Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রিংয়ের বাইরে খলনায়ক মেওয়েদার

৪৮-০। বক্সিং ইতিহাসে নিঃসন্দেহ বিরল এক কৃতিত্ব। একই সঙ্গে জিতে নিলেন শতাব্দীর সেরা লড়াইও। কিন্তু তা সত্ত্বেও কোথায় যেন হেরে গেলেন ফ্লয়েড মেওয়েদার। যুক্তরাষ্ট্রর ঘরের ছেলে দেশের মাটিতেই গড়ছেন ইতিহাস। মেওয়েদারকে নিয়ে তো উৎসবটা মাত্রা ছাড়া হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হল কই? বরং উল্টো ছবিটাই দেখা গেল এমজিএম এরিনায়। ম্যানি প্যাকিয়াওকে হারিয়ে হাততালির বদলে মেওয়েদারের কপালে জুটল বিদ্রুপ।

বাউট শেষে। চ্যাম্পিয়ন হয়ে মেওয়েদার। সাংবাদিক সম্মেলনে ডান কাঁধের যন্ত্রণার কথা বলছেন প্যাকিয়াও। ছবি: এএফপি

বাউট শেষে। চ্যাম্পিয়ন হয়ে মেওয়েদার। সাংবাদিক সম্মেলনে ডান কাঁধের যন্ত্রণার কথা বলছেন প্যাকিয়াও। ছবি: এএফপি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৫ ০৪:২০
Share: Save:

৪৮-০। বক্সিং ইতিহাসে নিঃসন্দেহ বিরল এক কৃতিত্ব। একই সঙ্গে জিতে নিলেন শতাব্দীর সেরা লড়াইও। কিন্তু তা সত্ত্বেও কোথায় যেন হেরে গেলেন ফ্লয়েড মেওয়েদার। যুক্তরাষ্ট্রর ঘরের ছেলে দেশের মাটিতেই গড়ছেন ইতিহাস। মেওয়েদারকে নিয়ে তো উৎসবটা মাত্রা ছাড়া হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হল কই? বরং উল্টো ছবিটাই দেখা গেল এমজিএম এরিনায়। ম্যানি প্যাকিয়াওকে হারিয়ে হাততালির বদলে মেওয়েদারের কপালে জুটল বিদ্রুপ। বাহবার বদলে শুনতে হল গালিগালাজ। রিংয়ের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেও রিংয়ের বাইরে শুধুই তোপ। এমজিএম এরিনায় তখন সবে শেষ হয়েছে ম্যাচ। চ্যাম্পিয়নের হাত তুলে ধরলেন রেফারি। জানিয়ে দিলেন মেওয়েদারই অপরাজিত থাকছেন। সঙ্গে সঙ্গে এমজিএম এরিনার বড় একটা অংশ প্রতিবাদে সরব। কেউ চিত্কার করছেন, ‘‘খারাপ লোকটা চ্যাম্পিয়ন হল।’’ আবার অনেকের উত্তেজিত প্রতিক্রিয়া, ‘‘প্যাকিয়াওর জেতা উচিত ছিল।’’

ঝড় উঠেছে সোশ্যাল সাইটেও। যার শিকার সেই মেওয়েদারই। ‘‘মেওয়েদার কাপুরুষ’’ বলে টুইটারে একটা হ্যাশট্যাগও চালু হয়ে গিয়েছে। রিংয়ের ভিতরে তাঁর ডিফেন্সিভ স্টাইল নিয়ে যেমন বিতর্ক শুরু হয়েছে, তেমনই দীর্ঘদিন ধরে রিংয়ের বাইরের জীবন নিয়েও কম বিতর্কে জড়াননি মেওয়েদার। এক দিকে যখন বহু বার মহিলা নির্যাতনের মামলায় ফেঁসে গিয়েছেন এই মার্কিন বক্সার, প্যাকিয়াও তখন নিজের দেশে বহু স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল বানাতে সাহায্য করেছেন। মেওয়েদারের অন্ধকার জীবনের কাহিনি আরও আছে। নিজের সন্তানদের মা-কে মেরে মুখ ভেঙে দিয়েছিলেন তিনি। যে ঘটনার কথা এ দিন বার বার উঠে এসেছে সোশ্যাল সাইটের প্রতিক্রিয়ায়।

শতাব্দীর সেরা লড়াইয়ে সেলিব্রিটি দর্শকেরা। বাঁ দিক থেকে স্টেফি-আগাসি, বিওন্সে, মাইকেল জর্ডন ও টাইসন।

দুই বক্সারের এই জীবনটাও তাঁদের খলনায়ক এবং নায়ক হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ঘরের ছেলেকে ঘরেই শুনতে হয়েছে কটাক্ষ। আর হেরে যাওয়ার পরেও ফিলিপিন্সে কিন্তু নায়ক সেই প্যাকম্যান। এমনকী সে দেশের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র বলছেন, ‘‘প্যাকিয়াও হারলেও আমাদের মাথা নিচু হয়ে যায়নি। ওর কাছ থেকে এখনও জীবন যুদ্ধের প্রেরণা পাই।’’

প্যাকিয়াও আবার বাউট শেষে অভিযোগ করেছেন, ‘‘তিন সপ্তাহের আগে আমার ঘাড়ে একটা মাসল ছিড়ে যায়। ওটা আগের থেকে ভাল অবস্থায় থাকলেও ডান কাঁধটা পুরো সারেনি।’’ ম্যাচের আগে চুক্তি হয়েছিল, ডান কাঁধে চোটের জন্য প্যাকিয়াওকে ইঞ্জেকশন দিয়ে নামতে দেওয়া হবে। কিন্তু পরে তাঁর এজেন্ট জানান, প্যাকিয়াওকে ইঞ্জেকশন দিয়ে বাউট লড়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। যে খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ফিলিপিন্স জুড়ে দাবি উঠেছে, মেওয়েদারের বিরুদ্ধে আবার লড়তে দেওয়া হোক প্যাকম্যানকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE