Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অভিযানই শেষ, যুগ নয়

৮৭তম মিনিট এল এবং চলেও গেল। গত ম্যাচে এটাই তো হয়ে উঠেছিল মাহেন্দ্রক্ষণ। এই সময়টাতেই উঠেছিল বার্সা ঝড়। আর বুধবার কিনা সেই ৮৭তম মিনিটেই শেষ হয়ে গেল সব আশা। প্যারিস সঁ জরমঁ ম্যাচের মতো এ বার নেমারের ফ্রি-কিক নিশানায় ছিল না।

পতন: ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে য়ুভেন্তাস দেওয়ালে এ ভাবেই বার বার ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেলেন লিওনেল মেসি। দু’পর্বে একটিও গোল করতে না পেরে বিদায় নিল বার্সেলোনাও। ছবি: এপি।

পতন: ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে য়ুভেন্তাস দেওয়ালে এ ভাবেই বার বার ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেলেন লিওনেল মেসি। দু’পর্বে একটিও গোল করতে না পেরে বিদায় নিল বার্সেলোনাও। ছবি: এপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪১
Share: Save:

দুই পর্ব মিলিয়ে য়ুভেন্তাস জয়ী

বার্সোলোনা ০

য়ুভেন্তাস ০

৮৭তম মিনিট এল এবং চলেও গেল। গত ম্যাচে এটাই তো হয়ে উঠেছিল মাহেন্দ্রক্ষণ। এই সময়টাতেই উঠেছিল বার্সা ঝড়।

আর বুধবার কিনা সেই ৮৭তম মিনিটেই শেষ হয়ে গেল সব আশা। প্যারিস সঁ জরমঁ ম্যাচের মতো এ বার নেমারের ফ্রি-কিক নিশানায় ছিল না। গোলের রক্তের স্বাদ পাওয়া ক্যাম্প ন্যু গর্জন করে ওঠেনি। আরও একটি য়ুভেন্তাস হেড বিপজ্জনক হওয়ার আগেই নির্বিষ করে দিল নেমারের ফ্রি-কিককে। আরও এক বার ঘামে জবজবে ভেজা, মরিয়া সাদা-কালো জার্সির দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে অসাড় হয়ে পড়ে রইল বার্সেলোনা আক্রমণ!

বার্সেলোনা কোচ লুইস এনরিকে বলেছিলেন, আক্রমণ! আক্রমণ! আক্রমণ! ঝড় তুলবে এমএসএন। ঝড় তুলবে বার্সা। এনরিকে বলেছিলেন, ৮০ মিনিট হয়ে গেলেই স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যাবেন না। তিন গোলের ঘাটতি মিটিয়ে ফিরে আসার জন্য বার্সেলোনার এই ঐতিহাসিক দলের কাছে ১০ মিনিটই যে যথেষ্ট!

ক্যাম্প ন্যু ছেড়ে কেউ চলে যাননি। ইনজুরি টাইম পর্যন্ত উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করেছিলেন ভক্তরা। কিন্তুএ বার আর কোনও অলৌকিক অপেক্ষা করে ছিল না তাঁদের জন্য। উল্টে অবাস্তব এক স্কোরলাইনের কালো দাগ সারাজীবনের জন্য সেঁটে গেল মেসিদের নামের পাশে। লেখা থাকল, য়ুভেন্তাসের বিরুদ্ধে দু’লেগ মিলিয়ে একটি গোলও করতে পারেননি তাঁরা। য়ুভেন্তাস ম্যানেজার মাসিমিলিয়ানো আলেগ্রি পর্যন্ত বিজয়োৎসবের মধ্যেও যা দেখে বিস্মিত। বলে ফেলেছেন, ‘‘দু’লেগ মিলিয়ে বার্সেলোনা একটাও গোল করেনি, অবিশ্বাস্য!’’ এগজিট পোলে নিঃসন্দেহে এগিয়ে ছিল বার্সেলোনা। বিশ্ব বলেছিল, যদি কেউ পারে তো সেটা বার্সেলোনাই। লিওনেল মেসি, নেমার, লুইস সুয়ারেজ। লজ্জা, ঘৃণা, ভয় তিন থাকতে নয়। কে জানত এমন হার-না-মানা মনোভাব নিয়ে দু’লেগ মিলিয়ে ১৮০ মিনিট ধরে য়ুভেন্তাস গোলহীন করে দেবে বার্সেলোনার তারাদের! মাঝেমধ্যে মেসি, নেমার, সুয়ারেজ-রা বল নিয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু যত দ্রুত হয়েছে বার্সেলোনার নাড়ির স্পন্দন, তত অপ্রতিরোধ্য দেখিয়েছে বোনুচ্চি, কিয়েল্লিনিদের। রক অব জিব্রাল্টার হয়ে ম্যাজিক ফিরতে দেননি তাঁরা। বরং গোলের রাজারা গোলের মহামারী লেগে হারিয়ে গেলেন এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে। এই নিয়ে গত চার বছরে সেমিফাইনালের আগেই বার্সেলোনা বিদায় নিল তিন বার।

সান্ত্বনা: নেমারের কান্না থামানোর চেষ্টায় দানি আলভেজ। ছবি: গেটি ইমেজেস।

পুরনো সেই তর্ক আবার এসে পড়েছে যে, বার্সা যুগের কি শেষ? গত কয়েক বছর ধরেই যে কলরব চলছে। বুধবার রাতে নেমারের অঝোরে কান্না, বিপজ্জনক ভাবে মেসির ঘাড় বেঁকিয়ে দুমড়ে পড়া বা সুয়ারেজের অসহায় আস্ফালন সেই তর্ককে আরও গতি পাইয়ে দিল। তবু বাস্তব হচ্ছে, এমএসএন-ই এখনও বিশ্বের সেরা আক্রমণ বিভাগ এবং আগামী মরসুমের শুরুতেও তার তারতম্য হওয়ার সম্ভাবনা নেই। লুইস এনরিকের জায়গায় মেসি-রা নতুন কোচও পাবেন। যা ক্যাম্প ন্যু-তে নতুন, তরতাজা বাতাস আনবে।

‘‘আমাদের পর্বত আরোহণ করতে হচ্ছিল। আর ওরাও ইতালীয়। ওরা জানে কী ভাবে রক্ষণ সামলাতে হয়। ওরা নিজেদের স্টাইলের ফুটবল খেলতেই এখানে এসেছিল এবং দারুণ ভাবে সফল হয়েছে,’’ বললেন পিকে। বিদায়ী কোচ এনরিকে বলে গেলেন, ‘‘তুরিনে প্রথম লেগটা আমরা খুব খারাপ খেলেছিলাম। সেটাই হারিয়ে দিল।’’

আগামী রবিবার এল ক্লাসিকো। লা লিগা জিততে গেলে এই মহাযুদ্ধ জিততেই হবে বার্সাকে। বুধবার রাতে হারের শোক কাটিয়ে এ দিনই প্র্যাকটিসে নেমে পড়েছেন মেসি-রা। যা দেখে মনে হচ্ছে, উত্তর দেওয়ার জন্য ফুটছেন তাঁরা। বিশ্বের কাছে প্রমাণ করতে হবে যে, বার্সার একটা অভিযানই শেষ হয়েছে, যুগ নয়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football Barcelona Champions League Juventus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE