাঁড়াবই।’’
নিজের ফুটবলারদের উপর আস্থা রাখছেন বিশ্বজিৎও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওরা রীতিমতো লজ্জিত। নিজেরাই বুঝেছে কী সুযোগ নষ্ট করেছে। তাই আফসোসও করছে।’’
তবু আচমকাই যেন আত্মবিশ্বাসে খানিকটা ঘাটতি ইস্টবেঙ্গল শিবিরে। পরপর সালগাওকর আর শিবাজিয়ান্সের কাছে হারের ধাক্কায় কিছুটা বেসামাল হয়ে পড়েছে টিমটা। হতে পারে, চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে টিকে থাকতে বাদ বাকি সব ম্যাচ জেতার কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বলেই নিজেদের কিছুটা গুটিয়ে রেখেছেন বিশ্বজিতের ছেলেরা। আর সে জন্যই আইজল এফসি-র বিরুদ্ধে শনিবার খেলতে নামার আগে একটু বেশি সতর্ক মেহতাব-অর্ণবরা।
অথচ এই আইজলকেই বারাসতে ২-০ হারিয়েছিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। কিন্তু শেষ দু’ ম্যাচে পাঁচ গোল হজম করার পর সবই যেন এখন বদহজম হচ্ছে বিশ্বজিতের ছেলেদের। পাঁচ গোল খেয়ে মাত্র একটা ফেরত দিতে পেরেছেন র্যান্টিরা। মাঝমাঠ থেকে ডিফেন্স, ফরোয়ার্ড লাইন— সালগাওকর এবং শিবাজিয়ান্স ম্যাচে পুরো টিমটাই সম্পূর্ণ ব্যর্থ। অথচ এর আগে আট ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল গোল খেয়েছিল মাত্র চারটি।
গত দু’ম্যাচে ফ্লপ টিমকে তাতাতে বিশ্বজিতের টোটকা এখন কী? ‘‘ছেলেদের একটা কথাই বলেছি। আইজল ম্যাচে জিততে না পারলে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা একেবারেই ছেড়ে দিতে হবে। এ বার সবটা তোমাদের উপর নির্ভর করছে,’’ আইজল থেকে বলছিলেন লাল-হলুদ কোচ।
গত দু’দিন ধরে ডিফেন্ডারদের আলাদা করে বিশেষ অনুশীলন করিয়েছেন বিশ্বজিৎ। মাঝমাঠেও বেশ কিছু পরিবর্তনের ভাবনাচিন্তা রয়েছে তাঁর। ডংকে আবার বাদ পড়তে হয় কি না, সেটা নিয়ে জোর জল্পনা চলছে। সূত্রের খবর, প্রথম একাদশে ডংয়ের না থাকার সম্ভাবনা বেশি। কলকাতা লিগে মহানায়ক হয়ে ওঠা দক্ষিণ কোরিয়ার মিডিও আই লিগে এতটাই খারাপ খেলছেন যে, এই মুহূর্তে তিন বিদেশির উপর ভরসা রেখেই স্ট্র্যাটেজি সাজাতে হচ্ছে বিশ্বজিৎকে। ডিফেন্সের দুরাবস্থা মাথায় রেখে সম্ভবত স্টপারে বার্নার্ড মেন্ডিকে ব্যবহার করার কথা ভাবছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ।
এ দিকে, জহর দাস আইজলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পাহাড়ি টিমটা। যদিও এখনও তারা অবনমনের আওতায় আছে। তবু ঘরের মাঠে র্যান্টিদের আটকাতে আত্মবিশ্বাসী আইজল। টিমের কোচ এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বলে দিয়েছেন, ‘‘ওদের স্ট্রাইকারদের আমরা আটকাবই। তিন পয়েন্ট আমাদের পেতেই হবে।’’ আসলে ঘরের মাঠে নড়বড়ে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট তুলে নিয়ে লিগ তালিকায় কিছুটা ভাল জায়গায় উঠে আসতে চাইছেন আইজল কোচ। চাইছেন অবনমনের ভীতি থেকে টিমকে মুক্তি দিতে।
উল্টো দিকে লিগ পেতে হলে ইস্টবেঙ্গলের সামনে জেতা ছাড়া পথ নেই। মোহনবাগান এবং বেঙ্গালুরুর সঙ্গে তাদের পয়েন্টের পার্থক্য এখন পাঁচ। অ্যাশলে ওয়েস্টউডের ছেলেরা তাও লাল-হলুদের তুলনায় একটা ম্যাচ (১১) বেশি খেলেছেন। কিন্তু মোহনবাগান তো ইস্টবেঙ্গলে সমান দশ ম্যাচ খেলেছে। পয়েন্ট ২২। নয় দলের লিগে এই ব্যবধান কমানো কিন্তু সহজ নয়!
শনিবারে আই লিগ
ইস্টবেঙ্গল : আইজল এফসি (আইজল, ২-৩০)
সালগাওকর : শিলং লাজং (গোয়া, ৪-৩০)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy